ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ব্যাংকিং ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ার মুখেও গণভোট হবে ॥ গ্রীক নেতার সঙ্কল্প

মাথা নত করবেন না সিপরাস

প্রকাশিত: ০৭:২৭, ৩ জুলাই ২০১৫

মাথা নত করবেন না সিপরাস

গ্রীসের ব্যাংকিং ব্যবস্থা অচল হয়ে পড়ার হুমকির মুখেও আলেক্সিস সিপরাস মাথা নত করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। তিনি তার দেশের বেইলআউটের ভবিষ্যত সম্পর্কে গণভোট অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার সংকল্প ব্যক্ত করেছেন। জার্মানি এ পরিকল্পনাকে নির্বোধ সুলভ আচরণ বলে অভিহিত করেছে। খবর টেলিগ্রাফ অনলাইনের। সঙ্কটাপন্ন প্রধানমন্ত্রী সিপরাস তার দেশের বেইলআউট নিয়ে ঋণদাতাদের শর্ত মানা হবে কিনা, সেই প্রশ্নে গণভোট অনুষ্ঠান করা থেকে পিছু হটতে অস্বীকার করেছেন। তিনি এ পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে গেলে অনিবার্য আর্থিক সর্বনাশ ঘটা এবং ব্যাংকিং ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ার হুমকি থাকা সত্ত্বেও তিনি তার অবস্থানে অনড় থাকেন। গত ছয় দিনের মধ্যে জাতীয় টেলিভিশনে দেয়া তার তৃতীয় ভাষণে সিপরাস কৃচ্ছ্রনীতির শর্তাদি সম্পর্কে গ্রীক জনগণকে তাদের মতামত জানানোর সুযোগ দেয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। তাদের একক মুদ্রা ইউরোর ১৪ বছরের সদস্যপদ বজায় রাখতে হলে তাদের অবশ্যই এসব শর্ত মেনে নিতে হবে। সিপরাস ‘না’ ভোট সমর্থন করছেন। এ উদ্যোগ ইউরোপ জুড়ে সমালোচিত হচ্ছে। জার্মান চ্যান্সেলর এ্যাঞ্জেলা মেরকেলের এক সিনিয়র মিত্র একে ‘নিবোধ সুলভ আচরণ’ বলে অভিহিত করেন। সিপরাস বুধবার ঐ ভাষণে বলেন, সোমবার আসুক, গ্রীক সরকার গণভোটের পর গ্রীক জনগণের জন্য আরও ভাল শর্ত নিয়ে আলোচনার টেবিলে থাকবে। গ্রীস বুধবারই পাঁচ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো বেইলআউট কর্মসূচীর অন্তর্ভুক্ত থাকেনি। এতে দেউলিয়া হয়ে পড়া দেশটি ১,৫০০ কোটি ইউরোর উদ্ধার তহবিলের সুবিধা পেতে পারেনি। সরকার নগদ অর্থ উত্তোলনের ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে এবং এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ব্যাংকগুলো বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়। গণভোটের পর ব্যাংকের শাখাগুলো ৭ জুলাই আবার খোলার কথা। কিন্তু ঋণদাতারা সিপরাস গণভোট প্রত্যাহার না করলে গ্রীসের অর্থ ব্যবস্থা অনিবার্যভাবেই ভেঙ্গে পড়বে বলে এখন হুঁশিয়ারি ব্যক্ত করছে। সেøাভাকিয়ার অর্থমন্ত্রী পিটার কাজিমির এথেন্স যে সতর্কবাণীর সম্মুখীন, তা স্পষ্ট করে দেন, আমার আশঙ্কা হয়, রবিবারের গণভোটের ফল ‘না’ হলে গ্রীসের ব্যাংকগুলো ইউরো মুদ্রা নিয়ে আবার নাও খুলতে পারে। গ্রীক সরকার ‘না’ পক্ষ সমর্থন করায় গ্রীসের ঋণদাতারা ক্ষুব্ধ হয়েছে। গ্রীকরা শেষ পর্যন্ত ইউরোজোনে থাকতে চান কিনা, সেই প্রশ্নে গণভোট অনুষ্ঠানের দায়ে ঋণদাতারা সিপরাসকে অভিযুক্ত করে। গ্রীক অর্থমন্ত্রী ইয়ানিস ভারুফাকিস বুধবার রাতে তার ব্লগে কেন কড়া বামপন্থী সরকার ‘না’ ভোটের জন্য আহ্বান জানিয়ে যাবে তা ব্যাখ্যা করেন। এতে তিনি বেইলআউটের আরও সুবিধাজনক শর্তে ঋণদাতাদের সম্মত হতে সরকারের দাবিকে আরও শক্তিশালী করতে চান। ভারুফাকিস বলেন, গ্রীস ইউরোতে থাকবে। গ্রীসের ব্যাংকগুলোর আমানত নিরাপদ। ঋণদাতারা ব্যাংক বন্ধ হয়ে যাওয়ার অজুহাতে ব্ল্যাকমেইল করার কৌশল বেছে নিয়েছে। সিপরাসের জেদী মনোভাব ইউরোপীয় নেতাদের আরও ক্ষুব্ধ করে তুলতে পারে। তারা তার সরকারের সঙ্গে আর কোন আলোচনায় যেতে পর পর তৃতীয় দিনের মতো অস্বীকার করে এসেছেন। ইউরোপীয় অর্থমন্ত্রীদের নিয়ে গঠিত ইউরোগ্রুপের প্রেসিডেন্ট জেরোয়েন ডিজসেলব্লোয়েম বলেন, আমরা এ পর্যায়ে আর আলোচনার কোন যুক্তি দেখি না। ইউরোপীয় অর্থমন্ত্রীরা রবিবার গ্রীসের গণভোট অনুষ্ঠিত না হওয়া দেশটির জন্য নতুন বেইলআউটের বিষয়ে আরও আলোচনার সম্ভাবনা নাকচ করে দেন। ঐ গণভোটে গত সপ্তাহে ঋণদাতাদের পেশ করা প্রস্তাবগুলো গ্রহণ বা প্রত্যাখ্যান করতে গ্রীকদের বলা হবে।
×