ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ইনজুরির কাছে হার মানলেন রায়ান হ্যারিস

প্রকাশিত: ০৪:১৯, ৫ জুলাই ২০১৫

ইনজুরির কাছে হার মানলেন রায়ান হ্যারিস

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আইসিসি টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ের চতুর্থ সেরা বোলার, অলরাউন্ড পজিশনে সাত নম্বরে, তবু বিদায় বলতে হলো রায়ান হ্যারিসকে। ৩৫ বছরের অসি তারকা আসলে হার মানলেন ইনজুরির কাছে। সফরে প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচে হাঁটুর ইনজুরিতে পড়ার পরই জানা গিয়েছিল প্রথম টেস্টে খেলতে পারছেন না। এবার এ্যাশেজ মাঠে গড়ানোর মাত্র চার দিন আগে ব্যাট-বল তুলে রাখার কঠিন সিদ্ধান্তটা জানিয়ে দিলেন হ্যারিস। সকল ধরনের ক্রিকেট থেকে অবসর নিলেন সাদা পোশাকে আধুনিক অস্ট্রেলিয়ার অনত্যম সফল পেস বোলিং অলরাউন্ডার। ‘কালই বিষয়টা পরিষ্কার হলাম। এই অবস্থায় আসলে খেলা চালিয়ে যাওয়া অসম্ভব। আমি তাই পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। ক্রিকেটকে বিদায় জানানোর এটাই সময়। খুব ভাগ্যবান যে, অস্ট্রেলিয়ার মতো একটি দলের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করতে পেরেছি। ব্যাগী-গ্রীন ক্যাপ পরার সুযোগ পেয়ে আমি সত্যি গর্বিত।’ মনের কষ্ট চেপে রেখে শনিবার সংবাদমাধ্যমকে বলেন হ্যারিস। পাশাপাশি এ্যাশেজে দলের জন্য শুভকামনাও জানিয়েছেন তিনি। বলেছেন, ‘ছোট্ট ক্যারিয়ারে দলের সঙ্গে প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগ করেছি। মাইকেল ক্লার্কের নেতৃত্বাধীন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন এই দলটি অস্ট্রেলিয়া ইতিহাসের অন্যতম সেরা দল। সবার কাছ থেকে অকুণ্ঠ সমর্থন পেয়েছি। ওরা এ্যাশেজ জয় করেই ঘরে ফিরবে বলে আমার বিশ্বাস।’ হ্যারিসের অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেটে আগমনটাই দেরি করে। ২০১০ সালে ৩০ বছর বয়সে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে টেস্ট অভিষেক। ২৭ টেস্টে নিয়েছেন ১১৩ উইকেট। ইনিংসে সেরা ৭/১১৭, ম্যাচে ৯/১০৬। ৫ উইকেট পাঁচবার। ব্যাট হাতে তিন হাফসেঞ্চুরির সাহায্যে করেছেন ৬০৩ রান। এ সময়ে দেশের হয়ে ২১ ওয়ানডে ও তিনটি টি২০ ম্যাচ খেলেছেন নাদুস-নুদুস চেহারার এই অলরাউন্ডার। নিউ সাউথওয়েলসে জন্ম নেয়া দারুণ ধৈর্যশীল এই ক্রিকেটার ঘরোয়া ক্রিকেটে ছিলেন কুইন্সল্যান্ড ও সাউথ অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে। পাশাপাশি ইংলিশ কাউন্টিতে সারে, সাসেক্স ও ইয়র্কশায়ারের হয়ে মাঠ মাতিয়েছেন। ইন্ডিয়ান আইপিএলে খেলছেন ডেকান চার্জার্স ও কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের হয়ে। ৬ জানুয়ারি সিডনিতে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচই হয়ে থাকল হ্যারিসের ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট। বিশ্বকাপের প্রাথমিক দলে থাকলেও হাঁটুর পুরনো ইনজুরি মাথাচাড়া দিয়ে ওঠায় শেষ পর্যন্ত ছিটকে যান। সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের সময়, কিন্তু সদ্যজাত সন্তান ও স্ত্রীর পাশে থাকায় ওই সফরে যেতে পারেননি। আশা ছিল মিচেল জনসন, মিচেল স্টার্কদের মতো তুখোড় সব পেসারের সঙ্গে এবার এ্যাশেজেও ঝড় তুলবেন। সেটি আর হলো না। বয়স পয়ত্রিশ পেরিয়ে, বাস্তবতাটা তাই বুঝতে পারলেন। হ্যারিসের এমন বিদায় সহজভাবে মেনে নিতে পারছেন না কোচ ড্যারেন লেহম্যানও, যিনি সাউথ অস্ট্রেলিয়ায় রাজ্য দলে তার সঙ্গে ক্রিকেট খেলেছেন। ‘এটা আসলেই দুর্ভাগ্যজনক। সেই রাজ্য দল থেকে দেখে এসেছি, লঙ্গার ভার্সনে ও একজন প্রকৃত ম্যাচ উইনার। গত দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের কথাই বা ভুলে যাই কী করে? প্রোটিয়াদের শেষ দুই উইকেট তুলে নিয়ে ওই আমাদের জয় এনে দিয়েছিল। ভেবেছিলাম ইনজুরি থেকে সুস্থ হয়ে আবার ফিরে আসবে। সেটা হলো না। তবে ওর সিদ্ধান্তের প্রতি আমাদের সম্মান রয়েছে। আশা করছি, স্ত্রী-সন্তান-পরিবার নিয়ে হ্যারিসের অবসর জীবনটা ভাল কাটবে।’- বলেন কোচ লেহম্যান।
×