স্টাফ রিপোর্টার, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ॥ চলতি মৌসুমে আমে রাসায়নিক ও ফরমালিন মেশানো রুখে দেয়া সম্ভব হয়েছে। এ কারণে ২৪ জুন দুই টন ল্যাংড়া ও ফজলি আম ইংল্যান্ডে রফতানি করা সম্ভব হয়েছে। দ্বিতীয় রফতানি ৪ টন শিবগঞ্জ থেকে যাবে ৩০ জুন। আম এবার রাসায়নিক মুক্ত হওয়ার কারণে বিশ্বখ্যাত কোম্পানি ওয়ালমার্ট চাঁপাইয়ের আম বিদেশে রফতানিতে উদ্যোগ নিয়ে কাজ শুরু করেছে।
জরুরী তলবের মাধ্যমে আম ব্যবসায়ী, বাগান মালিক, গণ্যমান্য ব্যক্তি ও প্রভাবশালীদের নিয়ে জেলা প্রশাসক বৈঠকে বসেন। সিদ্ধান্ত নেন যে কোন মূল্যে আমে বিষাক্ত রাসায়নিক দেয়া বন্ধ করতে হবে। আর এই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় জুনের আগে কেউ বাগান থেকে আম নামাতে পারবে না। তার আগে আম নামলেই তা হবে অপরিপক্ব ও রাসায়নিক মিশিয়ে জোর করে পাকানো। অপরিপক্ব কাঁচা আমে কার্বাইড মিশিয়ে সুন্দর দৃশ্যমান পাকা আম বানাবার সকল প্রস্তুতি বানচাল হয়ে যায়। এজন্য এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী, যাদের সঙ্গে আম ব্যবসায়ীদের যোগাযোগ রয়েছে তারা কোটি কোটি টাকার কার্বাইড মজুদ করেছিল। এবার প্রশাসনিক সতর্কতার কারণে এ কার্বাইড মে মাসে অপরিপক্ব কাঁচা আমে ব্যবহার করতে না পারায় তারা ফুঁসে উঠেছে। তারাই মাঠে নেমে এখন প্রচারণা চালাবার চেষ্টা করছে “সরকার আম ব্যবসায়ীদের সর্বনাশ করেছে। পুঁজি হারিয়ে পথে পথে কেঁদে বেড়াচ্ছে চাঁপাই ও রাজশাহীর আম চাষী ও ব্যবসায়ীরা। তারা এ বছর কাক্সিক্ষত দাম পাচ্ছে না আমের। প্রশাসন ১ জুন পর্যন্ত আম পাড়ার ওপর নিষেধাজ্ঞার কারণেই এবার তাদের কপাল পুড়েছে।” কিন্তু প্রকৃত পক্ষে এসব অভিযোগ ধোপে টিকবে না। এবার মৌসুমগত কারণেই বোল ও গুটি আসতে কিছুটা দেরি হয়। পাশাপাশি বামপার ফলন। বামপার ফলনের কারণেই এবার আমের বাজার চড়া হয়নি। সর্বত্রই আমের ছড়াছড়ি। একই দৃশ্য দেশের সর্বত্র। এ ছাড়া প্রচ- গরমের কারণে একই সঙ্গে একাধিক জাতের আম পেকে যায়। ফলে দিনাজপুর, রংপুর চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, সাতক্ষীরাসহ চট্টলার পাহাড়ী এলাকার উৎপাদিত আমে বাজার সয়লাব হয়ে যায়।
দেশের অন্যতম আম ব্যবসা কেন্দ্র ভোলাহাট আম ফাউন্ডেশন প্রতিদিন কোটি টাকার বাণিজ্য করছে। তাদের একাধিক কর্মকর্তা বলেছেন আমের দাম এবার কম হলেও এখন পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থানে আম পৌঁছাতে বড় ধরনের কোন সমস্যা না থাকায় তারা স্বস্তিতে আছেন (আম ব্যবসায়ীরা)। এবার শুধু চাঁপাইনবাবগঞ্জেই সব মিলিয়ে আম বাণিজ্য থেকে ৩৫ হাজার কোটি টাকা আয় হবে। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর সবিচালয় চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, দিনাজপুর, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, কুষ্টিয়া ও সাতক্ষীরার আম চাষী বাগান মালিক ও স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে প্রায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে খবরাখবর রাখছেন।