ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ত্রাণের চাল কালোবাজারে

প্রকাশিত: ০৫:০৮, ৬ জুলাই ২০১৫

ত্রাণের চাল কালোবাজারে

স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার ॥ কক্সবাজারের চকরিয়া বদরখালীতে ত্রাণের চাল কালোবাজারে বিক্রি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। খবর পেয়ে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন বিক্ষোভ করেছে। সরকারী ত্রাণের চাল আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে বদরখালী ইউপি চেয়ারম্যান নুরে হোসেন আরিফের বিরুদ্ধে। শুক্রবার ভোররাতে চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে পরিষদের তালা খুলে ২৭টি চালের বস্তা স্থানীয় দুইটি হোটেলে বিক্রি করে দেন বলে অভিযোগ রয়েছে। খবর পেয়ে শুক্রবার বিকেলে ত্রাণের চাল কালোবাজারে বিক্রি করে আত্মসাত করার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেন একই ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান খাইরুল বশর। তিনি এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান নুরে হোসেন আরিফকে জিজ্ঞাসা করলে তর্কাতর্কি এবং এক পর্যায়ে দু’জনের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটেছে। চেয়ারম্যান-মেম্বরের মধ্যে এ লঙ্কাকা- দেখে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে দুইজনকে পৃথক করে দেয়। জানা যায়, গত ২৪ জুন ভয়াবহ বন্যায় জেলার চকরিয়ার ১৮টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। ইতোমধ্যে সরকার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের কাছে কয়েক দফা ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেছে। এবারও উপজেলা পরিষদ থেকে প্রায় ১৯ হাজার কেজি চাল বরাদ্দ দেয়া হয় বদরখালী ইউনিয়নের বাসিন্দাদের জন্য। বৃহস্পতিবার রাতে চিরিঙ্গা খাদ্য গুদাম থেকে বরাদ্দকৃত চাল ট্রাক ভর্তি করে বদরখালী ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে আসা হয়। ওইদিন রাতে ইউপি চেয়ারম্যান নুরে হোসেন আরিফ ৫০ কেজি ওজনের ২৭টি বস্তা পার্শ্ববর্তী দু’টি হোটেলে বিক্রি করে দেন বলে জানা গেছে। এরমধ্যে মুছা কলিম উল্লাহর হোটেল নিউ মিতালীতে ১০ বস্তা ও জাহাঙ্গীর-ইসমাইল যৌথ মালিকাধীন হোটেল আল আমিনের চালের গুদামে ১৭ বস্তা চাল বিক্রি করে দেন। তবে সরকারী বস্তাগুলো তড়িঘড়ি করে বদলে ফেলা হয়েছে। স্থানীয় জনগণের অভিযোগ পেয়ে শুক্রবার সকালে চকরিয়া থানার এসআই মোজাম্মেল হক ঘটনাস্থলে গিয়ে দোকান দুটি তালাবদ্ধ করে দেন। এসআই মোজাম্মেল হককে মোটা অঙ্কের উৎকোচ ধরিয়ে দিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান পরবর্তীতে ওই দোকান দুইটির তালা খুলে দেয়ার ব্যবস্থা করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এসআই মোজাম্মেল হক ঘুষ গ্রহণের বিষয়টি মিথ্যা দাবি করে বলেন, ত্রাণের বস্তা বদলানোর কারণে চালগুলো জব্দ করা সম্ভব হয়নি। বদরখালী ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান খাইরুল বশর জানান, চকরিয়া উপজেলার বদরখালী ইউনিয়নের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় থেকে ১৯ হাজার কেজি চাল বরাদ্দ দেয়া হয়। এর কয়েকদিন আগে ৪ হাজার কেজি চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল বন্যার্তদের জন্য। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাদ্দকৃত চালগুলো বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মধ্যে মাথাপিছু ১০ কেজি করে বিতরণের জন্য ইউপি চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেন। কিন্তু চেয়ারম্যান জনপ্রতি ৫ কেজি করে চাল বিতরণ করেছেন। এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান নুরে হোসেন আরিফ চাল বিক্রি ও আত্মসাতের অভিযোগ সত্য নয় দাবি করে শনিবার জনকণ্ঠকে বলেন, ইউপি নির্বাচনের মেয়াদ ঘনিয়ে আসায় একটি পক্ষ আমার বিরুদ্ধে দুর্নাম রটাচ্ছে।
×