স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ এক সময় ফুটবল ছিল বাংলাদেশের এক নম্বর খেলা। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় নব্বই দশকের মাঝামাঝির পর থেকেই ফুটবলের চর্চার অভাব, এই খেলায় স্পন্সরের অভাব খেলাটাকে নিয়ে যায় ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। স্কুল ও জেলা পর্যায়ে ফুটবল খেলা বন্ধ হয়ে যায়। প্রতিভাবান খেলোয়াড়রা যায় হারিয়ে। অনেক নামকরা টুর্নামেন্ট বিলুপ্ত হয়ে যায়। এক সময় ফুটবল হয়ে পড়ে শুধুই ঢাকা কেন্দ্রিক। এমন অবস্থায় বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি নির্বাচিত হন স্বাধীন বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা ফুটবলার, জীবন্তু কিংবদন্তি কাজী মোঃ সালাউদ্দিন। তিনি হাল ধরেই সচেষ্ট হন ফুটবলকে সারা বছর মাঠে রাখার এবং ফুটবলের প্রতি পৃষ্ঠপোষকদের আগ্রহী করে তোলার। দুটি কাজেই সফলতার পরিচয় দিয়েছেন তিনি। এবার তার লক্ষ্য দেশব্যাপী ফুটবলকে সেই আগের মতোই ছড়িয়ে দেয়ার। স্কুল ফুটবল, জেলা ফুটবল লীগ হয়েছে। তবে এগুলো তো সবই স্থানীয় পর্যায়ের টুর্নামেন্ট। এবার ঢাকার বাইরে চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে একটি আন্তর্জাতিক ফুটবল টুর্নামেন্ট।
সোমবার দুপুরে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগে অংশ নেয়া চট্টগ্রাম আবাহনী লিমিটেডের সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যান ও সামিট পাওয়ার টেক লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর তরফদার মোঃ রুহুল আমিন বাফুফে সভাপতি কাজী মোঃ সালাহউদ্দিনের সঙ্গে এক সৌজন্য সাক্ষাত করেন। সাক্ষাতকালে চট্টগ্রাম আবাহনীর পক্ষে বাফুফের কাছে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা কামনা করেন রুহুল। সেখানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাফুফে নির্বাহী কমিটির সদস্য ও চট্টগ্রাম আবাহনী লিমিটেডের মহাসচিব সামশুল হক চৌধুরী এমপি, চট্টগ্রাম আবাহনীর ম্যানেজার শাকিল মাহমুদ চৌধুরী এবং বাফুফে সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ।
সাক্ষাতের এক পর্যায়ে রুহুল আমিন বাফুফে সভাপতির কাছে প্রস্তাব দেন তারা চট্টগ্রামে সাফ অঞ্চলের বিভিন্ন দেশের মোট আটটি ক্লাব দলকে নিয়ে একটি আন্তর্জাতিক ফুটবল টুর্নামেন্ট করতে চান। নাম হবে ‘শেখ কামাল গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট।’ টুর্নামেন্টের বাজেট হবে ১০-১৫ কোটি টাকা। চট্টগ্রামেরই কোন পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান টুর্নামেন্টটি স্পন্সর করবে। এতে অংশ নেবে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের চ্যাম্পিয়ন, রানার্সআপ এবং স্বাগতিক চট্টগ্রাম আবাহনী লিমিটেড; ভারতের ২টি, নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও ভুটানের একটি করে শীর্ষ পর্যায়ের ক্লাব দল। টুর্নামেন্টের সম্ভাব্য সময় ডিসেম্বর বা জানুয়ারি। এ প্রসঙ্গে বাফুফে জানিয়েছে, ওই সময় সাফ ফুটবল এবং বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ অনুষ্ঠিত হবে। কাজেই টুর্নামেন্ট দুটি সিডিউলের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই শেখ কামাল গোল্ডকাপের খেলা আয়োজন করা যেতে পারে। উল্লেখ্য, এক সময় চট্টগ্রামে জমজমাট ফুটবল টুর্নামেন্ট হতো। ১৯৮২ সালে এখানে ‘মেয়র কাপ’ ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হওয়ার পর আর কোন উল্লেখযোগ্য মানের টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হয়নি। রুহুল আমিন বলেন, ‘দেশের ফুটবলকে এগিয়ে নেয়া এবং আরও জনপ্রিয় করার উদ্দেশ্য নিয়েই আমরা শেখ কামাল গোল্ডকাপ ফুটবলের আয়োজন করতে চাই।’