ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

প্রস্তুত অদক্ষ চালক

ঈদযাত্রী সামলাতে লক্কড় ঝক্কড় লঞ্চে চাকচিক্য

প্রকাশিত: ০৭:২৩, ৯ জুলাই ২০১৫

ঈদযাত্রী সামলাতে লক্কড় ঝক্কড় লঞ্চে চাকচিক্য

নিজস্ব সংবাদদাতা, কেরানীগঞ্জ, ৮ জুলাই ॥ রোজার ঈদে দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীদের বাড়তি চাপ সামলাতে রং তুলি দিয়ে সাজানো হচ্ছে লক্কড় ঝক্কর লঞ্চগুলো। মেরামতে ব্যস্ত সময় পার করছে ডক ইয়ার্ড শ্রমিকরা। অধিকাংশ লঞ্চেই চলছে রং আর মেরামতের কাজ। ঈদে যাত্রীদের বাড়তি চাপ সামলাতে কিছু অসাধু লঞ্চ মালিকরা দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন রুটে নিয়মিত লঞ্চের সঙ্গে পরিত্যক্ত ও চলাচলের অযোগ্য লঞ্চগুলো সংস্কার করছে। প্রতি বছরের মতো এবারও প্রস্তুত রয়েছে তৃতীয় শ্রেণীর লঞ্চ, অদক্ষ চালক ও ফিটনেসবিহীন লঞ্চ। জানা গেছে, সদরঘাট থেকে প্রতিদিন দেশের দক্ষিনাঞ্চলের বিভিন্ন রুটে নিয়মিত সহস্র্রাধিক যাত্রী লঞ্চে চলাচল করে থাকে তার অধিকাংশ লঞ্চেরই ফিটনেস নেই। বিশেষ বিশেষ দিনগুলো ছাড়া বিআইডব্লিউটির নজরদারী না থাকায় দিনের পর দিন এ সকল লঞ্চ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় যাত্রী পরিবহন করছে। যে কারণে প্রায় সময়ই ঘটছে নৌ-দুর্ঘটনা। দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জের কালীগঞ্জ, চরকালীগঞ্জ, চর মীরেরবাগ এলাকার বিভিন্ন ডক ইয়ার্ডে ঘুরে দেখা গেছে কালাইয়াগামী জাহিদ-৩ লঞ্চে দেয়া হচ্ছে রঙ, মুলাদিগামী মানিক-৫ লঞ্চের প্রপেলারের কাজ করা হচ্ছে, এমভি শাহরুখ-১ লঞ্চের মেরামত করা হচ্ছে ও পটুয়াখালীগামী সৈকত-১৪ লঞ্চের রং দেয়াসহ অসংখ্য লঞ্চে চলছে মেরামত ও রং দেয়ার কাজ। পুরনো ও পরিত্যক্ত এ সব লঞ্চ সংস্কার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে শ্রমিকরা। একই মালিকের একাধিক লঞ্চ থাকায় নিয়মিত চলাচল করে এমন লঞ্চের সঙ্গে চলাচলের অযোগ্য ফিটনেসবিহীন ও তৃতীয় শ্রেণীর লঞ্চগুলোকেও রং করে তৈরি রাখা হচ্ছে ঈদে অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ সামলাতে। বিশেষ লঞ্চ সার্ভিসের নামে ব্যবহার করা হবে সংস্কার করা এসব অযোগ্য লঞ্চ। আর এসব লঞ্চেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষ ছুটবে গন্তব্যে। ঢাকা ডক ইয়ার্ডের শ্রমিক করিম মিয়া জানান, ঈদ এলেই পুরনো লঞ্চগুলোকে টুকটাক মেরামত করে রঙের ছাপ দিয়ে সাজানো হয়। ঈদের আগেই বেশির ভাগ লঞ্চ রং করে নামানো হবে যাত্রী বহনে। ঈদ এলেই বেড়ে যায় আমাদের ব্যস্ততা। এ সময়টাতে আমাদের দিন রাত কাজ করতে হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক লঞ্চ শ্রমিক ও ডক ইয়ার্ড শ্রমিকরা জানান, ঈদ এলে নৌপথে যাত্রীদের অতিরিক্ত চাপ থাকে। ঘরমুখো যাত্রীদের নিবিঘেœ তাদের গন্তব্য স্থলে পৌঁছে দিতে তারা তাদের লঞ্চগুলোকে সংস্কার করিয়ে নেয়। লঞ্চ মালিক ছিদ্দিকুর রহমান জানান, ফিটনেসবিহীন কোন লঞ্চ চলাচলের সুযোগ নেই। ঈদে যাত্রী চাপ বেশি থাকে এবং যাত্রীরা চাকচিক্য পছন্দ করে। সব যাত্রী চায় নতুন লঞ্চে উঠতে তাই যাত্রীদের কথা মাথায় রেখে লঞ্চ মালিকেরা লঞ্চগুলোতে নতুন রং করে সাজিয়ে তোলে। এ বিষয়ে ঢাকা নদীবন্দর সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালের নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের সহকারী পরিচালক শামসুল আরিফিন জানান, ঈদ উপলক্ষে প্রায় সব লঞ্চ মালিকই তাদের লঞ্চ নতুন করে রং করে সাজিয়ে তোলে। তবে এ সুযোগে কেউ যদি ফিটনেসবিহীন লঞ্চ দিয়ে যাত্রী পরিবহন করতে চায় তবে তাদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি আরও জানান, ঈদের সময় টার্মিনালে আমাদের একাধিক টিম এবিষয়ে নজরদারি করবে। এছাড়া কোন লঞ্চে সার্ভেয়ার না থাকলে তাদের যাত্রা বাতিল করা হবে।
×