ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

গোষ্ঠীগত বিরোধ জকিগঞ্জে মসজিদে তালা, আজান নামাজ বন্ধ

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ১১ জুলাই ২০১৫

গোষ্ঠীগত বিরোধ  জকিগঞ্জে মসজিদে তালা, আজান নামাজ বন্ধ

স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট অফিস ॥ গ্রামের দুই পক্ষের গোষ্ঠীগত বিরোধকে কেন্দ্র করে জকিগঞ্জ উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের হালঘাট জামে মসজিদে গত ৪ জুলাই থেকে আজান-নামাজ বন্ধ রয়েছে। এই নিয়ে এলাকার ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। পবিত্র রমজান মাসেও মসজিদে ইবাদত-বন্দেগীর সুযোগ থেকে বঞ্চিত এলাকাবাসী। জানা গেছে, ২০০৭ সালে হালঘাট গ্রামের হোসেন আহমদের বিদেশ যাত্রা উপলক্ষে ব্যবসায়ী খলিলুর রহমানের সঙ্গে লেনদেন হয়। এরই সূত্র ধরে গ্রামের বাসিন্দা আবদুল বাসিত ও আছাব আলীসহ কয়েকজনের সঙ্গে বিরোধ বাঁধে খলিলুর রহমানের। এ নিয়ে সালিশ বৈঠকও হয়। কিন্তু কোন কিনারা না হওয়ায় বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। ২০০৮ সালের ১২ই এপ্রিল মামলা ঠুকেন ব্যবসায়ী খলিলুর রহমান। মামলায় আবদুল বাসিত এবং আছাব আলীর দুই ছেলে ইসমাইল ও আলী হোসেনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদ- হয়। খলিলুর রহমানের ভাতিজা আবদুল মতিন হালঘাট জামে মসজিদের কোষাধ্যক্ষ নির্বচিত হলে দুই পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। এ থেকে বিরোধের সূত্রপাত। এক পর্যায়ে শুরু হয় মসজিদে ইমাম নিয়োগ-অব্যাহতির খেলা। ফলে চলতি বছরেই এ নিয়ে তিন দফা বন্ধ হলো আজান ও নামাজ। মাসিক তিন হাজার টাকা বেতন ইমামতি করতে অপারগতা প্রকাশ করে গত মার্চ মাসে মসজিদের ইমাম মাওলানা কামাল উদ্দিন বিদায় নিলে ১৫Ñ১৬ দিন মসজিদে কোন আজান হয়নি, নামাজও হয়নি। মাওলানা কামাল উদ্দিনের পর নিয়োগ পাওয়া ইমাম মাওলানা মাসুম আহমদকে ‘চারিত্রিক স্খলনে’র অভিযোগে অব্যাহতি দেয়া হয়। রমজান শুরুর তিন দিন আগে মাওলানা কামাল উদ্দিনকে আবার ফিরিয়ে আনা হয় মসজিদের ইমাম হিসেবে। তিনি ফিরে আসার আগে আরও ১৫Ñ১৬ দিন মসজিদে তালা ঝুলে ছিল। এমনকি পবিত্র শবেবরাতের রাতেও মসজিদ বন্ধ ছিল। নামাজ-আজান হয়নি। ৪ঠা জুলাই ফজরের নামাজ পড়ে হুজরাখানায় ঘুমিয়ে ছিলেন মসজিদের ইমাম মাওলানা কামাল উদ্দিন। সকাল ৮টার দিকে প্রতিদিনের মতো গ্রামের শিশুরা মসজিদে পড়তে এসে দেখে বাইরে থেকে তালা দেয়া। ভেতরে বন্দী ইমাম। পরে খবর পেয়ে জকিগঞ্জ থানা পুলিশ এসে তালা কেটে উদ্ধার করে মসজিদের ইমামকে। নিরাপত্তার স্বার্থে গাড়িতে উঠিয়ে তাকে থানায় নিয়ে যায় সর্বশেষ ইমাম কামাল উদ্দিনকে আটকে রেখে মসজিদে তালা ঝুলানোর পর পুলিশ দু’পক্ষকেই থানায় ডেকেছিল। আবদুল বাসিত ও আছাব আলীর গোষ্ঠীর লোকজন তাতে সাড়া দেননি। এমতাবস্থায় মসজিদ কমিটিকে লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয় থানা থেকে। কিন্তু কে মসজিদে তালা দিয়েছে তাৎক্ষণিকভাবে কোন প্রত্যক্ষ প্রমাণ না পাওয়ায় ৮ জুলাই পর্যন্ত সময় চায় মসজিদ কমিটি। এরই মাঝে ৬ জুলাই আছাব আলীর ভাই ইব্রাহিম আলী ইমাম সাহেবকে তালাবদ্ধ করার ঘটনায় থানায় একটি অভিযোগ দেন। এতে তিনি মসজিদের কোষাধ্যক্ষ আবদুল মতিন ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আবদুল মান্নানকে অভিযুক্ত করেন। জকিগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) শওকত হোসেন বলেন, হালঘাট মসজিদে ইমামকে আটকে রাখার ঘটনায় অভিযোগ এলেও এ পর্যন্ত কোন মামলা হয়নি।
×