ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস আজ

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ১১ জুলাই ২০১৫

বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস  আজ

নিখিল মানখিন ॥ পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি ব্যবহারকারীর ড্রপআউটের উচ্চহার জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিভিন্ন পদ্ধতিতে ড্রপআউটের হার এখনও ৪২.২ শতাংশ। পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি সম্পর্কে মানুষের এখন যথেষ্ট জ্ঞান রয়েছে। বর্তমানে প্রজননক্ষম সকল দম্পতি পরিবার পরিকল্পনার কোন না কোন পদ্ধতি সম্পর্কে অবগত রয়েছেন। কিন্তু অসচেতনতার অভাবে অনেক দম্পতির বেশি সংখ্যক সন্তান নেয়ার ঘটনাও ঘটছে। কিশোরী অবস্থায় সন্তান ধারণের জন্য দারিদ্র্য ও অশিক্ষাও এর পেছনে ভূমিকা রাখছে। তবে পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি ব্যবহারকারীর হার গত ৩৯ বছরে ৮ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এমন দাবি করেছে সরকার। ১৭৭৫ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর পদ্ধতি ব্যবহারকারী গড়ে মাত্র ১.৫ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। অপূর্ণ চাহিদা হ্রাস পেয়ে ১৪ থেকে ১২ তে এসেছে। এমন অবস্থার মধ্য দিয়ে আজ শনিবার পালিত হচ্ছে বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস। দিবসটি উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকারী ও বেসরকারী উদ্যোগে নানা কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে। এবার দিবসটির মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছেÑ ‘ নারী ও শিশু সবার আগে, বিপদে-দুর্যোগে প্রাধান্য পাবে। কেন্দ্রীয়ভাবে আজ শনিবার ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এর উদ্বোধনী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের পরিসংখ্যানে পদ্ধতি ব্যবহারকারীর হার বৃদ্ধির চিত্র লক্ষ্য করা গেছে। বাংলাদেশের জনসংখ্যা ১৬৫০ সালে ১ কোটি ছিল। তা ২শ’ বছর পর ১৯৫১ সালে বৃদ্ধি পেয়ে দ্বিগুণ অর্থাৎ ২ কোটি ৩ লাখ হয়। এই জনসংখ্যা ৪ কোটি ২০ লাখ হয় ৯০ বছরে (১৯৪১ সালে)। দেশের বর্তমান জনসংখ্যা ১৪ কোটি ২৩ লাখ ১৯ হাজার। জনসংখ্যা বৃদ্ধির বার্ষিক হার ১ দশমিক ৩৪ শতাংশ। প্রতি বর্গকিলোমিটারে বাস করে ৯৭৯ জন মানুষ। বর্তমান হারে জনসংখ্যা বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে আগামী ৫০ বছরে বাংলাদেশের জনসংখ্যা দ্বিগুণ হবে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারের দিকে তাকালে দেখা যায়, ১৯৫০ সাল থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ছিল উর্ধগামী। ২০০১ সাল থেকে এ পর্যন্ত জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমতে শুরু করলেও তা প্রত্যাশিত হারে নামেনি। বিশেষজ্ঞরা বলেন, পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রমে এমডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে বাল্যবিবাহ। এটি এখনও একটি বড় সামাজিক সমস্যা হিসেবে বিদ্যমান। ১৮ বছর বয়স হওয়ার পূর্বে মেয়েদের বিয়ে না দেয়ার বিদ্যমান আইন বেশি মাত্রায় লঙ্ঘন করা হয়ে থাকে। ১৮ বছর বয়স হওয়ার আগেই দেশে শতকরা ৬৬ ভাগ মেয়ের বিয়ে হয়। এর এক-তৃতীয়াংশ ১৯ বছর বয়স হওয়ার আগেই গর্ভবতী অথবা মা হয়ে যান। দেশে প্রতি হাজার শিশুর জন্ম দিতে গিয়ে ২ দশমিক ৯ জন মা মারা যান। তাদের মধ্যে কিশোরী বয়সে হওয়া মায়ের সংখ্যাই বেশি। পরিবার পরিকলল্পনা অধিদফতর জানায়, মা ও শিশু স্বাস্থ্য এবং কিশোর-কিশোরীদের প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম সফল করে তুলতে হবে সামাজিক আন্দোলন। আরও জোরালো করতে হবে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম।
×