ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ক্ষতিগ্রস্তরা কোটায় পেয়েছে ২০ কোটি শেয়ার

প্রকাশিত: ০৬:৩৯, ১২ জুলাই ২০১৫

ক্ষতিগ্রস্তরা কোটায় পেয়েছে ২০ কোটি শেয়ার

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে (আইপিওতে) ২০ শতাংশ কোটা সুবিধা প্রদানের পর থেকে এখন পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা মোট ২০ কোটি ৪৪ লাখ ৯৯ হাজার ২৪০টি শেয়ার বরাদ্দ পেয়েছেন। তবে এর মধ্যে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারী আইপিওর লটারিতে নাম না থাকায় কোন শেয়ারই পাননি। তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, প্রণোদনা প্যাকেজের বিশেষ স্কিম বাস্তবায়ন অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের ক্ষতিপূরণে আইপিওতে বিশেষ কোটা রাখার সময়সীমা গত ৩০ জুন পর্র্যন্ত বাড়ানো হয়। নির্দেশনা অনুযায়ী, ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা সর্বশেষ ২০ শতাংশ কোটা সুবিধা পেয়েছেন আমান ফিডের আইপিওতে। কোটা সুবিধা দেয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত পুঁজিবাজারে মোট ৪০ কোম্পানি ১০২ কোটি ২৪ লাখ ৯৬ হাজার ২০০ শেয়ার ছেড়েছে। যার ২০ শতাংশ হিসেবে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা ২০ কোটি ৪৪ লাখ ৯৯ হাজার ২৪০ শেয়ার পেয়েছেন। জানা গেছে, কোটা সুবিধা চালু করার পর প্রথম জেনারেশন নেক্সট পুঁজিবাজারে মোট ৩ কোটি শেয়ার ছেড়েছে। যার ২০ শতাংশের হিসেবে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা পেয়েছেন ৬০ লাখ শেয়ার। এছাড়া এনভয় টেক্সটাইলের মোট ৩ কোটি শেয়ারের মধ্যে ৬০ লাখ শেয়ার, সানলাইফ ইন্স্যুরেন্সের মোট ১ কোটি ২০ লাখ শেয়ারের মধ্যে ২৪ লাখ শেয়ার, সামিট পূর্বাঞ্চল পাওয়ারের ৩ কোটি শেয়ারের মধ্যে ৬০ লাখ শেয়ার, আরগন ডেনিমসে ৩ কোটি শেয়ারের মধ্যে ৬০ লাখ শেয়ার, প্রিমিয়ার সিমেন্টে মোট ১ কোটি ২০ লাখ শেয়ারের মধ্যে ২৪ লাখ শেয়ার, গোল্ডেন হার্ভেস্ট এগ্রো লিমিটেডের মোট ৩ কোটি শেয়ারের মধ্যে ৬০ লাখ শেয়ার, গ্লোবাল হেভি কেমিক্যালের মোট ১ কোটি ২০ লাখ শেয়ারের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্তরা পেয়েছেন ২৪ লাখ শেয়ার, অরিয়ন ফার্মার মোট ৪ কোটি শেয়ারের মধ্যে ৮০ লাখ শেয়ার, বেঙ্গল উইন্ডসর থার্মো প্লাস্টিকসের মোট ১ কোটি ৬০ লাখ শেয়ারের মধ্যে ৩২ লাখ শেয়ার, ফ্যামিলিটেক্সের মোট ৩ কোটি ৪০ লাখ শেয়ারের মধ্যে ৬৮ লাখ শেয়ার, সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালের ১ কোটি ৪০ লাখ শেয়ারের মধ্যে ২৮ লাখ শেয়ার, ফারইস্ট ফাইন্যান্স এ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের ৪ কোটি ৫০ লাখ শেয়ারের মধ্যে ৯০ লাখ শেয়ার, বাংলাদেশ বিল্ডিং সিস্টেমের ১ কোটি ৪০ লাখ শেয়ারের মধ্যে ২৮ লাখ শেয়ার, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলের ৩ কোটি শেয়ারের মধ্যে ৬০ লাখ শেয়ার। এছাড়া সম্প্রতি আইপিও প্রক্রিয়া শেষ হওয়া মোজাফফর হোসেন স্পিনিং মিলস থেকে ২ কোটি ৭৫ লাখ শেয়ারের মধ্যে ৫৫ লাখ শেয়ার এবং এএফসি এগ্রো বায়োটেকের ১ কোটি ২০ লাখ শেয়ারের মধ্যে ২৪ লাখ শেয়ার ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বরাদ্দ রয়েছে। তাছাড়া এমারেল্ড ওয়েল ইন্ডাস্ট্রিজের ২ কোটি শেয়ারের মধ্যে ৪০ লাখ শেয়ার ও মতিন স্পিনিং মিলসের ৩ কোটি ৪০ লাখ শেয়ারের মধ্যে ৬৮ লাখ শেয়ার, হা-ওয়েল টেক্সটাইল ২ কোটি শেয়ারের মধ্যে ৪০ লাখ শেয়ার, দ্য পেনিনসুলা চিটাগাং এর ৫ কোটি ৫০ লাখ শেয়ারের মধ্যে ১ কোটি ১০ লাখ শেয়ার, ফার কেমিক্যালের ১ কোটি ২০ লাখ শেয়ারের মধ্যে ২৪ লাখ শেয়ার, শাহজিবাজার পাওয়ার কোম্পানির ১ কোটি ২৬ লাখ ৮০ হাজার শেয়ারের মধ্যে ২৫ লাখ ৩৬ হাজার শেয়ার, খুলনা পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের ৪ কোটি শেয়ারের মধ্যে ৮০ লাখ শেয়ার, তুং হাই নিটিং এ্যান্ড ডায়িং কোম্পানির ৩ কোটি ৫০ লাখ শেয়ারের মধ্যে ৭০ লাখ শেয়ার, ফার ইস্ট নিটিং এ্যান্ড ডায়িং কোম্পানির ২ কোটি ৫০ লাখ শেয়ারের মধ্যে ৫০ লাখ শেয়ার, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজের ১ কোটি ৪০ লাখ শেয়ারের মধ্যে ২৮ লাখ শেয়ার, রতনপুর স্টিল রি-রোলিং মিলসের ২ কোটি ৫০ লাখ শেয়ারের মধ্যে সাইফ পাওয়ার টেকের ১ কোটি ২০ লাখ শেয়ারের মধ্যে ২৪ লাখ শেয়ার, ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ডের ৪ কোটি ৫০ লাখ শেয়ারের মধ্যে ৯০ লাখ শেয়ার, খান ব্রাদার্স পি পি ওভেন ব্যাগ লিমিটেডের ২ কোটি শেয়ারের মধ্যে ৪০ লাখ শেয়ার, হামিদ ফেব্রিকসের ৩ কোটি শেয়ারের মধ্যে ৬০ লাখ শেয়ার ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে। সর্বশেষ, চলতি বছর ন্যাশনাল ফিডের ১ কোটি ৮০ লাখ শেয়ারের মধ্যে ৩৬ লাখ, সিএ্যান্ডএ টেক্সটাইলের ৪ কোটি ৫০ লাখ শেয়ারের মধ্যে ৯০ লাখ শেয়ার, ইফাদ অটোজের ২ কোটি ১২ লাখ ৫০ হাজার শেয়ারের মধ্যে ৪২ লাখ ৫০ হাজার শেয়ার, শাশা ডেনিমের ৫ কোটি শেয়ারের মধ্যে ১ কোটি শেয়ার, জাহিন স্পিনিংয়ের ১ কোটি ২০ লাখ শেয়ারের মধ্যে ২৪ লাখ শেয়ার, বাংলাদেশ স্টিল রি-রোলিং মিলস লিমিটেডের ১ কোটি ৭৫ লাখ শেয়ারের মধ্যে ৩৫ লাখ শেয়ার, তসরিফা ইন্ডাস্ট্রিজের ২ কোটি ৪৫ লাখ ৬৬ হাজার ২০০ শেয়ারের মধ্যে ৪৯ লাখ ১৩ হাজার ২৪০ শেয়ার, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজের ২ কোটি শেয়ারের মধ্যে ৪০ লাখ শেয়ার, আমান ফিডের ২ কোটি শেয়ারের মধ্যে ৪০ লাখ শেয়ার ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের জন্য বরাদ্দ করা হয়। জানা গেছে, পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে বিএসইসি ২০১১ সালের ২৩ নবেম্বর প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করে। প্রণোদনা প্যাকেজে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে বিশেষ স্কিম দেয়ার জন্য ঐ বছরের ২৭ নবেম্বর ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ ফায়েকুজ্জামানের নেতৃত্বে ৬ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়। গঠিত কমিটি ২০১২ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি বিনিয়োগকারীদের ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করে বিভিন্ন সুপারিশসহ অর্থ মন্ত্রণালয়ে একটি প্রতিবেদন জমা দেয়। প্রতিবেদনে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের ২০ শতাংশ কোটা বরাদ্দের কথা বলা হয়। এরপর একই বছরের ৫ মার্চ অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে ২০ শতাংশ কোটায় আবেদন করার জন্য ১৮ মাস সময় বেঁধে দেয় (১ জুলাই ২০১২ থেকে ডিসেম্বর ২০১৩)। ৩০ এপ্রিল বিশেষ স্কিম কমিটি ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রণয়ন করে বিএসইসির কাছে জমা দেয়। এর মধ্যে সিকিউরিটিজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংকের ৭ লাখ ৯৬ হাজার ১০৭ জন বিনিয়োগকারী রয়েছেন। ডিএসইর ২০৪টি এবং সিএসইর ১০৩টি সদস্য অর্থাৎ সিকিউরিটিজ হাউজের চিহ্নিত বিনিয়োগকারীরা এ সুবিধা পাচ্ছেন। ২০১৩ সালের ২৬ জুন মার্জিন ঋণের ৫০ শতাংশ সুদ মওকুফ এবং আইপিওতে বিনিয়োগকারীদের ২০ শতাংশ কোটাসহ বিশেষ কমিটির সুপারিশ অনুমোদন করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
×