ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

লোকসভা ভবনে বোমা হামলার চক্রান্তের খবরে সতর্কতা

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ১৪ জুলাই ২০১৫

লোকসভা ভবনে বোমা হামলার চক্রান্তের খবরে সতর্কতা

নিজস্ব সংবাদদাতা, লালমনিরহাট, ১৩ জুলাই ॥ লোকসভা ভবনে ১৫ আগস্ট বোমা হামলার চক্রান্ত জনকণ্ঠে খবর প্রকাশে লালমনিরহাট জেলার প্রশাসন নড়েচড়ে বসেছে। মোগলহাট সীমান্তের বিপরীতে ভারতে ধরলা নদীর দ্বীপচর জারিধরলায় জঙ্গী সংগঠনের গোপন ঘাঁটি গেড়েছে। জঙ্গী অর্থায়নের যোগান দিতে জঙ্গীরা বছরে কয়েক শ’ কোটি টাকার গরু, অস্ত্র ও মাদক ব্যবসা পরিচালনা করছে। ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা এনআইএ দিল্লী হতে এসে কোচবিহারের দিনহাটা থানায় আটক দ্বৈত নাগরিক দুলাল মিয়া ও এমদাদকে জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে বলে কলকাতার সিনিয়র কয়েকজন সাংবাদিক জানিয়েছেন। মোগটহাট সীমান্তে জঙ্গী তৎপরতার ঘটনা বহুদিনের পুরনো। ভারত সরকার ১৯৯২ সালে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় থাকার সময় মোগলহাট দিনহাটা ইমিগ্রেশন রুটটি ব্যবহার করে জঙ্গী তৎপরতা চলছে বলে তথ্য পায়। সেই সময় ভারত সরকার দুই দেশের মধ্যে সড়ক ও নৌপথে যোগাযোগের ইমিগ্রেশন রুটটি অস্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেয়। এখনও ইমিগ্রেশন রুটটি বন্ধ রয়েছে। মোগলহাটের কর্ণপুর চওড়াটারী গ্রামের দুর্বৃত্ত সন্ত্রাসী দুলাল মিয়া ভারতে (১৯ পৃষ্ঠা ৭ কঃ দেখুন) লোকসভা ভবনে (২০-এর পৃষ্ঠার পর) বোমাসহ আটকের পর তার সম্পর্কে লালমনিরহাটের পুলিশ খোঁজখবর নিচ্ছে। সে মূলত পুলিশের খাতায় একজন সন্ত্রাসী ও চোরাকারবারি হিসেবে একাধিক মামলার দাগী আসামি। চওড়াটারী গ্রামের বাসিন্দা রজব আলী (৫৬) জানায়, দুলাল মিয়া (৩২) একজন সন্ত্রাসী। সে ভারতে অপরাধ করে বাংলাদেশে এসে কয়েক মাস অবস্থান করে। আবার বাংলাদেশে অপরাধ করে ভারতে নির্বিঘেœ চলে যায়। লালমনিরহাট জেলা এনএসআই গোয়েন্দা সংস্থার উপ-পরিচালক একরামূল হক জানান, মোগলহাট সীমান্তে বিজিবির দুর্বল নজরদারি, মাদক পাচার, চোরাচালানী হয়ে আসছে। বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে বহুবার জানানো হয়েছে। মোগলহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ হাবিবুর রহমান হাবিব জানায়, মোগলহাট ইউনিয়নের কর্ণপুর সীমান্ত মানবিক কারণে বিজিবি ও বিএসএফ দুর্বল নজরদারিতে রাখে। এই সীমান্তে ধরলা নদীর চর ও দ্বীপ হরে প্রায় ১০-১৫ হাজার মানুষের বসবাস। এছাড়াও নদীর ওপারে ভারত সীমান্ত ঘেঁষে ফলিমারীর চর নামে একটি গ্রাম রয়েছে। সেই গ্রামের মানুষ নিত্যপ্রয়োজনে বাংলাদেশে তার মূল ভূখ-ে আসে। ২০০৫ সালে আগস্ট মাসে বাংলাদেশের ৬৩ জেলায় একযোগে জেএমবি বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে তাদের অবস্থান জানিয়ে দেয়। এই বিস্ফোরণের ঘটনায় ৩ জন ভারতীয় মোগলহাট সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে এসেছিল। ভারতীয় পত্রপত্রিকায় খবর প্রকাশ হয়েছে। এই সময় জেএমবি ভারতে বিভিন্ন রাজ্যে শাখায় অফিস খুলে বসে। মূলত অফিসগুলো হতে বাংলাদেশে জেএমবি কর্মকা- পরিচালনায় ব্র্যাক অফিস হিসেবে খুলে বসেছিল। কিন্তু পরবর্তীতে তারা পুরলিয়ায় বিস্ফোরণ ঘটায়। সোমবার জেলা ও দায়রা জজ আদালত চত্বরে দুপুরে মাতৃদুগ্ধ পান কেন্দ্র উদ্বোধন করা হয়। এই সময় জেলা প্রশাসক মোঃ হাবিবুর রহমান ও পুলিশ সুপার মুজাহিদুল ইসলাম জনকণ্ঠে ভারতের লোকসভা ভবনে ১৫ আগস্ট বোমা হামলার চক্রান্ত সম্পর্কে লালমনিরহাট সীমান্তের বিষয়টি খোঁজ রাখা হচ্ছে বলে জানান। ভারতীয় পুলিশ ভারতের ধরলা নদীর চর ও দ্বীপ চরের জারিধরলা ও বাদুরকুটি গ্রামে প্রতিটি বাড়ি বাড়ি তল্লাশি করেছে। মাদক ব্যবসায়ী ও চোরাচালানীদের সম্পর্কে খোঁজ রাখছে। তারা অভিযান অব্যাহত রেখেছে বলে জানা গেছে। মোগলহাট সীমান্তে চোখে পড়ার মতো ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
×