ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সোনা মসজিদ ইমিগ্রেশনে চলছে বেপরোয়া চাঁদাবাজি

প্রকাশিত: ০৬:০৩, ১৪ জুলাই ২০১৫

সোনা মসজিদ ইমিগ্রেশনে চলছে  বেপরোয়া চাঁদাবাজি

স্টাফ রিপোর্টার, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ॥ সোনামসজিদ স্থলবন্দর ইমিগ্রেশনসহ তিনটি পয়েন্টে বেপরোয়া চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে মানুষ। বেপরোয়া চাঁদাবাজির কারণে বহু যাত্রী এপার-ওপার হতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। দীর্ঘদিন ধরে ইমিগ্রেশনে পাসপোর্ট এন্ট্রি ও পাসপোর্ট চেকিংয়ে অঘোষিত ফি নির্ধারণ করেছে পুলিশ। এখানে পাঁচ থেকে আট শ’ টাকা চাঁদা ছাড়া পুলিশ চোখ তুলেও দেখে না। আবার যে সব যাত্রীর ব্যাগ-ব্যাগেজ রয়েছে তাদের দ্বিতীয় ধাক্কা সামলাতে হয় কাস্টমস চেকিংয়ে। যাওয়ার সময় পাঁচ শ’ টাকা আর ফেরার পথে কোন চেকিং ছাড়াই কাস্টমসকে নগদ এক হাজার টাকা না দিলে হয়রানির কবলে পড়তে হয় যাত্রীদের। পাশাপাশি প্রতিদিন প্রায় পাঁচ শ’ ভারতীয় ট্রাক পণ্য নিয়ে বন্দরে প্রবেশ করে। পণ্যবোঝাই ট্রাক এন্ট্রি সেন্টারে আসামাত্র অঘোষিত নির্দিষ্ট পরিমাণ চাঁদা পরিশোধ করতে হয়। এই পয়েন্টে মাসে চাঁদা তোলা হয় ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চিকিৎসা ও ব্যবসাসহ বিভিন্ন কাজে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিদিন কম করে হলেও ১৫০ থেকে ২০০ জন যাত্রী সোনামসজিদ ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতে যাতায়াত করে। তারা প্রতিদিন টাকা দেয়ার পরও বড় ধরনের হয়রানির মধ্যে পড়ে কষ্ট পোহাচ্ছে, যেন দেখার কেউ নেই। বন্দরে কর্তব্যরত ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা একজন এসআই পদমর্যাদার ব্যক্তি। তিনি সরাসরি চাঁদা আদায়ের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, তারা কোন অর্থ ছাড়াই সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। এ সময়ে নাসির নামের এক যাত্রী অভিযোগ করেন, ভারতে যাওয়ার সময় সাত শ’ টাকা ও ফেরার দিন নানান ভয়ভীতি দেখিয়ে পাঁচ শ’ টাকা নিয়েছে ইমিগ্রেশন। একই অভিযোগ নিয়ে ব্যাগ-ব্যাগেজ চেক করা কাস্টমসের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির সঙ্গে কথা বললে তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, এখানে কোন ধরনের চাঁদাবাজি হয় না। যারা অবৈধ মালামাল নিয়ে আসে তাদের কাছ থেকে শুল্ক আদায় করা হয়। এ ছাড়া কোন যাত্রীকে হয়রানি করা হয় না। বিষয়টি কাস্টমসের জনৈক সহকারী কমিশনারের কাছে উত্থাপন করলে তিনি বলেন, চাঁদা আদায়ের বিষয়টি তিনি ইতোপূর্বে কোন দিন শুনেননি। যাত্রীদের কোন অভিযোগ কেউ আমলে নেন না বলেই হয়রানি বেড়েই চলেছে। এদিকে যেসব ভারতীয় ট্রাক বন্দরে প্রবেশ করে সেসব ট্রাকের জনৈক চালক খুরজিৎ সিং বলেন, ট্রাক এন্ট্রি সেন্টারে আসামাত্র দৌড়ে আসে চাঁদা নিতে। তারা ভারতীয় রুপী ছাড়া চাঁদা গ্রহণ করেন না। এখানকার একজন ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিটি বিভাগের উর্ধতন কর্মকর্তাদের নির্দেশেই এসব অবৈধ কর্মকা- হচ্ছে বন্দরে। এই বন্দরের প্রতিটি স্থানেই চাঁদাবাজির কারণে বন্দর শ্রমিকরা বলে থাকে এটি এখন চাঁদাবাজির বন্দরে রূপান্তরিত হয়েছে।
×