ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বিবিসির সঙ্গে সাক্ষাতকার

মিয়ানমারে নির্বাচনের ফল মেনে নেয়ার প্রতিশ্রুতি সেনাপ্রধানের

প্রকাশিত: ০৪:০২, ২১ জুলাই ২০১৫

মিয়ানমারে নির্বাচনের ফল মেনে নেয়ার প্রতিশ্রুতি সেনাপ্রধানের

মিয়ানমারের সেনাবাহিনী প্রধান নবেম্বরে অনুষ্ঠেয় যুগান্তকারী নির্বাচনের ফলাফল মেনে নেবেন বলে অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন এবং এ সঙ্গে জনগণ চাইলে প্রেসিডেন্ট হওয়ার বিষয়টিও বাতিল করে দেননি তিনি। খবর এএফপির। সেনাবাহিনী প্রধান মিন অং হাইং সোমবার বিবিসির এক সাক্ষাতকারে বলেন, যে কেউ নির্বাচনে জয়লাভ করুন, সুষ্ঠুভাবে নির্বাচিত হলে আমি ফলাফলের প্রতি শ্রদ্ধা জানাব। পাশ্চাত্যের কোন সংবাদ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এ বিরল সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, আমি মনে করি নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে এবং এটাই আমাদের ইচ্ছা এবং সত্যিকারভাবে এ ইচ্ছাই আমরা পোষণ করি। যেভাবেই হোক সে ধরনের নির্বাচন অনুষ্ঠানে সহযোগিতা করতে আমরা প্রতিশ্রুতিশীল। ৮ নবেম্বর অনুষ্ঠেয় এ নির্বাচনে প্রায় ৩ কোটি নাগরিক অংশ নেবে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, কয়েক দশকের মধ্যে এ নির্বাচনটি সবচেয়ে সুষ্ঠু ও অবাধভাবে অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা করছেন দেশের জনগণ। দীর্ঘ সময় ধরে বর্বর, বিচ্ছিন্ন ও বিভ্রান্ত সামরিক জান্তার শাসনাধীনে থেকে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে মিয়ানমারের মানুষ। জান্তা উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তাদের প্রচুর সুযোগ সুবিধা দিয়েছে, অর্থনীতি ধ্বংস করেছে এবং নির্মূল করে দিয়েছে বিরোধী দল। ২০১১য়ের সামরিক শাসনে সাবেক জেনারেলদের প্রধান্য দিয়ে একটি অর্ধসংস্কারবাদী বেসামরিক সরকার গঠন করা হয়। এ সরকার পাশ্চাত্যের অধিকাংশ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে নেতৃত্বের ভূমিকা রেখেছে এবং প্রতিশ্রুতি দিয়েছে একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানে। দীর্ঘ ২৫ বছর পর প্রথমবারের মধ্যে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে নবেম্বরে। এ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে আউং সান সুচির দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্র্যাসি (এনএলডি)। নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হলে এনএলডি বিশাল বিজয় অর্জন করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রগতি নিরূপণে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় একটি সুযোগ পাবে এ নির্বাচনে। কিন্তু বিরোধী দল জয়লাভ করলেও গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক প্রভাব থেকে যাবে সেনাবাহিনীর কাছেই। কারণ, দেশের পার্লামেন্টে ২৫ শতাংশ আসন সেনাবাহিনীর জন্য সংরক্ষণ অব্যাহত থাকবে। পর্যবেক্ষকরা বলেছেন, সামরিক বাহিনী মিয়ানমারের শাসনতন্ত্রের রক্ষক হিসেবে তাদের ভূমিকার প্রতি গভীরভাবে সংশ্লিষ্ট। এক সাবেক সামরিক শাসনের অধীনে প্রণীত ও শাসনতন্ত্রে সকল ভিন্নমতকে অস্বীকার করা হয়েছে এবং সুচিকে প্রায় ১৫ বছর গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছে। সেনাবাহিনীর ভূমিকা হ্রাস করতে শাসনতন্ত্র পরিবর্তনের জন্য অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে এনএলডি। সন্তান বিদেশী নাগরিক হওয়ার কারণে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সুচির ওপর বর্তমানে যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে তা বাতিলের জন্য অঙ্গীকার রয়েছে এনএলডির। জেনারেল তার সাক্ষাতকারে বলেন, শাসনতন্ত্রের কিছু অংশ পরিবর্তনে আন্তরিকতা রয়েছে তার। কিন্তু জাতিগত বিদ্রোহী গ্রুপগুলোর সঙ্গে চলমান লড়াইয়ের কারণে অন্যদেরও সঠিক অবস্থানে থাকতে হবে।
×