ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ভূমধ্যসাগরে সফল পরীক্ষা

মার্কিন সাবমেরিনে সামুদ্রিক ড্রোন

প্রকাশিত: ০৪:২৬, ২২ জুলাই ২০১৫

মার্কিন সাবমেরিনে সামুদ্রিক ড্রোন

মার্কিন নৌবাহিনীর এক সাবমেরিন এক সামরিক অভিযান কালে আন্ডারসি (সামুদ্রিক) ড্রোন উৎক্ষেপণ ও উদ্ধার করেছে। এটি ঐ নৌবাহিনীর সাবমেরিনের ইতিহাসে এরূপ প্রথম ঘটনা। খবর টেলিগ্রাফ ইয়াহুনিউজ ও ফিডেডট কমের। ঐ এ্যাটাক সাবমেরিন সোমবার কানেক্টিকাট অঙ্গরাজ্যের গ্রোটনের ঘাঁটিতে সোমবার ফিরে আসে। এর আগে সাবমেরিনের ড্রোন উৎক্ষেপণ সামর্থ্য পরীক্ষার সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে প্রায় দু’মাস এটিকে ভূমধ্যসাগরে মোতায়েন রাখা হয়। ঐ নৌযান ইউএসএস নর্থ ডেকোটার কমান্ডিং অফিসার ক্যাপ্টেন ডগলাস গর্ডন বলেন, ভূমধ্যসাগরীয় মিশন সাবমেরিন থেকে ছোড়া ড্রোনগুলোকে নৌবাহিনীর জন্য এক টেকসই হাতিয়ার বলে প্রমাণ করেছে। তিনি মিশন সম্পর্কে বিস্তারিত জানাতে অস্বীকার করেন। ড্রোনটিকে সাবমেরিনের শীর্ষভাগে সংযুক্ত এক আশ্রয়-কক্ষ থেকে ছোড়া হয়েছিল। এ কক্ষটিকে ডুবুরি ও বিশেষ বাহিনীকে সমুদ্রপৃষ্ঠের নিচে মোতায়েনের জন্যও কাজে লাগানো হতে পারে। নৌবাহিনী ড্রোনগুলোকে এর সাবমেরিন বহরের নাগাল ক্ষমতা স্বল্প ব্যয়ে বাড়ানোর এক উপায় হিসেবে দেখছে। ঠা-া লড়াই শেষ হওয়ার পর থেকে এ বহরের আকার ক্রমশ সঙ্কুচিত করা হচ্ছে। ঐ ড্রোনগুলোকে আনম্যান্ড আন্ডারসি ভেহিকেল ও (ইউইউভি) বলা হয়। নৌবাহিনী ১৯৭০-এর দশক থেকে প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্যে শত্রুর সাবমেরিনের অনুরূপ সাবমেরিন তৈরি করতে মনুষ্যবিহীন যানগুলোকে ব্যবহার করে এসেছে। মাইন খুঁজে বের করা এবং মহাসাগরের তলদেশের মানচিত্র তৈরি করতেও সেগুলোকে ব্যবহার করা হয়েছে। সেগুলোকে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের ও অন্যান্য উদ্দেশ্যে ও এমনকি সাবমেরিনবিধ্বংসী যুদ্ধকলায় কিভাবে আরও বেশি পরিমাণে কাজে লাগানো যেতে পারে সেনাবাহিনী সেই বিষয়ে গবেষণা করে এসেছে। ইউএসএস নর্থ ডেকোটার মোতায়েন করা ড্রোনটি ছিল এক রেমাস ৬০০। এটি ৫০০ পাউন্ড ভারি ও ১০ ফুট দীর্ঘ এক যান। নৌবাহিনী ইতোপূর্বে সাবমেরিন থেকে ইউইউভি উৎক্ষেপণ পরীক্ষা চালিয়েছিল। কিন্তু এবারই প্রথম সামরিক অভিযানকালে কোন ইউইউভিকে সাফল্যের সঙ্গে মোতায়েন করা হয়। ঐ মিশন ন্যাটোর সমৃদ্রপৃষ্ঠের নিচে আধিপত্য বিস্তারের সামগ্রিক পরিকল্পনার সঙ্গে খাপ খায়। সাবমেরিন ফোর্স আটলান্টিকের মুখপাত্র টমি ক্রোসবি এ মত ব্যক্ত করেন। সাবমেরিন বহরে কিভাবে ইউইউভিগুলোকে কাজে লাগানো যেতে পারে, তা নিয়ে নৌবাহিনী যে চিন্তাভাবনা করছে, ঐ মিশনই এর এক দৃষ্টান্ত। রেমাস ৬০০ ড্রোনের নির্মাতা হলো ম্যাসাচুসেটসের পোক্যাসেটভিত্তিক হাইড্রোইড ইনকর্পোরেটেড। ড্রোনটির সঙ্গে ভিডিও ক্যামেরা, জিপিএস যন্ত্রপাতি ও সোনার প্রযুক্তি সংযোজন করা যেতে পারে বলে হাইড্রোইড জানায়। ড্রোনটি আপনি-আপনিতেই চলছিল বা সাবমেরিনের কোন্ ক্রু এটি চালিয়েছিলেন গর্ডন তা জানাতে অস্বীকার করেন। হাইড্রোইডের কর্মকর্তা গ্র্যাহাম লেস্টার এক বিবৃতিতে বলেন, রেমাস ৬০০ একটি স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র। ঐ ইউইউভি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যাতে সেটি ১,৯৬৫ ফুটেরও সামান্য নিচে নামতে পারে। এটিকে পরিবর্তন করে ৪,৯০০ ফুটেরও সামান্য বেশি গভীর জলরাশিতে কাজ করার উপযোগী করা যেতে পারে। ড্রোনটি একটানা ২৪ ঘণ্টা কাজ করতে পারে। লেস্টার এ কথা জানান। লেস্টার রেমাস ৬০০ নির্মাণের ব্যয় উল্লেখ করেননি। এটি তৈরি করতে সাধারণত ৬ থেকে ১৮ মাস সময় লাগে।
×