ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আইএমএফের শেষ দুই কিস্তি ঋণ নিচ্ছে সরকার

প্রকাশিত: ০৬:০৭, ২২ জুলাই ২০১৫

আইএমএফের শেষ দুই কিস্তি ঋণ নিচ্ছে সরকার

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে বর্ধিত ঋণ সহায়তার শেষ দুই কিস্তির ২৮ কোটি ডলার নিচ্ছে সরকার। আগামী অক্টোবর মাসের মধ্যে এ অর্থ পাওয়া যাবে। সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ঋণ নেয়ার এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। বিদেশী অডিট কোম্পানি দিয়ে বিপিসির সমুদয় হিসাব অডিট করার ক্ষেত্রে আইনগত কোন বাধা না থাকায় সরকার তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছে। যদিও ঈদের আগে শর্ত মেনে আইএমএফের বর্ধিত ঋণ সহায়তার (ইসিএফ) শেষ দুই কিস্তির অর্থ নেয়া হবে না বলে সাংবাদিকদের সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী। ইসিএফ সহায়তা গ্রহণের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, বিদেশী অডিট কোম্পানি দিয়ে বিপিসির সমুদয় হিসাব অডিট করার ক্ষেত্রে আইনগত কোন বাধা নেই। এ কারণেই শেষ দুই কিস্তির টাকা নেয়া হবে। ইতোপূর্বে ইসিএফের শেষ দুই কিস্তির অর্থ ছাড়ের ক্ষেত্রে বিপিসির সমুদয় হিসাব কোন বিদেশী কোম্পানি দিয়ে অডিট করানোর শর্ত দিয়েছিল আইএমএফ। অর্থমন্ত্রী বলেন, আমি জানতাম সরকারী কোন সংস্থার বিদেশী কোন অডিট ফার্ম দিয়ে অডিট করানো যায় না। আমি মনে করেছিলাম যে, এটা করতে হলে আইন পরিবর্তন করতে হবে। এ পরিপ্রেক্ষিতে আমি ইসিএফ ঋণের শেষ দুই কিস্তির অর্থ না নেয়ার কথা বলেছিলাম। পরবর্তীতে আইন পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে, সরকারী সংস্থা অডিট বিদেশী কোন ফার্ম দিয়ে করানো যাবে না, এমন কোন শব্দ নেই। যে কোন অডিট ফার্ম দিয়ে অডিট করানো যাবে বলে উল্লেখ আছে। কাজেই বিপিসির হিসাব বিদেশী প্রতিষ্ঠান দিয়ে করার ক্ষেত্রে আর কোন বাধা নেই। জানা গেছে, আইএমএফের কাছ থেকে ইসিএফের আওতায় মোট ৯৮ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ চুক্তি হয়েছিল। চুক্তির পর এ ঋণের পাঁচ কিস্তিতে মোট ৭০ কোটি ডলার ইতোমধ্যে ছাড় হয়েছে। চুক্তির শর্তানুযায়ী অবশিষ্ট দুই কিস্তির অর্থ গত বছর নবেম্বরে এবং চলতি বছরের মার্চ মাসে পাওয়ার কথা ছিল। বিপিসি প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, বিপিসি যেভাবে চলছে সেভাবে কোন প্রতিষ্ঠান চলতে পারে না। ব্যাডলি ম্যানেজড। চোর-টোর বলা যায়। এর আগে যে চেয়ারম্যান ছিল তার সময় থেকেই এমনটা হয়েছে। মানুষ হিসেবে সৎ ছিলেন কিন্তু প্রশাসক হিসেবে তিনি কোন যোগ্যতা দেখাতে পারেননি। এই সুযোগে প্রতিষ্ঠানটি হরিলুটের জায়গা হয়েছিল। এ প্রতিষ্ঠানটির কোন ব্যালেন্স শীটও নাই। চুরির সুবিধার্থে কোন অডিটও করা হয় না। এর আগে এক চিঠির মাধ্যমে বিপিসি সম্পর্কে আইএমএফের পক্ষ থেকে বলা হয়, প্রতিবছর প্রতিষ্ঠানটি বড় অঙ্কের আর্থিক লেনদেন করে থাকে। কিন্তু এখানে কোন নিরীক্ষা করা হয় না। ফলে এই প্রতিষ্ঠানে অর্থের অপচয় বা দুর্নীতি হচ্ছে কিনা তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। এছাড়া বিপিসির আর্থিক স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য এ প্রতিষ্ঠানকে বিদেশী কোন ফার্ম দ্বারা অডিট করানোর প্রয়োজন রয়েছে। জানা গেছে, আইএমএফের সঙ্গে ঋণসংক্রান্ত তিন বছর মেয়াদী এ চুক্তিটি গত ২০১২ সালের এপ্রিল মাস থেকে শুরু হয়। পরে দুই মাস সময় বাড়ানোর কারণে ইসিএফ চুক্তির মেয়াদ চলতি মাসের ৩০ তারিখ শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। তাই ওই সময়ের আগেই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আইএমএফের বোর্ড সভায় নিতে হবে। এদিকে, আইএমএফের দক্ষিণ এশীয়বিষয়ক নির্বাহী পরিচালক রাকেশ মোহন চলতি মাসে অর্থসচিবের কাছে একটি চিঠি পাঠান। ওই চিঠিতে বলা হয়, শর্তসাপেক্ষে সরকার এ চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এরই মধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়ে ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে যাচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে।
×