ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

কর্মস্থলে ফেরা মানুষের সংখ্যা বাড়লেও রাজধানী এখনও ফাঁকা

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ২৩ জুলাই ২০১৫

কর্মস্থলে ফেরা মানুষের সংখ্যা বাড়লেও রাজধানী এখনও ফাঁকা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পরিবার-পরিজন নিয়ে কর্মস্থলে ফেরা মানুষের ভিড় বাড়ছে রাজধানীতে। তবে যানজটের নগরীতে ফেরেনি শহর। বেশিরভাগ সড়ক এখনও ফাঁকা। সচল হয়নি ট্রাফিক সিগন্যাল। আগের তুলনায় গাড়ির চাপ বেড়েছে। গণপরিবহন চলাচল এখনও কম। মার্কেট-বিপণিবিতান খুলতে শুরু করেছে। বসছে কাঁচাবাজার। অন্যদিনের তুলনায় রাজধানীর লঞ্চ, বাস টার্মিনাল ও নদীবন্দরে লোক সমাগম বেশি লক্ষ্য করা গেছে। ফেরি কম হওয়ায় শিমুলিয়া, কাওড়াকান্দি, পাটুরিয়াসহ অন্যান্য ঘাটগুলোতেও পরিবহনের কিছুটা বাড়তি চাপ আছে। ঢাকায় ফেরা যাত্রীদের কাছ থেকে টিকেট যুদ্ধ ছাড়া তেমন কোন ভোগান্তির অভিযোগ মেলেনি। বুধবার রাজধানীর বিভিন্ন টার্মিনাল ঘুরে যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সড়ক পথে আসতে তেমন কোন সমস্যা নেই। এখনও সড়ক মহাসড়কে যানজট শুরু হয়নি। বিশেষ করে পণ্যবাহী পরিবহন চলাচল কম থাকায় যানজট খুব একটা হচ্ছে না। তাছাড়া সিটি সার্ভিস ও লক্কড়ঝক্কড় পরিবহনগুলোও মহাসড়কে এখন নেই। তবে টিকেট পেতে ঝক্কি-ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে। দীর্ঘলাইনে দাঁড়িয়ে সংগ্রহ করতে হচ্ছে বাসের টিকেট। কোন কোন রুটে বাড়তি ভাড়ার অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা। টাঙ্গাইল থেকে নিরালা পরিবহনে আসা যাত্রী মোঃ মিনার মহাখালী বাস টার্মিনালে জানান, ১৭ জুলাই প্রায় ১০ ঘণ্টার যানজট ঠেলে বাড়ি গেলেও ফিরতে কোন সমস্যা নেই। কোথাও যানজট হয়নি। গাড়ির চাপও কম। চন্দ্রা এলাকাতেও কোন সমস্যা হয়নি। অপর যাত্রী মিনহাজ জানালেন, টিকেট পেতে দীর্ঘসময় লাইনে দাঁড়াতে হয়েছে। এছাড়া আর কোন ভোগান্তি হয়নি। ময়মনসিংহ থেকে আসা এনা পরিবহনের যাত্রী মাসুদ জানান, রাস্তার অবস্থা ভাল। দুই ঘণ্টায় ময়মনসিংহ থেকে ঢাকা এলাম। কোথাও যানজট বা দুর্ভোগ পোহাতে হয়নি। তবে সার্ভিস ভাল হওয়ায় ময়মনসিংহ কাউন্টারে যাত্রীর ভিড় অনেক বেশি। গাবতলী বাস টার্মিনালে উত্তরবঙ্গের যাত্রীরা আসছেন দলে দলে। আমিনবাজার ব্রিজ থেকে আসাদগেট পর্যন্ত রাস্তার দু’পাশে বিভিন্ন কাউন্টারের সামনে যাত্রীদের নামতে দেখা গেছে। শ্যামলী, এসআর ট্রাভেলস, ডিপজল পরিবহন, হানিফসহ বিভিন্ন কাউন্টারে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঘরে ফেরা মানুষের চাপ কমছে। এখন ঢাকা থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে খুব একটা যাত্রী মিলছে না। আসার পথে যাত্রী চাপ বাড়ছে। দেশের পূর্বাঞ্চল থেকে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে আসা মানুষের ভিড়ও আস্তে আস্তে বাড়তে শুরু করেছে। ঢাকা সড়ক পরিবহন সমিতির সভাপতি আবুল কালাম জনকণ্ঠকে বলেন, দিন যাচ্ছে; চাপ বাড়ছে ঢাকায় ফেরা মানুষের। সকাল থেকে প্রতিদিন বিকেলে বেশি যাত্রী হওয়ার কথা জানান তিনি। আগামী সপ্তাহ থেকে যাত্রী বাড়বে; এ জন্য বাসগুলোকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পরিবহন মালিক সমিতির এই নেতা বলেন, ঢাকায় ফেরা মানুষের রাস্তায় কোন সমস্যা হচ্ছে না। ঈদের পর পর বলেই রাস্তায় এখনও হাট-বাজার তেমন একটা বসেনি। ঢাকা নদীবন্দরেও দিন দিন ভিড় বাড়ছে মানুষের। দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে লঞ্চগুলো সময়মতো আসছে। প্রায় ৬০টি রুটে নিয়মিত লঞ্চ চলে ঢাকা থেকে। তবে নদীবন্দরে ঝুঁকি নিয়ে ছোট ছোট নৌযানগুলোকে পণ্য খালাস করতে দেখা গেছে। ঈদের আগে লঞ্চের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে এক ব্যবসায়ীকে হাজারও মানুষের চোখের সামনে দুর্ঘটনায় মারা যেতে দেখা গেছে। এ নিয়ে যেন কারও কোন মাথাব্যথা নেই। বুধবারও লঞ্চ টার্মিনালে বড়-বড় নৌযানের ফাঁকে ফাঁকে ছোট নৌকাগুলোকে ঝুঁকি নিয়ে চলতে দেখা যায়। কমলাপুর রেলস্টেশনে বেশিরভাগ ট্রেন আসছে সময়মতো। মোহনগঞ্জ থেকে আসা হাওড় এক্সপ্রেসের যাত্রী কাদির জানান, টিকেট পেতে মানুষের হিমশিম খেতে হচ্ছে। নেত্রকোনার জন্য মূলত ট্রেনটি দেয়া হলেও ময়মনসিংহের টিকেট বেশি। জেলা সদরের জন্য বরাদ্দ মাত্র ৬০টি টিকেট। রাজধানীর বিভিন্ন টার্মিনালে নামার পর বাসায় ফিরতে গণপরিহন সঙ্কটের মুখোমুখি হতে হচ্ছে সবাইকে। যাদের নিজস্ব গাড়ি আছে তাদের ক্ষেত্রে কোন কথা নেই। সিএনজি কিংবা ট্যাক্সি পেতে কষ্ট হয়। তার ওপর আবার চড়া দাম তো আছেই।
×