ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশকে ২০ কোটি ৮০ লাখ ইউরো দেবে জার্মানি ॥ রাষ্ট্রদূত

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ২৩ জুলাই ২০১৫

বাংলাদেশকে ২০ কোটি ৮০ লাখ ইউরো দেবে জার্মানি ॥ রাষ্ট্রদূত

জলবায়ু পরিবর্তন, জ্বালানি সক্ষমতা বৃদ্ধি ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশকে ২০৮ মিলিয়ন (২০ কোটি ৮০ লাখ) ইউরো দেবে জার্মানি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতকালে এ সহযোগিতা দেয়ার কথা জানান জার্মানির নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ড. থমাস প্রিঞ্জ। বুধবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর কাযার্লয়ে এ সাক্ষাত হয়। সাক্ষাত শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম এ বিষয়ে সাংবাদিকদের অবহিত করেন। খবর বাসসর। বাংলাদেশের উন্নয়নে অংশীদারিত্ব অব্যাহত রাখবে জানিয়ে জার্মানির রাষ্ট্রদূত বলেন, আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বাংলাদেশ বৈপ্লবিক উন্নয়ন করেছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ সঠিক পথে রয়েছে। তথ্য-প্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশের উন্নয়নের কথা উল্লেখ করে এ খাতে জার্মানির বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী বলেও জানান তিনি। জার্মানিতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের বিষয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, প্রতিবছর গড়ে দেড় হাজার শিক্ষার্থী জার্মানির ভিসা পায়। এ সংখ্যা আরও বাড়বে। বাংলাদেশে বায়োগ্যাসের সম্ভবনা রয়েছে মন্তব্য করে থমাস প্রিঞ্জ বলেন, জার্মানি তাদের মোট চাহিদার ২৬ শতাংশ নিরাপদ নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার করে। আমরা এটাকে ৫০ শতাংশে উন্নীত করব। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূত বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন অনেক বড় বক্তা। জার্মানির মানুষ তার সম্পর্কে অনেক উঁচু ধারণা পোষণ করে। সম্প্রতি বঙ্গবন্ধু জাদুঘর পরিদর্শনের কথা তুলে ধরে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘এখানে ইতিহাস কথা বলে।’ বিএনপি-জামায়াতের হরতাল-অবরোধের সহিংসতার সময় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের বার্ন ইউনিট পরিদর্শনকালে অগ্নিদগ্ধদের কষ্টের কথা স্মরণ করে রাষ্ট্রদূত জানান, বাংলাদেশে একটি স্বতন্ত্র বার্ন ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠায় জার্মান সরকার সহযোগিতা করবে। নবনিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূতকে বাংলাদেশে স্বাগত জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশের উন্নয়নে সহযোগিতার জন্য জার্মানির প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশ বিনিয়োগের আকর্ষণীয় জায়গা উল্লেখ করে জার্মানির কাছ থেকে আরও বিনিয়োগ প্রত্যাশা করেন শেখ হাসিনা। জাহাজ নির্মাণ শিল্পে বাংলাদেশের সঙ্গে জার্মানির সহযোগিতার একটি ক্ষেত্র তৈরির সুযোগ রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী আলাদা একটি বার্ন ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার বিষয়ে কথা বলেন। সরকার এটি করতে ইতোমধ্যে পরিকল্পনা নিয়েছে বলেও জানান তিনি। রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী জার্মানির চ্যান্সেলর এ্যাঞ্জেলা মেরকেলকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। নেদারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূতের বিদায়ী সাক্ষাত ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের তৈরি পোশাক পণ্যের দাম বাড়াতে বিদেশী ক্রেতাদের আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, এই অর্থ এ শিল্পের ৪০ লাখ শ্রমিকের অধিকতর কল্যাণে ব্যয় হবে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বুধবার সকালে তাঁর কার্যালয়ে নেদারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত গারবেন ডি জং বিদায়ী সাক্ষাত করতে গেলে শেখ হাসিনা এ আহ্বান জানান। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। তৈরি পোশাক শ্রমিকদের জন্য নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, বিগত ৬ বছরে তাঁর সরকার এ খাতে ২শ’ শতাংশেরও বেশি মজুরি বাড়িয়েছে। এছাড়া এ খাতের মহিলা শ্রমিকদের জন্য ডরমেটরি নির্মাণ করা হয়েছে। তিনি বাংলাদেশের গার্মেন্টস সেক্টর নিয়ে বিভিন্ন দেশের উদ্বেগের ক্ষেত্রে নেদারল্যান্ডের ভূমিকার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, নেদারল্যান্ড এ বিষয়ে বাংলাদেশকে কখনও চাপ দেয়নি। শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডের মধ্যে বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, নেদারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূতের (বিদায়ী) কার্যকালে এ সম্পর্ক নতুন মাত্রায় উন্নীত হয়েছে। রাষ্ট্রদূত তৈরি পোশাক খাতে বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নতির ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, এ খাত থেকে ২০২১ সালের মধ্যে ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব। গারবেন বাংলাদেশের বন্দরগুলোর উন্নয়নের পাশাপাশি কৃষি, উদ্যান, প্রাণীসম্পদ ও ভূমি পুনরুদ্ধারে সহযোগিতার বিষয়ে তার সরকারের আগ্রহের কথা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, অনেক খাতে বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ড পরস্পরকে সহযোগিতা করতে পারে। ডাচ রাষ্ট্রদূত ক্রিকেট বিশেষ করে একদিনের ক্রিকেটে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব সাফল্যের প্রশংসা করেন।
×