নিজস্ব সংবাদদাতা, গোপালগঞ্জ, ২২ জুলাই ॥ টুঙ্গিপাড়ায় বর্ণি ইউনিয়নের বর্তমান ও সাবেক চেয়ারম্যানের সমর্থকদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে স্বপ্না বিশ্বাস (৩০) নামে এক গৃহবধূ নিহত ও অন্তত ২৫ গ্রামবাসী আহত হয়েছে। সংঘর্ষ ঠেকাতে পুলিশ রাবার বুলেট নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জ করেছে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান খালিদ হোসেন জমাদ্দার ও সাবেক চেয়ারম্যান সাজেদুর রহমান মন্টুসহ উভয় গ্রুপের ২২ জনকে আটক করেছে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ বেশকিছু রাম-দা, ছ্যান-দা, সড়কি, চাপাতি ও কুড়ালসহ দেশীয় বিভিন্ন অস্ত্র উদ্ধার করেছে। মারাত্মক আহত তিনজনকে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গ্রেফতার এড়াতে অনেকেই বিভিন্ন ক্লিনিকে সিকিৎসা নিয়েছে বলে জানা গেছে। বুধবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত থেমে থেমে দু’পক্ষে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সকালে বর্ণি গ্রামের একটি রাস্তার ইট ওঠানোকে কেন্দ্র করে সাবেক চেয়ারম্যানের সমর্থক হোসাইন ও বর্তমান চেয়ারম্যানের সমর্থক লাসু জমাদ্দারের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে উভয় গ্রুপের লোকজন লাঠিসোটা নিয়ে ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ায় লিপ্ত হয়। থেমে থেমে সংঘর্ষ চলে সারাদিন। দুপুরের পর পুলিশ রাবার বুলেট নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। কিন্তু বিকেলে সাবেক চেয়ারম্যানের সমর্থক বর্ণি মধ্যপাড়ার এস্কেন্দার আলীর বাড়িতে আবারও হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় বাড়িতে পুরুষ লোকজন না থাকায় হামলাকারীরা তার স্ত্রী স্বপ্না বিশ্বাসকে বেধড়ক পিটিয়ে হত্যা করে চলে যায়। সারাদিনের এ সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত ২৫ জন আহত হয়। সন্ধ্যার আগে স্বপ্না হত্যার খবর পেয়ে গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন ঘটনাস্থল পরিদর্শণে যান। ঘটনার সত্যতা জানিয়ে টুঙ্গিপাড়া থানার এসআই একরাম হোসেন জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে গিয়ে রাবার বুলেট নিক্ষেপ করা হয়েছে। বর্ণি ইউনিয়নের বর্তমান ও সাবেক চেয়ারম্যান উভয় উভয়ের প্রতিদ্বন্দ্বী। এদের কারণে এলাকায় প্রায়ই ঝামেলার সৃষ্টি হয়। এ কারণে তারা দু’জনসহ ২২ জনকে আটক করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।