ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎ পুরস্কার গ্রহণ করলেন মুনতাসীর মামুন

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ২৬ জুলাই ২০১৫

বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎ পুরস্কার গ্রহণ করলেন মুনতাসীর মামুন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে শতবর্ষের সম্মানীয় বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎ পুরস্কার গ্রহণ করলেন অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন। ভারতের বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎ প্রবর্তিত ‘ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় স্মারক পুরস্কার ১৪২২’ সম্মাননায় ভূষিত হলেন ঐতিহাসিক, প্রাবন্ধিক ও লেখক ড. মুনতাসীর মামুন। শনিবার ঐতিহ্যবাহী এই প্রতিষ্ঠানটির ১২৩তম প্রতিষ্ঠাদিবসে বরেণ্য এই শিক্ষাবিদের হাতে পুরস্কারটি তুলে দেয়া হয়। পূর্ববঙ্গের সমাজ সংস্কৃতিবিষয়ক গবেষণা বিশেষ করে ১৪ খ-ের উনিশ শতকে বাংলাদেশের সংবাদ সাময়িকপত্র গ্রন্থের জন্য মুনতাসীর মামুন এই মনোনয়ন পান। অভিন্ন বাংলার তৎকালীন সামাজিক ইতিহাসের কয়েক হাজার পাতার এই আকর গ্রন্থগুলো গবেষক থেকে সাধারণ পাঠক সবার কাছেই আদৃত হয়েছে। সাহিত্যে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎ প্রতিবছর এই পুরস্কার প্রদান করে। সেই ধারাবাহিকতায় এই সম্মাননা অর্জন করলেন মুনতাসীর মামুন। তাঁর সঙ্গে কলকাতার বেশ কিছু সাহিত্যিককে এই সম্মাননা জানানো হয়। সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক সমরেশ মজুমদার, প্রতিষ্ঠানের সভাপতি বারিদবরণ ঘোষ প্রমুখ। অনুষ্ঠানে বক্তারা সাহিত্যে অসামান্য অবদানের জন্য মুনতাসীর মামুনের ভূয়সী প্রশংসা করার পাশাপাশি তাঁকে মানপত্র ও পদক দিয়ে সম্মানিত করেন। প্রবন্ধ থেকে শুরু করে গল্প, কিশোর সাহিত্য, গবেষণা, চিত্রসমালোচনা কিংবা অনুবাদ সাহিত্যের প্রায় সকল ক্ষেত্রেই অবাধ বিচরণ মুনতাসীর মামুনের। ড. মুনতাসীর মামুনের জন্ম ১৯৫১ সালের ২৪ মে ঢাকার ইসলামপুরে নানার বাড়িতে। তাঁর গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর জেলার কচুয়া উপজেলার গুলবাহার গ্রামে। বাবা মিসবাহউদ্দিন ও মা জাহানারা খান। পরিবারের তিন সন্তানের মধ্যে তিনি জ্যেষ্ঠ। মুনতাসীর মামুনের শৈশব-কৈশোর কেটেছে চাঁটগায়। চট্টগ্রাম পোর্ট ট্রাস্ট প্রাইমারী ও হাইস্কুলে এবং চট্টগ্রাম কলেজে তিনি পড়াশোনা করেন। ১৯৬৮ সালে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে। ১৯৭২ সালে তিনি স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করেন এবং একই বিভাগ থেকে ১৯৮৩ সালে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। স্বাধীনতার পর ইতিহাস বিভাগ থেকে তিনিই প্রথম পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৭৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। অধ্যাপক মামুন গত চার দশক ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে অধ্যাপনা করছেন। কৈশোর থেকে লেখালেখির সঙ্গে জড়িত হয়ে ১৯৬৩ সালে পাকিস্তানে বাংলা ভাষায় সেরা শিশু লেখক হিসেবে প্রেসিডেন্ট পুরস্কার লাভ করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেয়ার পর অনুবাদ, চিত্র সমালোচনা ও বিভিন্ন বিষয় নিয়ে রচনা করেন অনেক বই। তাঁর লেখালেখি ও গবেষণার বিষয় উনিশ, বিশ ও একুশ শতকের পূর্ববঙ্গ বা বাংলাদেশ ও ঢাকা শহর। তিনি এর আগে একুশে পদক (২০১০), বাংলা একাডেমি পুরস্কার, লেখক শিবির পুরস্কার, সিটি আনন্দ আলো পুরস্কার, নূরুল কাদের ফাউন্ডেশন পুরস্কার, হাকিম হাবিবুর রহমান ফাউন্ডেশন স্বর্ণপদক পুরস্কারসহ নানা সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন। তিনি দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম ১৯৭১ : গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি। হাসান ইমামের ৮০তম জন্মবার্ষিকীর আয়োজন কাল ॥ ১৯৫০ সালে বর্ধমানের একটি কলেজে পড়াকালীন প্রথম অভিনয় করেছিলেন মঞ্চনাটকে। কলেজের ওই বার্ষিক অনুষ্ঠানে একই দিনে মঞ্চস্থ দু’টি নাটকে অভিনয় করেন নায়ক আর নায়িকার চরিত্রে। এভাবেই সমাজের প্রতি দায়বদ্ধ শিল্পী সৈয়দ হাসান ইমামের অভিনয় জীবনের সূচনা হয়েছিল। কাল সোমবার বরেণ্য এই সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বের ৮০তম জন্মবার্ষিকী। এদিন সন্ধ্যায় সুফিয়া কামাল জাতীয় গণগ্রন্থাগারের শওকত ওসমান মিলনায়তনে বর্ণাঢ্য আয়োজনে উদ্্যাপিত হবে তাঁর জন্মদিন। গান ও কবিতায় সাজানো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সঙ্গে থাকবে হাসান ইমামকে নিবেদিত বিশিষ্টজনদের শুভেচ্ছা বাণী ও ফুলেল শুভেচ্ছা নিবেদন। এছাড়া হাসান ইমামের বর্ণাঢ্য জীবনভিত্তিক তথ্যচিত্র প্রদর্শনীর পাশাপাশি প্রকাশ করা হবে সম্মাননা গ্রন্থ। পাঠ করা হবে সৈয়দ শামসুল হক রচিত মানপত্র। জন্মবার্ষিকী উদযাপনের লক্ষ্যে সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কামাল লোহানীকে আহ্বায়ক করে গঠিত হয়েছে ‘শিল্পী সৈয়দ হাসান ইমাম-এর ৮০তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন পর্ষদ’। শনিবার মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে হাসান ইমামের ৮০তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন পর্ষদ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের এসব তথ্য জানানো হয়। আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের জন্মদিন উদযাপিত ॥ কেক কাটা, ফুলেল শুভেচ্ছা, গান ও কবিতা আবৃত্তির মধ্য দিয়ে অনাড়ম্বর পরিবেশে উদযাপিত হলো বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের ৭৭তম জন্মজয়ন্তী। শনিবার সন্ধ্যায় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের আয়োজনে কেন্দ্রের মিলনায়তনে জন্মদিন উদ্্যাপন করা হয়। আইজিসিসিতে গান-কবিতার যুগলবন্দী পরিবেশনা ॥ শনিবার শ্রাবণ সন্ধ্যায় গানের সুর ও কবিতার ছন্দে মুখরিত হলো গুলশানের ইন্দিরা গান্ধী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের (আইজিসিসি) মিলনায়তন। অনুষ্ঠিত হলো রবীন্দ্রনাথের গান ও কবিতার যুগলবন্দী পরিবেশনা। আইজিসিসির নিয়মিত সাংস্কৃতিক আয়োজনের অংশ হিসেবে এদিন পরিবেশিত হয় রবীন্দ্রসঙ্গীত এবং রবীন্দ্র রচনাবলী থেকে আবৃত্তি। রবীন্দ্রসঙ্গীত পরিবেশন করেন কলকাতার শিল্পী দোলা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর আবৃত্তি করেন আবৃত্তিশিল্পী বেলায়েত হোসেন। ‘বাদল-বাউল বাজায় রে একতারা’ গানের রেশ কাটতে না কাটতেই বেলায়েতের আবৃত্তি। দোলার কণ্ঠে ‘আজ ধানের ক্ষেতে রৌদ্রছায়ায় লুকোচুরির খেলা রে ভাই, লুকোচুরি খেলা।’ ঢাকার দর্শক-শ্রোতাদের মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখে। দুই দিনব্যাপী ভরতনাট্যম উৎসবের সমাপ্তি ॥ ধানম-ির ছায়ানট সংস্কৃতি ভবন মিলনায়তনে শুক্রবার থেকে শুরু দুই দিনব্যাপী ভরতনাট্যম উৎসবের শেষ দিন ছিল শনিবার। সমাপনী সন্ধ্যায় দর্শক মাতান পশ্চিমবঙ্গের চার কর্ণাটকি সঙ্গীতজ্ঞ। নৃত্যশিল্পীরা ভরতনাট্যমের শিল্পীত প্রকাশের মাধ্যমে বর্ণনা করলেন পৌরাণিক গল্প। সমাপনী সন্ধ্যায় গুরু অমিত চৌধুরীর সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করেন তাঁর আট শিক্ষার্থী জুয়েইরিযাহ মৌলি, রানী মৃধা, শাম্মী আখতার, আনিষ্ঠা খান, শুদ্ধা এস দাস, তাহসিন সাবা তুলশী, পারিসা ওমর ও আভিয়া খান। অনুষ্ঠানের শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য রাখেন কল্পতরু বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ শিল্পী লুবনা মারিয়াম। এরপর ভরতনাট্যমের ছন্দে মুগ্ধ করলেন নৃত্যগুরু অমিত চৌধুরী। দলবদ্ধ পরিবেশনা নিয়ে আসেন তার আট শিক্ষার্থী। এভাবেই পর্যায়ক্রমে শিল্পীরা পরিবেশন করেন তাদের ভরতনাট্যম। অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ছিল ভারতীয় চার শিল্পীর পরিবেশনা। সুরেলা শব্দধ্বনি ছড়িয়ে কণ্ঠসঙ্গীত পরিবেশন করেন সুকুমার জি কুট্টি। মৃদঙ্গ বাজিয়ে শোনান শঙ্কর নারায়ণ স্বামী। বেহালায় মিষ্টি সুর ছড়ান এ সত্য বিশাল এবং নাট্টুভঙ্গম পরিবেশন করেন রাজদ্বীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁরা পরিবেশন করে কর্নাটকি সঙ্গীত কাচেরি। এছাড়াও ছিল কল্পতরুর শিক্ষার্থীর নৃত্যগুরু অমিত চৌধুরী ও নৃত্যশিল্পী অর্থী আহমেদের পরিবেশনা পরিবেশনা।
×