মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা পূর্ব আফ্রিকায় সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে লড়াই জোরদার করতে যুক্তরাষ্ট্র্রের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন যে, তার প্রশাসন কেনিয়া ও সোমালিয়ায় সন্ত্রাস দমন তৎপরতার প্রতি সমর্থন জোরদার করবে। কেনিয়ার নিরাপত্তা বাহিনীকে ক্রমবর্ধমানভাবে প্রশিক্ষণ ও অর্থ সহায়তা দেয়া হবে। খবর ওয়াশিংটন পোস্ট ও ইয়াহু নিউজের।
প্রেসিডেন্ট ওবামা কেনিয়ার উদ্দেশে বলেছেন যে, যুক্তরাষ্ট্র সোমালিয়ার ইসলামপন্থী আল শাবাবের বিরুদ্ধে চলমান লড়াইয়ে আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে প্রস্তুত রয়েছে। তিনি নাইরোবিতে কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউহুরু কেনিয়াত্তার সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ভাষণ দিচ্ছিলেন। নিরাপত্তাই ওবামা ও কেনিয়াত্তার মধ্যে ইতোপূর্বে অনুষ্ঠিত আলোচনায় প্রাধান্য লাভ করে। কেনিয়া কয়েকবারই আল শাবাব জঙ্গীদের হামলার শিকারে পরিণত হয়।
ওবামা বলেন, আমরা সোমালিয়াতে তাদের বাস্তব নিয়ন্ত্রণ হ্রাস করতে সমর্থ হয়েছি। আমরা পূর্ব আফ্রিকার অঞ্চলে তৎপর ঐসব নেটওয়ার্ককে দুর্বল করে দিয়েছি। তিনি বলেন, আমরা সোমালিয়ার সরকারকে শক্তিশালী করে গেলেও সেই চাপ আমাদের বজায় রেখে যেতে হবে। ওবামা স্বীকার করেন যে, কয়েক বছর ধরে মার্কিন ড্রোন হামলা এবং সোমালিয়াভিত্তিক জাতিসংঘ সমর্থিত এক আঞ্চলিক বাহিনীর সন্ত্রাস দমন চেষ্টা সত্ত্বেও আল শাবাব সন্ত্রাসীরা উভয় দেশেই সহজ লক্ষ্যস্থলগুলোতে হামলা চালানোর সামর্থ্য বজায় রেখেছে। তবে তিনি বলেন, আল শাবাবের ভূখ- পরিকল্পিতভাবে সঙ্কুচিত করে দেয়া হয়েছে।
ওবামা ঐ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আমরা ঐসব সন্ত্রাসী সংগঠনকে উল্লেখযোগ্যভাবে দুর্বল করে দিতে পারি, কিন্তু এরপরও তারা ক্ষতি সাধন করতে পারে। তিনি এসব হুমকি মোকাবেলায় কেনিয়ার নিরাপত্তা বাহিনীকে আরও তহবিল ও সহায়তা যোগানো হবে বলে ঘোষণা করেন। কেনিয়াত্তার সঙ্গে ওবামার আলোচনায় বেসামরিক লোকজনের ওপর নিয়মিত হামলায় লিপ্ত ইসলামী চরমপন্থীদের মোকাবেলার সর্বোত্তম উপায় কি সেই প্রশ্নটিই প্রাধান্য পায়। কেনিয়াত্তা বলেন, আমরা আমাদের জীবনধারা ধ্বংস করে দিতে চায় এমন বিশ্ব সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে লড়াই করার পাশাপাশি গণতন্ত্রের উন্নতি সাধন করছি। তাদের দমন না করা হলে তারা আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা পাল্টে দেবে এবং সহিংসাশ্রয়ী চরমপন্থী তৎপরতা ও অত্যাচারী শাসন চালানোর সুযোগ তৈরি করবে।
কেনিয়াত্তা বলেন, তার দেশ সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইয়ে নবাগত এবং যুক্তরাষ্ট্রের মতো অংশীদারদের কাছ থেকে শিক্ষা নিচ্ছে। তিনি বলেন, এটি আমাদের জন্য অস্তিত্বের এক লড়াই। প্রেসিডেন্ট ওবামার ইথিওপিয়া সফরকালেও নিরাপত্তার বিষয়টি প্রাধান্য পাবে। দেশটি সোমালিয়ার অস্থিরতার নিজের ভূখ-ে ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে চেষ্টা চালিয়েছে এবং দক্ষিণ সুদান ও অন্যত্র শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠিয়েছে। ওবামা ঐ সফরের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়ার আগে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা সুসান ই রাইস সাংবাদিকদের বলেন যে, সন্ত্রাস দমনের দিকে অবশ্যই দৃষ্টি দেয়া হবে।
২০১৫ সালে কেনিয়া সন্ত্রাস দমনের জন্য সহায়তা হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ১০ কোটি ডলার লাভ করে। এটি আগের বছর বরাদ্দ করা অঙ্কের দ্বিগুণ।
এ সপ্তাহান্তের আলোচনার ফলস্বরূপ ম্যাসাচুসেটস ন্যাশনাল গার্ড ও কেনিয়া সরকার এক অংশীদারি চুক্তি সই করবে। প্রশাসনের এক উর্ধতন কর্মকর্তা একথা জানান। প্রশাসন সন্ত্রাস দমন খাতে কেনিয়াকে আরও সহায়তা দিতে কংগ্রেসের সঙ্গে একযোগে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: