ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

মিনহাজুল আবেদীন নান্নু

ব্যাটসম্যানদের বড় ইনিংস খেলতে হবে

প্রকাশিত: ০৬:২৭, ২৮ জুলাই ২০১৫

ব্যাটসম্যানদের বড় ইনিংস খেলতে হবে

মোঃ মামুন রশীদ ॥ এ বছর এখন পর্যন্ত চার টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে পরাজয় একটি, বাকি তিন টেস্টেই ড্র করেছে স্বাগতিকরা। পাকিস্তানের বিপক্ষে একটি ড্র ও একটি পরাজয়, ভারতের বিপক্ষে একমাত্র টেস্ট ড্রয়ের পর বিশ্বের এক নম্বর দল দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেও ড্র করেছে টাইগাররা। ওয়ানডে ক্রিকেটের মতো টেস্টে তেমন ভাল নয় বাংলাদেশ দল এমন সমালোচনাই শুনতে হয়েছে এতদিন। তবে ক্রমেই দীর্ঘ পরিসরের এ ক্রিকেটেও নিজেদের প্রমাণ করছে টাইগাররা। চলতি বছরে এখন পর্যন্ত পারফর্মেন্স সেটাই প্রমাণ করছে। সেক্ষেত্রে বলা যেতেই পারে দল গঠনে দারুণ সফল হয়েছেন জাতীয় দলের নির্বাচকরা। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে চট্টগ্রামে প্রথম টেস্ট ড্র হওয়াতে নতুন এক প্রাপ্তি যোগ হয়েছে। যদিও বৃষ্টির কারণে দু’দিন খেলা হয়নি। কিন্তু এ টেস্টে বাংলাদেশ দলের অনেক প্রাপ্তি আছে বলে দাবি করলেন জাতীয় নির্বাচক মিনহাজুল আবেদনী নান্নু। আর সেটাই মিরপুর টেস্টে দলকে অনুপ্রেরণা যোগাবে বলে বিশ্বাস তার। তবে তিনি মনে করেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের আরও দীর্ঘ ইনিংস খেলা জরুরী। কারণ টেস্ট ক্রিকেটে ভাল করার জন্য এর কোন বিকল্প নেই। সোমবার জাতীয় দলের অনুশীলন দেখার পর এসব কথা বলেন নান্নু। বৃষ্টির বাধায় চট্টগ্রাম টেস্টে শেষ দু’দিন কোন বলই মাঠে গড়াতে পারেনি। কিন্তু এর আগ পর্যন্ত ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের কাছেই রেখেছিল বাংলাদেশ দল। প্রাপ্তির দিক থেকে স্বাগতিকরা অনেকই কিছুই পেয়েছে বলে মনে করেন নান্নু। তিনি বলেন, ‘প্রথম টেস্ট থেকে আমাদের অনেক প্রাপ্তি আছে। দক্ষিণ আফ্রিকাকে প্রথম ইনিংসে ২৪৮ রানে অলআউট করাটাই বড় অর্জন। লিটন দাস ভাল ব্যাটিং করেছে। দলের সিনিয়র ক্রিকেটাররা দায়িত্ব নিয়ে খেলেছে। মুস্তাফিজুর রহমান ও মোহাম্মদ শহীদ ভাল বোলিং করেছে। এ টেস্ট থেকে পাওয়া আত্মবিশ্বাসটা ঢাকা টেস্টে কাজে দেবে।’ ব্যাটসম্যানরা সবাই ছোটখাটো ইনিংস খেলেছেন। সে কারণে প্রথমবারের মতো দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তিন শতাধিক রানের ইনিংস গড়তে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু ব্যাটসম্যানদের আরও দায়িত্বশীল ইনিংস খেলা জরুরী বলে মনে করেন নান্নু। তিনি বলেন, ‘আমাদের ব্যাটসম্যানদের অবশ্যই ইনিংস বড় করতে হবে। টেস্টে ভাল করতে হলে এর কোন বিকল্প নেই।’ চট্টগ্রামের উইকেট এবং পরিবেশের সঙ্গে বিস্তর ফারাক আছে মিরপুরের। সাগরিকার সঙ্গে যতটা অপরিচিত প্রোটিয়া শিবির, মিরপুরের সঙ্গে অত বেশি অপরিচিত নয় তারা। সবদিক থেকে বিবেচনা করে নান্নু মনে করছেন মিরপুর টেস্ট বাংলাদেশের জন্য কঠিন পরীক্ষা হবে। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘মিরপুরের উইকেট বাউন্সি হবে। প্রোটিয়াদের অনেক গতিময় পেসার রয়েছে। তাই আমাদের ব্যাটিং-বোলিং দুই বিভাগেই ভাল করতে হবে। আগে ব্যাট করলে ৪৫০-৫০০ রান সুবিধাজনক অবস্থানে পৌঁছে দেবে। তবে কাজটি মোটেই সহজ নয়।’ চট্টগ্রামে যে বৃষ্টি দু’দলের ওপর হামলে পড়েছিল সেটা পিছু নিয়েছে ঢাকাতেও। সোমবার সারাদিন বৃষ্টির কারণে উভয়দলই ইনডোরে অনুশীলন করতে বাধ্য হয়েছে। কিন্তু নান্নুর আশা ম্যাচের দিন থেকে বৃষ্টি কেটে যাবে। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে, তবে দ্বিতীয় টেস্ট শুরু হতে আরও দু’দিন বাকি। আশা করছি, এ সময়ের মধ্যে বৃষ্টি কেটে যাবে। প্রাকৃতিক কারণে যদি আমরা খেলতে না পারি, সেটা আমাদের জন্য অনেক বড় ক্ষতি। বড় দলের বিপক্ষে খেলতে পারলে আমাদের আত্মবিশ্বাস বাড়বে। নিজেদের মূল্যায়নও করতে পারব।’ দলের অধিনায়ক মুশফিকুর রহীম ব্যাট হাতে রানের খরার মধ্যে আছেন। টানা ১১ ইনিংস কোন অর্ধশতকের দেখা পাননি বাংলাদেশ দলের মিডলঅর্ডারের ভরসা মুশফিক। তকে মুশফিককে নিয়ে মোটেই উদ্বিগ্ন নন নান্নু। তিনি বলেন, ‘অধিনায়ক হওয়ায় সে হয়ত খানিকটা চাপে আছে। আমার মতে, মাঠের বাইরের কথায় কান না দিয়ে তার নিজের ব্যাটিংয়ে পুরোপুরি মনোযোগ দেয়া উচিত। ওর মানসিকতা ভাল, ধৈর্যশক্তিও আছে। আমার মনে হয় এই টেস্টেই ওর জ্বলে উঠার সম্ভাবনা আছে। এমন পরিস্থিতিতে একটু ধৈর্য ধরতে হবে। খেলায় মনোযোগ দিতে হবে। আমার বিশ্বাস, মুশফিকের মতো একজন খেলোয়াড় এ বিষয়টা কাটিয়ে উঠতে পারবে।’ মুশফিক রানে ফিরলে এবং দলের অন্য ব্যাটসম্যানরা বড় ইনিংস খেলতে পারলে দ্বিতীয় টেস্টেও ভাল করা সম্ভব। এবার বোলাররাও জেগে উঠেছে নিজেদের নৈপুণ্যে। এ বিষয়ে নান্নু বলেন, ‘আগে পেসাররা ভাল করত না। এখন করছে। টেস্টে ২০ উইকেট নিতে হবে। আমাদের সে ক্ষমতা আছে। চট্টগ্রামে আমরা ২৫০ রানে অলআউট করেছি, সেই আত্মবিশ্বাসটা ঢাকায়ও রাখতে হবে।’
×