ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

রাজশাহী ও বাগেরহাট

পানবরজে জলাবদ্ধতা দিশেহারা চাষী

প্রকাশিত: ০৭:০৬, ২৮ জুলাই ২০১৫

পানবরজে জলাবদ্ধতা দিশেহারা চাষী

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ সুমিষ্ট পানের জন্য খ্যাত রাজশাহীর মোহনপুর ও বাগমারা উপজেলার চাষীরা এবার বরজ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। টানা বৃষ্টিপাতে পানের বরজে পচন ধরে মরে যাচ্ছে পানপাতা। এতে চাষীদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে। পান গাছের গোড়ায় কালচে দাগ হয়ে ধীরে ধীরে গাছ মরে যাচ্ছে। ফলে পানচাষীরা আর্থিকভাবে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। জেলার মোহনপুর ও বাগামারার বিভিন্ন পানবরজ ঘুরে এমন চিত্র পাওয়া গেছে। বাগমারার উপজেলার সেনোপাড়া গ্রামের পানচাষী ইয়াছিন আলী জানান, তার চারটি পানবরজের মধ্যে তিনটি বরজই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর্থিকভাবে তিনি ক্ষতির মুখে পড়েছেন। একই এলাকার আজাদ, মুনসুর রহমান, সামসুল ইসলামসহ অনেক পানচাষীর পানবরজের একই অবস্থা। মোহনপুরের বিস্তীর্ণ পানের বরজেও দেখা দিয়েছে একই রোগ। লাভজনক হওয়ায় কয়েক বছরে জেলার বাগমারা ও মোহনপুরের কৃষকদের মধ্যে পান চাষের আগ্রহ দেখা দেয়। দুই উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নেই নতুন নতুন পান বরজ তৈরি করেছে চাষীরা। অনেকে ধান পাট ছেড়ে পান বরজে ঝঁকেছেন। তবে বরজে মড়কের কারণে তারা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। কৃষি বিভাগও সঠিক পরামর্শ দিতে ব্যর্থ হচ্ছেন। কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, শুধু বাগমারায় ৬২৫ হেক্টর জমিতে পান চাষ করা হচ্ছে। এ উপজেলায় পানের বরজ রয়েছে আট হাজার ৮৭২টি। সমপরিমাণ বরজ রয়েছে মোহনপুরেও। তবে সম্প্রতি দুই উপজেলাতেই পান বরজে মড়ক দেখা দিয়েছে। কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত, গোড়ায় পানি জমে যাওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এ ক্ষেত্রে বরজে নিবিড় পরিচর্যার পরামর্শ দেয়া হয়েছে কৃষকদের। স্টাফ রিপোর্টার বাগেরহাট থেকে জানান, চলতি বর্ষা মৌসুমে টানা বর্ষায় জলাবদ্ধতার কারণে বাগেরহাটে কমপক্ষে ৫০ হেক্টর জমির পান বরজ নষ্ট হয়ে গেছে। এতে প্রায় এক কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। জেলা সদরের যাত্রাপুর, বারুইপাড়া, কাড়াপাড়া, বিষ্ণুপুর, ষাটগুম্বুজসহ কচুয়া, ফকিরহাট, চিতলমারী উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের পানবরজ নষ্ট হওয়ায় পানচাষীরা হাপিত্যেশ করছেন। গত ৩ সপ্তাহব্যাপি ভারি বর্ষণে পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় জলাবদ্ধতায় পান গাছের গোড়ায় পানি জমে গাছ মরে যায় বলে জেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে। বাগেরহাটের কাড়াপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান শেখ বশিরুল ইসলাম জানান, তার এলাকার ৩৫/৩ পোল্ডারের জিপতলা খালে ওয়াদার ছোট একটি গেট রয়েছে। ওই গেটটি দিয়েই ৮/১০টি গ্রামের বৃষ্টি ও জোয়ারের পানি নিষ্কাশন হতে পারে না। আর এ কারণে কাড়াপাড়া ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকার পানি নামতে না পারায় সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় পানের বরজসহ বিভিন্ন ধরনের সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
×