ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী

নিউইয়র্কে বারো দিনের বারোয়াড়ি কথা

প্রকাশিত: ০৩:৪০, ২৯ জুলাই ২০১৫

নিউইয়র্কে বারো দিনের বারোয়াড়ি কথা

জুলাই মাসের শুরুতে বারো দিন আমেরিকায় কাটিয়ে এসেছি। ওবামার আমেরিকায় এই আমার প্রথম গমন। দীর্ঘ কয়েক বছর আগে জুনিয়র বুশের আমেরিকায় ঘুরে এসেছি। সেই আমেরিকা ও বর্তমান আমেরিকার মধ্যে একটু তফাত আছে। তখন অন্যায় ও অবৈধ ইরাক যুদ্ধে আমেরিকাকে জড়িত করে বুশ দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক জীবনে বিপর্যয় নিয়ে এসেছেন। একদিকে রক্ষণশীল ধনী আমেরিকানদের মধ্যে তথাকথিত যুদ্ধ জয়ের গর্ব ও উল্লাস, কিছু মিডিয়ায় ‘আমেরিকান সুপ্রিমেসির’ ঢক্কা নিনাদ। কিন্তু সাধারণ আমেরিকানদের মধ্যে অর্থনৈতিক মন্দার কালোছায়া ও শঙ্কা। ওবামা তার এবারের প্রেসিডেন্সির আমলে আর কিছু না পারুন সাধারণ মার্কিন জনগণকে এই শঙ্কা থেকে কিছুটা মুক্ত করতে পেয়েছেন। নিজের জনপ্রিয়তাকে বাজি রেখে তিনি যদি দেশটির যদ্ধবাদী কালো ঘোড়ার রাশ টেনে না ধরতেন তাহলে বর্তমান মার্কিন সাম্রাজ্যের অবস্থা হতো দ্বিতীয় মহাযুদ্ধোত্তর দেউলিয়া ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের মতো। আমেরিকার জাতীয় সংহতি দারুণভাবে ক্ষুণ্ণ হতো। ওবামা এদিক থেকে বর্তমান আমেরিকার একজন ত্রাণকর্তা। আমেরিকার ইতিহাসে এই স্বীকৃতিটুকু একদিন তিনি পাবেন। এবার ওবামার আমেরিকায় বুশের আসনের আত্মগর্বী ও আধিপত্যবাদী ‘নিউকন’ গ্রুপটির দাপাদাপিও কম দেখেছি। জনগণের মনে এই বোধটি ফিরে আসছে যে, আমেরিকাকে কেউ চিরকালের জন্য বিশ্ব পুলিশের ভূমিকা গ্রহণের অধিকার ও দায়িত্ব দেয়নি। তার সুপার পাওয়ার স্টেটসেও আজ চীনের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। বারো দিন নিউইয়র্ক এবং নিউইয়র্কের পার্শ্ববর্তী একাধিক শহর ঘুরে বেড়িয়েছি। বন্ধুবান্ধবের বাড়িতে আড্ডা দিয়েছি। নিউইয়র্কে আমার সবচাইতে ঘনিষ্ঠ বন্ধু সৈয়দ মোহাম্মদউল্লা। প্রবীণ সাংবাদিক, নিউইয়র্কের প্রথম বাংলা সাপ্তাহিক ‘প্রবাসী’র প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক। একজন সৎ ও প্রগতিশীল মানুষ। দীর্ঘকাল পত্রিকাটি পরিচালনা করে এখন অবসর নিয়েছেন। পত্রিকাটিও হাত বদল হয়ে এখন আর নেই। নিউইয়র্কে এখন বহু বাংলা পত্রিকা ও বাংলাদেশী সাংবাদিক। কিন্তু মোহাম্মদউল্লার বা প্রবাসীর স্থান গ্রহণ করতে পারেন, দু’একজন ছাড়া এমন বাংলাদেশী সাংবাদিক ও বাংলা পত্রিকা আমি দেখিনি। এবার নিউইয়র্কের বাংলা মিডিয়াগুলোর অধিকাংশের ভূমিকা দেখে আমার মনে হয়েছে, এগুলোর মধ্যে সৎ সাংবাদিকতা খুঁজতে যাওয়া অর্থহীন। জামায়াতের কাছে অধিকাংশ মিডিয়াই আত্মিক ও আর্থিক ঋণে বন্দী। সৈয়দ মোহাম্মদউল্লা এদের মধ্যে এক বিরাট ব্যতিক্রম। বহু বছর আগে নিউইয়র্কে যখন প্রথম যাই, তখন এই মোহাম্মদউল্লার এস্টোরিয়ার চারতলার ফ্ল্যাটেই প্রথম অতিথি হয়েছিলাম। তারপর যতবার নিউইয়র্কে গেছি, ততবার নিউইয়র্কের জন এফ কেনেডি এয়ারপোর্টে নেমেই তাকে হাসিমুখে অপেক্ষারত দেখেছি। এবারেও তিনি এসেছিলেন। অধিকাংশ সময় তার বাড়িতেই আতিথ্য নিয়েছি। নিউইয়র্কে ওটাই আমার স্থায়ী ঠিকানা। তার স্ত্রী আমাকে পেলে ছাড়তে চান না। বোনের মমতায় যতœ ও সেবা করতে শুরু করেন। চারতলার ফ্ল্যাটে থেকেও নিচে বাগানে বাংলাদেশের সবজির চাষ করেন। এবার সেই সবজি দিয়ে আমাকে ভাত খাইয়েছেন। সৈয়দ মোহাম্মদউল্লার এস্টোরিয়ার বাড়িতে এবারেও মাঝরাত অবধি দারুণ আড্ডা হয়েছে। নিউইয়র্কের বাঙালি সুধীমহলের এবং আমার বন্ধুদের অনেকেই এসেছিলেন। হাসান আবদুল্লাহ, একজন তরুণ কবি ও কথাশিল্পীও সস্ত্রীক এসেছিলেন। তিনি তার একটি উপন্যাসে আমার চরিত্রটিরও স্থান দিয়েছেন। তার কবিতা আমার ভালো লাগে। এবারেও তার একটি কবিতার বই আমাকে উপহার দিয়েছেন। তার কবিতায় আধুনিকতা আছে। কষ্টকল্পিত শব্দ বা বাক্যের আড়ষ্টতা নেই। রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন, ‘শুধু ভঙ্গি দিয়ে যেন না ভোলায় চোখ।’ হাসান আবদুল্লাহর কবিতা ভঙ্গি-সর্বস্ব নয়, তা হৃদয়গ্রাহী। আমাদের একজন অন্যতম প্রধান কবি শহীদ কাদরি এখনও নিউইয়র্কে। দীর্ঘকাল ধরে আমেরিকায় আছেন। প্রথমে ছিলেন বোস্টনে। দীর্ঘকাল ধরেই রোগাক্রান্ত। হুইল-চেয়ারে চলাফেরা করেন। স্ত্রী নীরার সেবাযতেœ এখনও বেঁচে আছেন। শহীদ কাদরি দেশ ছেড়েছেন, কবিতা লেখাও প্রায় ছেড়ে দিয়েছেন। এখন মাঝে সাজে লেখেন। তাতে বিদ্যুৎ চমকের মতো তার শক্তির প্রকাশ ঘটে। তিনি দেশে থাকলে এবং নিয়মিত কবিতা লিখলে হয়তো শামসুর রাহমানের পর আমাদের প্রধান কবির স্থানটি গ্রহণ করতে পারতেন। তার কবিতায় রয়েছে বহমান আধুনিকতা, সেই সঙ্গে নতুন বোধের সৃষ্টি, মেধা, মনন ও সাহসিকতা। শহীদ কাদরি নানা জটিল রোগে আক্রান্ত। কিন্তু অসীম তার মনের জোর। এবার নিউইয়র্কে দেয়া আমার একটি বক্তব্য নিয়ে বিএনপি-জামায়াত এবং তাদের অনুগৃহীত একশ্রেণীর মিডিয়া বিতর্কের ঝড় তুললে সকলের আগে শহীদ কাদরিই আমাকে টেলিফোনে বলেন, ‘দোস্ত, ভয় পেয়ো না। এটা আশ্বিন মাসের ঝড় বৃষ্টি। এই আছে, এই নেই। খবঃ ঃযব ফড়মং নধৎশ, ঈধৎধাধহ রিঃয মড় ড়হ.’ (কুকুরগুলোকে চিৎকার করতে দাও। ক্যারাভান চলতেই থাকবে।) এবার নিউইয়র্কে একজনের অনুপস্থিতি অত্যন্ত অনুভব করেছি। তার নাম মনজু বিশ্বাস। তার বাড়ি বরিশালে। আমার বাবার বন্ধুর মেয়ে। ইকবালকে বিয়ে করেছে ভালোবেসে। আমি প্রথম বোস্টনে যাই মনজু ও ইকবালের আমন্ত্রণে। তখন ওদের মেয়ের বয়স ছ’বছর। আমি তাকে নিয়ে একটি কবিতা লিখেছিলাম। মেয়ে এখন বড় হয়েছে। কিন্তু কবিতাটি নিজের কাছে রেখে দিয়েছে। কিন্তু তার মা আর নেই। দুরারোগ্য ক্যান্সার রোগে কিছুদিন হয় মারা গেছে। আমি যতবার নিউইয়র্কে গেছি, মনজু আমাকে তার বাড়িতে না নিয়ে ছাড়েনি। বোস্টন ছেড়ে ওরা নিউইয়র্কে চলে এসেছিল। মনজুর সঙ্গে শেষ দেখা নিউইয়র্কেই। এবারও আমি নিউইয়র্কে যেতেই ইকবাল ছুটে এসেছিলেন দেখা করতে। এবার বোস্টনে তরুণ কবি নাসিমের বাসায় আতিথ্য নিয়েছিলাম। নাসিম আমার আত্মীয়। আধুনিক চিন্তাচেতনার মানুষ। সবচাইতে মজার কথা, নিউইয়র্কে আমার বক্তব্য নিয়ে যখন তোলপাড় চলছে, তখন বোস্টনের আওয়ামী লীগ আমাকে নিয়ে শহরে সভা করার সাহস দেখিয়েছে। বিএনপি ও জামায়াতের চ্যালেঞ্জের মুখে এই সভা করার দায়িত্ব নিয়েছিলেন বোস্টনের আওয়ামী লীগ নেতা গনি সাহেব। তার চাইতেও তার স্ত্রী আরও বেশি মিলিট্যান্ট। দলবেঁধে কয়েকজন মহিলাই এসেছিলেন সভায়। কয়েকজন জামায়াতী সভা প- করতে এসেছিল। গনি-পতœী মহিলাদের নিয়ে তাদের দিকে তেড়ে গিয়ে বলেছেন, ‘তোমরা তালেবান, তালেবানেরা এখান থেকে দূর হও।’ পুলিশ লাগেনি, এই তালেবান শব্দ উচ্চারিত হতেই অধিকাংশ জামায়াতী সভাগৃহ থেকে পালায়। নিউইয়র্কে এবার অনেক পুরনো বন্ধুর সঙ্গে দেখা হয়েছে, যাদের সঙ্গে বহু বছর দেখা হয় না। তাদের মধ্যে আছেন ড. নূরুন্নবী, সুব্রত বিশ্বাস, সীতাংশু গুহ, লিটন ওয়াহিদ, জীবন বিশ্বাস ও উর্বি বিশ্বাস। জীবন ও উর্বি নিউইয়র্কে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর পরিচালক। উদীচীও আমার জন্য নিউইয়র্কে একটা চমৎকার অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল। এখানে জামায়াতীদের টিকিটিও দেখা যায়নি। জীবন আর উর্বি দু’জনেই উচ্চশিক্ষিত। দু’জনেই মোটা আয়ের চাকরি করেন। তাদের একমাত্র মেয়ে উদিতা। জীবন একজন গীতিকার এবং সুরকারও। তার একটি গানের এ্যালবামও বেরিয়েছে। কণ্ঠ দিয়েছেন ঢাকার বিখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী সুবীর নন্দী। জীবনের কণ্ঠেও তার এই গান আমি শুনেছি। জীবন ও উর্বি নিউইয়র্ক থেকে বেশ দূরে আটলান্টিকের কাছে এস্টেন্ড আইল্যান্ডে থাকেন। ওদের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে আটলান্টিকের সমুদ্র সৈকতে একটা বিকাল কাটিয়েছি। আমি পায়ের ব্যথায় হাঁটতে পারি না। বালুকাবেলায় বেঞ্চিতে বসে রয়েছি। উর্বি আর আমার মেয়ে বিনীতা ঘুরে বেড়িয়েছে। উদিতা এখন ইউনিভার্সিটিতে পড়ে। রাত্রে খাবার টেবিলে তার দেখা পেয়েছি। এই উদিতাকে নিয়ে একটা ছোট্ট গল্প বলি। উদিতার বয়স যখন ছয় বছর, তখন একবার ওদের এই বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলাম। তাকে দেখে বিস্মিত হলাম। ছ’বছর বয়সের মেয়ে। হাসে না, খেলে না। শুধু বইয়ের মধ্যে ডুবে থাকে। হ্যারি পটারের সব বই তখনই সে পড়ে শেষ করে ফেলেছে। এডাল্টদের বইয়েও সে দাঁত বসিয়েছে। তার রুমে খেলনা টেলনা কিছু নেই। কেবল বই আর বই। সে সম্ভবত কদাচিৎ হাসে। আমি তাকে হাসতে দেখিনি। বয়স্ক লোকের মতো সব সময় গম্ভীর। হাতে বই। আমি উর্বিকে বলছি, এ কি রকম মেয়ে তোমার। হাসে না, খেলে না! উর্বি বলেছে, ওকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। একদিন জীবন, উর্বি আর উদিতাকে নিয়ে কাছেই শপিং মলে গেলাম, সুন্দর সুন্দর খেলনায় নানা দোকান সজ্জিত। ভাবলাম, তাকে একটা খেলনা কিনে দি। মেয়ে তাতে কিছুমাত্র আগ্রহ দেখাল না। সে খেলনার বদলে বই কিনবে। তাকে বাছতে বললাম, সে একে একে ছয়টা ঢাউস বই কিনলো। তার মধ্যে হেমিংওয়ের বইও রয়েছে। আমার চক্ষু চড়কগাছে। ছয় বছরের মেয়ে হেমিংওয়ে, স্টেইনব্যাক পড়ছে। তাকে কখনো হাসতে না দেখে একটা বুদ্ধি বের করলাম। তাকে বললাম উদিতা, তুমি যদি একটু হাসো তাহলে এক ডলার দেব। যতবার হাসবে ততবার এক ডলার করে পাবে। উদিতা তাতে সাড়া দিল না। এবার বললাম, তুমি যতবার হাসবে ততবার ডলার পাবে। সেই ডলার জমিয়ে তুমি বই কিনতে পারবে। এবার আমার কথায় কাজ হলো। উদিতা ফিক্ করে হাসলো। তারপর যে ক’দিন ওদের বাসায় ছিলাম, ওকে ডলার দেখিয়ে হাসিয়েছি। সেই ছয় বছরের মেয়ে এখন তরুণী। ইউনিভার্সিটিতে যাচ্ছে। নাচতে পারে, গান গায়। আমাকে দেখে হাসিমুখে ছুটে এসেছে। বিদায় বেলায় পা ছুঁয়ে সালাম করেছে। এবার সব সময় তার ঠোঁটে ছিল স্বতঃস্ফূর্ত হাসি। আমাকে আর ডলার দিতে হয়নি। নিউজার্সির ড. নূরুন্নবীর কথা না লিখে এ লেখাটি শেষ করা ঠিক হবে না। তিনি টাঙ্গাইলের বীর মুক্তিযোদ্ধা। কাদেরিয়া বাহিনীতে ঢুকে লড়াই করেছেন। উচ্চশিক্ষিত। নিউজার্সিতে বিশাল বাড়ি করেছেন। চাকরি থেকে এখন অবসর নিয়েছেন। বেশ কয়েকটি বই লিখেছেন। মুক্তিযুদ্ধের উপর। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে এখনো অনুপ্রাণিত। তার স্ত্রীও উচ্চশিক্ষিত। শীঘ্রই চাকরি থেকে অবসর নেবেন। ড. নূরুন্নবী দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। যুক্তরাষ্ট্রে আওয়ামী লীগ সংগঠনের নেতৃত্ব তারই গ্রহণ করা উচিত ছিল। সম্ভবত তথাকথিত শিক্ষিত এবং দুর্বৃত্ত ব্যবসায়ী না হওয়ায় তিনি সেই নেতৃত্বটি পাননি। তবে যুক্তরাষ্ট্রে আওয়ামী লীগের শিক্ষিত, রাজনীতি সচেতন এবং বুদ্ধিজীবী অংশটি ড. নূরুন্নবীর সঙ্গে আছেন। তাদের নিয়ে তিনি বঙ্গবন্ধু পরিষদ করেন। যতবার নিউইয়র্কে গিয়েছি তার বাড়িতে দু’একবার থেকেছি। রাতভর তার বাড়িতে রাজনৈতিক আলোচনা চলেছে। গানবাজনার আসর বসেছে। এবারও তার বাড়িতে আসর বসেছে। নিউইয়র্ক ও নিউজার্সির তাবৎ বন্ধুরা এবং অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তি এসেছিলেন। অনেকদিন পর তাজুল ইসলামের দেখা পেলাম। তরুণ গায়ক। মৌলবাদীদের বিরুদ্ধে সোচ্চার কণ্ঠ। গানে গানে মাতিয়ে রাখলেন আসর মধ্যরাত পর্যন্ত। নিউইয়র্কে এসে এবারই প্রথম দেখলাম শিক্ষিত বাংলাদেশীদের বড় অংশের মধ্যেই শেখ হাসিনায় জনপ্রিয়তা বেড়েছে। আগে যারা কথায় কথায় তার কাজের এক-আধটু সমালোচনা না করে ছাড়তেন না, তারা এখন নিজ থেকেই বলছেন, বাংলাদেশের জন্য শেখ হাসিনার নেতৃত্ব অন্তত আরও দশ বছর প্রয়োজন। নইলে দেশটি তালেবান রাষ্ট্র হয়ে যাবে এবং সম্পূর্ণভাবে লুটেরাদের দেশ হবে। বর্তমান হাসিনা সরকারের দোষত্রুটি যা-ই থাক তার আমলে বিস্ময়কর অর্থনৈতিক উন্নতি হয়েছে। বাংলাদেশে এতসব বড় বড় আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন নেতা থাকতে শেখ হাসিনাই একমাত্র নেত্রী, যিনি বিশ্বব্যাংক এবং হিলারিÑইউনূস চক্রের সঙ্গেও টেক্কা দেয়ার সাহস দেখিয়েছেন। দেখলাম, এই মন্তব্যের সঙ্গে সকলেই সহমত পোষণ করেন। আমার নিউইয়র্কের বক্তব্যকে বিকৃত করে বিএনপি-জামায়াত-শিবির যে ঝড় সৃষ্টি করেছিল তার মোকাবেলা করার ব্যাপারে ঢাকা, লন্ডন ও নিউইয়র্কের মুক্তবুদ্ধির লেখক ও বুদ্ধিজীবীরা যে সাহসী একাট্টার ভাব দেখিয়েছেন, তাদের কথা আমার আগের লেখায় উল্লেখ করেছি। নিউইয়র্ক থেকে লন্ডনে ফেরার পথে প্লেনে বসে আমি আরও দু’জনের লেখা পড়েছি। একজন কানাডাতে বসবাসকারী ইসলামী শাস্ত্রবিদ হাসান মাহমুদ এবং অন্যজন আমেরিকায় বসবাসকারী সাহিত্যিক ফকির ইলিয়াস। তাদের লেখায় রয়েছে তথ্য এবং শাণিত যুক্তি। তাদের লেখা পড়ে আমার মনে হয়েছে অসত্যের সাথে সত্যের লড়াইয়ে সত্যের হার নেই। লন্ডন মঙ্গলবার, ২৮ জুলাই ২০১৫
×