ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

দ্বিতীয় টেস্টের আগে ভাবনায় বৃষ্টি

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ২৯ জুলাই ২০১৫

দ্বিতীয় টেস্টের আগে ভাবনায় বৃষ্টি

মিথুন আশরাফ ॥ মঙ্গলবার সকালে যখন দক্ষিণ আফ্রিকা দলের ক্রিকেটাররা অনুশীলন শুরু করে, তখন বৃষ্টি ছিল না। রোদ ছিল। তা দেখে কী খুশি প্রোটিয়ারা। ভাবখানা এমন, যেন টেস্ট সিরিজ জয়ের আনন্দ মিলে গেছে! ঠিক তেমনি দুপুরে যখন বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা অনুশীলন শুরু করে, তখনও বৃষ্টি বাধা হয়ে আসেনি। তাতে মুশফিক, তামিমরাও দারুণ খুশি। তবে এ খুশি কী শেষপর্যন্ত থাকবে? বৃষ্টি মুহূর্তেই যে আসতে পারে, আবার মুহূর্তেই থামতে পারে। তা নিয়েই যে সব ভাবনা। বৃষ্টিতে প্রথম টেস্টের মতো দ্বিতীয় টেস্টও ভেসে যাওয়ার সম্ভাবনা যে এখনও শেষ হয়ে যায়নি! তাই তো দ্বিতীয় টেস্টের আগে শুধু বৃষ্টি নিয়েই দুই দলের মধ্যে ভাবনা কাজ করছে। বৃষ্টির ভাবনা বাংলাদেশের চেয়ে বোধ হয় দক্ষিণ আফ্রিকারই বেশি। তাই তো আকাশে রোদ নিয়ে অনুশীলন করতে পেরেই প্রোটিয়া পেসার মরনে মরকেল বলে দিয়েছেন, ‘আমরা খুবই খুশি। সত্যি বলতে, টানা বৃষ্টির কারণে ড্রেসিংরুমে বসে থাকতে থাকতে আমাদেরও বিরক্তি ধরে গিয়েছিল। সবাই খুব হতাশ হয়ে পড়েছিলাম। আর ভাল লাগছিল না। আমরা খেলতে চাই। সেটাই যদি না পারি, হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকতে হয়, তাহলে কারও ভাল লাগার কথা নয়। আশা করি এবার বৃষ্টি কমবে এবং আমরা ভালভাবেই ম্যাচটি শেষ করতে পারব।’ ভরা বর্ষার মৌসুমে সেই সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। আবহাওয়া পূর্বাভাস অনুযায়ী বৃষ্টি একেবারে থেমে যাওয়ার কোন সম্ভাবনাই নেই। তাতে করে দ্বিতীয় টেস্টেও বৃষ্টি বাধা আসবে, তা ধরে নিয়েই দুই দলের ক্রিকেটারদের খেলতে নামতে হবে। দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের একটি শেষ হয়েছে। চট্টগ্রামে হওয়া প্রথম টেস্টটি বৃষ্টিতে ভেসে গেছে। এখন যদি দ্বিতীয় টেস্টও বৃষ্টিতে না হয়, তাহলে ক্ষতি দক্ষিণ আফ্রিকারই বেশি হবে। টেস্টে এখন দক্ষিণ আফ্রিকা ১ নম্বর দল। তাদের রেটিং ১২৫। যদি টেস্ট সিরিজ ড্র হয় তাহলেও র‌্যাঙ্কিংয়ে প্রোটিয়াদের স্থানে কোন পরিবর্তন ঘটবে না। তবে রেটিং যে বাড়ানোর আশা ছিল, তা হবে না। এ বিষয়টিই দক্ষিণ আফ্রিকাকে বেশি ভাবাচ্ছে। এরপর দক্ষিণ আফ্রিকার খেলা ভারতের বিপক্ষে। চার টেস্টের সিরিজ হবে। যদি বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজে না জিতে, ভারতের কাছে সিরিজে হেরে যায় এবং ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এ্যাসেজে জিতে অস্ট্রেলিয়া; তাহলে প্রোটিয়াদের প্রথম স্থান রক্ষা নিয়ে বিপদেই পড়তে হতে পারে। সেদিক থেকে দক্ষিণ আফ্রিকা বৃষ্টির ভাবনায় বেশি আছে। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের উইকেট এমনিতেই গতি নির্ভর। এখানে পেসারদের জন্য অনেক সহায়তা থাকে। দক্ষিণ আফ্রিকার ডেল স্টেইনরা সেই সুবিধা নিয়ে বাংলাদেশকে হারিয়েও দিতে পারে। তাতে করে র‌্যাঙ্কিংয়ে নিজেদের অবস্থান আরও পাকাপোক্ত হবে। এ জন্য আমলাবাহিনী বৃষ্টি যেন না হয়, তা মনেপ্রাণে চাচ্ছে। বাংলাদেশ ক্রিকেটাররাও তাই চাচ্ছে। ম্যাচে ‘হার-জিত’ যেটিই হোক, ক্রিকেটাররা খেলতে পারলেই বেশি খুশি হবেন। সামনে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের আগে এটিই বাংলাদেশের শেষ টেস্ট ম্যাচ। তাই বৃষ্টি না আসলে অন্তত ব্যাটিং-বোলিং প্র্যাকটিসটা ভালভাবে হয়ে যাবে। সেই সঙ্গে দুর্বলতাগুলোও বের হবে। যা নিয়ে কাজ করা যাবে। প্রথম টেস্টে যে দুর্দান্ত ব্যাটিং-বোলিং করেছে বাংলাদেশ, সেই ধারাবাহিকতায় ঢাকা টেস্টেও ভাল করার সম্ভাবনা থাকছে। তা হলে জয়ও ধরা দিতে পারে! বৃষ্টির জন্য প্রথম টেস্ট ড্র হওয়ার বাংলাদেশ অধিনায়ক মুশফিকুর রহীম বলেছিলেন, ‘খেলা হলে ফল ভিন্ন হতে পারত।’ এবার ঢাকা টেস্টে মুশফিকের সেই কথার প্রমাণ মিলেও যেতে পারে। অন্তত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হারলে আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে নেয়াত যাবে। আর তাই বাংলাদেশ ক্রিকেটাররাও চায়, বৃষ্টির বাধা যেন ম্যাচে না আসে। তা হলে খেলা হবে। খেলা হলে নিজেদের আরও ভাল করে উপস্থাপনও করা যাবে। তাতে করে এ মুহূর্তে না হলেও ভবিষ্যতে ঠিকই লাভ হবে। এভাবেই যে ওয়ানডেতে এখন শক্তিশালী দল হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। টেস্টেও ধীরে ধীরে শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারে। দক্ষিণ আফ্রিকা চাইছে যেন বৃষ্টি না আসে। তাতে করে জয় ধরা দিতে পারে। আর বাংলাদেশও একই রকম চাচ্ছে। তাতে ভাল খেলে, প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে; ভাল ফল বের করে নিতেও পারে। দ্বিতীয় টেস্টের আগে তাই দুই দলের মধ্যেই বৃষ্টি ভাবনাই কাজ করছে।
×