ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

অস্ত্রের যুদ্ধের চেয়ে এখন সাইবার যুদ্ধ বড় হয়ে উঠেছে

প্রকাশিত: ০৬:০৭, ২৯ জুলাই ২০১৫

অস্ত্রের যুদ্ধের চেয়ে এখন সাইবার যুদ্ধ বড় হয়ে উঠেছে

ফিরোজ মান্না ॥ সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০১৫ পর্যালোচনা শেষে আগামী মাসে অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করা হবে। অনলাইন ও অফলাইন অপরাধের মাত্রা দিন দিন বেড়ে যাওয়ায় সাইবার নিরাপত্তা আইনে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হয়েছে। বিভিন্ন দেশে অস্ত্রের যুদ্ধের চেয়ে এখন সাইবার যুদ্ধ বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। এখন যে কোন দেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে চাইলে যুদ্ধের প্রয়োজন নেই। সাইবার হামলাই যথেষ্ট। অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করা দেশের নিরপত্তা ব্যবস্থাকেও হুমকির মধ্যে ফেলে দিতে পারে। এসব কথা মাথায় রেখে সাইবার নিরাপত্তা আইন তৈরি করা হয়েছে। প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় বলছে, সাইবার আইন নিয়ে কেউ কোন দ্বিমত যাতে করতে না পারে সে দিকটিও সচেতনভাবে করা হয়েছে। সাইবার জগতকে নিরাপদ রাখার জন্যই এই আইন করা হয়েছে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, সাইবার নিরাপত্তা আইনের খসড়া আরও পর্যালোচনার জন্য তথ্য ও যোগাযোগ সচিব শ্যাম সুন্দর সিকদারকে প্রধান ও তথ্যপ্রযুক্তিবিদ মোস্তাফা জব্বারকে সদস্য সচিব করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি আইনের পর্যবেক্ষণ শেষ করে মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়ার পরই এটি মন্ত্রিসভার বৈঠকে তোলা হবে। আইনটির নামকরণ করা হয়েছে, ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন- ২০১৫’। দেশ ও দেশের বাইরে থেকে কোন সাইবার অপরাধ ঘটিয়ে দেশ, জাতি, ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সার্বভৌমত্বকে যেন ক্ষতিগ্রস্ত না করতে পারে এ জন্য সাইবার আইনটি খুবই জরুরী হয়ে পড়েছে। মন্ত্রিসভার অনুমোদন পাওয়ার পরই সাইবার আইনটি আইনে পরিণত করতে সংসদে উপস্থাপন করা হবে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী। যেসব ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান অপরাধ সংগঠিত করছে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে গেলে সুনির্দিষ্ট আইন দরকার। এ কারণেই সাইবার সিকিউরিটি আইন করা হচ্ছে। এই আইনের মাধ্যমে অপরাধগুলোর তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ এবং আদালতে প্রেরণ করার জন্য ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাব ও সাইবার অপরাধ মোকাবেলা করতে সাইবার সিকিউরিটি এজেন্সি গঠন করা হবে। আইনে আধুনিকতার ছোঁয়া, ভয়েস টর্চারিং, তথ্যপ্রযুক্তির সক্ষমতা, বাস্তবতার ভিত্তি, সঠিক পরিচয় উল্লেখসহ বিভিন্ন বিষয় যোগ করা হয়েছে। তথ্য প্রযুক্তিবিদ মোস্তাফা জব্বার বলেন, আইনের বাস্তবায়নের জন্য সংজ্ঞা সঠিক হওয়া জরুরী। এছাড়া আগের আইসিটি আইনের সঙ্গে এই আইনের সামঞ্জস্য থাকাও জরুরী। প্রয়োজনে আইসিটি আইনের সংশোধনও করার কথা বলেন তিনি। অনলাইনে সংগঠিত নানা অপরাধ ঠেকাতে ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন’ প্রণয়ন করা এখন খুবই প্রয়োজন। বর্তমানে প্রচলিত তথ্য ও প্রযুক্তি আইন দিয়ে সাইবার অপরাধ মোকাবেলা করা অসম্ভ হয়ে পড়েছে। সারা বিশ্বেই সাইবার নিরাপত্তার বিষয়টির ওপর জোর দেয়া হয়েছে। আমাদের দেশেও দিন দিন সাইবার অপরাধ বাড়ছে। এটাকে রোধ করতে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়েই আইনের খসড়া তৈরি করা হয়েছে। মোবাইল আর কম্পিউটারের ইন্টারনেট সংযোগ স্থাপন হওয়ার পর থেকে সাইবার অপরাধ বাড়তে শুরু করেছে। অবশ্য মানুষ ইন্টারনেটের সুফলও ভোগ করছেন। কিছু অপরাধী ইন্টারনেটকে অপব্যবহার করছে। এই অপব্যবহারকে ঠেকাতেই সাইবার নিরাপত্তা আইন।
×