ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

গ্রিন ব্যাংকিং এ্যান্ড সিএসআর বিভাগ এখন সাসটেইনেবল ফিন্যান্স বিভাগ ;###;কৃষিঋণ ও আর্থিক সেবাভুক্তি বিভাগ এখন ফিন্যানশিয়াল ইনক্লুশন বিভাগ;###;কৃষিঋণ ও আর্থিক সেবাভুক্তি বিভাগ এখন কৃষিঋণ বিভাগ

আরও ৩টি নতুন বিভাগ খুলতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক

প্রকাশিত: ০৬:৩৭, ২৯ জুলাই ২০১৫

আরও ৩টি নতুন বিভাগ খুলতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক

রহিম শেখ ॥ ব্যাংকিং সেবার পরিধি বাড়ছে, সেইসঙ্গে বাড়ছে ব্যাংকিং কার্যক্রমের আওতা। এ লক্ষ্যে সম্পূর্ণ নতুন তিনটি বিভাগ খোলা হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকে। কাঠামোগত পরিবর্তন করে নতুন করে নামকরণ করা হয়েছে তিনটি বিভাগের। বিভাগগুলো হচ্ছে আর্থিক পরিদর্শন বিভাগ, ফিন্যানশিয়াল সেক্টর সাপোর্ট এ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যানিং বিভাগ ও এক্সপেনডিচার ম্যানেজমেন্ট বিভাগ-১ ও এক্সপেনডিচার ম্যানেজমেন্ট বিভাগ-২। এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের গ্রিন ব্যাংকিং এ্যান্ড সিএসআর বিভাগ অবলুপ্ত করে নতুন নাম দেয়া হয়েছে সাসটেইনেবল ফিন্যান্স বিভাগ। কৃষিঋণ ও আর্থিক সেবাভুক্তি বিভাগ থেকে আর্থিক সেবাভুক্তি কার্যক্রমকে সরিয়ে ফিন্যানশিয়াল ইনক্লুশন বিভাগ গঠন করা হয়েছে। একই সঙ্গে কৃষিঋণ ও আর্থিক সেবাভুক্তি বিভাগের নাম পরিবর্তন করে কৃষিঋণ বিভাগ করা হয়েছে। এদিকে জনবল কাঠামো শক্তিশালী করতে সর্বোচ্চ নির্বাহী পরিচালক থেকে সর্বনিম্ন যুগ্ম পরিচালক পর্যন্ত ১৪৬ কর্মকর্তার পদোন্নতি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংক এক সার্কুলারের মাধ্যমে জানিয়েছে, এখন থেকে গ্রিন ব্যাংকিং এবং সিএসআর সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম ‘সাসটেইনেবল ফাইন্যান্স ডিপার্টমেন্ট’ সম্পাদন করবে। এতে বলা হয়, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিবেশবান্ধব ব্যাংকিং (পরিবেশবান্ধব অর্থায়ন, জলবায়ু ঝুঁকি তহবিল, পরিবেশ ও সামাজিক ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা, অভ্যন্তরীণ পরিবেশ ব্যবস্থাপনা, পরিবেশবান্ধব বিপণন, অটোমেটেড ব্যাংকিং চর্চা, খাতভিত্তিক পরিবেশ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা, গ্রিন স্ট্রাটেজিক প্লানিং ও অন্যান্য) সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম পরিপালন করবে। এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিল কার্যক্রম পরিপালন করবে। এছাড়া কৃষিঋণ ও আর্থিক সেবাভুক্তি বিভাগ থেকে আর্থিক সেবাভুক্তি কার্যক্রমকে সরিয়ে ‘ফিন্যানশিয়াল ইনক্লুশন বিভাগ’ গঠন করা হয়েছে। এই বিভাগ আর্থিক অন্তর্ভুক্তি কার্যক্রমের আওতায় ১০ টাকার হিসাবধারী ক্ষুদ্র/প্রান্তিক/ভূমিহীন কৃষক, প্রান্তিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত নিম্ন আয়ের পেশাজীবী এবং প্রান্তিক/ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য ২০০ কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন স্কিম সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম পরিচালনা করবে। এছাড়া ১০, ৫০, ১০০ টাকার হিসাব, এজেন্ট ব্যাংকিং, স্কুল ও পথশিশুদের জন্য ব্যাংকিং সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম মনিটরিং ও সুপারভিশন করবে। এছাড়া আর্থিক স্বাক্ষরতা ও শিক্ষা কার্যক্রম সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম পরিপালন করবে। একই সঙ্গে কৃষিঋণ ও আর্থিক সেবাভুক্তি বিভাগের নাম পরিবর্তন করে কৃষিঋণ বিভাগ করা হয়েছে। জানা গেছে, এক্সপেনডিচার ম্যানেজমেন্ট বিভাগকে ভেঙ্গে দুটি বিভাগ (এক্সপেনডিচার ম্যানেজমেন্ট বিভাগ-১ ও এক্সপেনডিচার ম্যানেজমেন্ট বিভাগ-২) করা হয়েছে। এছাড়া নতুন করে আর্থিক প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন বিভাগ, ফিন্যানশিয়াল সেক্টর সাপোর্ট এ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যানিং বিভাগ গঠন করা হয়েছে। বাংলাদেশে বিদ্যামান সকল আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান কার্যালয়, শাখা এবং বুথের স্থিতি ভিত্তিক পরিদর্শন, বিশদ, বিশেষ ও কোর রিস্ক পরিদর্শন করবে আর্থিক প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন বিভাগ। এছাড়া বিভাগটি গুরুতর অনিয়ম পেলে প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীর নিকট ব্যাখ্যা তলব করবে। অভিযোগ, মামলা ও বি-শ্রেণীকরণ ইত্যাদি সংক্রান্ত প্রতিবেদন/কেস পরীক্ষা/নিরীক্ষা শেষে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন, পরবর্তী করণীয়সহ পরিপালন এবং ফলোআপ করবে। আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বড় অংকের ঋণ/লিজ অনুমোদন, বিতরণ প্রক্রিয়া, ঋণ পুনঃতফসিলীকরণ/পুনঃগঠন, ঋণ শ্রেণীকরণ ও প্রভিশনিং, ঋণ অবলোপন ও মামলা দায়ের সম্পর্কিত গুরুতর কোন অনিয়ম ও জাল-জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়া গেলে যথযাথ ব্যবস্থা নেবে। এছাড়া কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠান নতুন শাখার লাইসেন্স প্রদানের আবেদন করলে তা বিবেচনার পূর্ব প্রয়োজনীয় পরিদর্শন কার্যক্রম সম্পন্ন করবে এই বিভাগটি। গত রবিবার আর্থিক স্থিতিশীলতা প্রতিবেদন-২০১৪ প্রকাশকালে গবর্নর ড. আতিউর রহমান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কার্যক্রমের পরিধি বাড়ছে বলে জানান। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র ম. মাহফুজুর রহমান জনকণ্ঠকে বলেন, ব্যাংকিং খাতের পরিধি বাড়ায় নতুন করে আরও তিনটি বিভাগ গঠন করা হয়েছে। এরই মধ্যে একটি বিভাগ গঠনের বিষয়টি জানিয়ে একটি সার্কুলারও জারি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাকি বিভাগগুলো গঠনের বিষয়টিও দ্রুত জানিয়ে দেয়া হবে বলে তিনি জানান। এদিকে সম্প্রতি সর্বোচ্চ নির্বাহী পরিচালক থেকে সর্বনিম্ন যুগ্ম পরিচালক পর্যন্ত ১৪৬ কর্মকর্তার পদোন্নতি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা বলেন, ২০০৩ ব্যাচের ৩১ কর্মকর্তাকে উপ-পরিচালক থেকে যুগ্ম পরিচালকে পদোন্নতি দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগের জারি করা অর্ডারে দেখা যাচ্ছে, ১৪৬ জন কর্মকর্তার পদোন্নতি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মধ্যে ২ নির্বাহী পরিচালক, ৫ মহাব্যবস্থাপক, ৩২ উপ-মহাব্যবস্থাপক ও ১০৭ জন যুগ্ম পরিচালক।
×