ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

এসএমএ মোমেন

সামাজিক আন্দোলন জরুরী

প্রকাশিত: ০৬:৪৬, ৩০ জুলাই ২০১৫

সামাজিক আন্দোলন জরুরী

বাল্যবিয়ে বা অপরিণত বয়সে বিয়ে অত্যন্ত ভয়াবহ একটি সমস্যা যা জেন্ডারসমতা ও নারীর লক্ষ্য অর্জনের ক্ষেত্রে একটি বড় বাধা। সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার ৮টির মধ্যে ৬টি অর্জনের ক্ষেত্রেই বাল্যবিয়ে একটি অন্যতম বাধা। বাল্যবিয়ের কারণে- ছেলে-মেয়ে উভয় শিশুরই মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয় এবং এর পরিণতির শুধু শিশু, অল্পবয়সী নারী নয়, বরং ক্ষতিগ্রস্ত হয় পুরো পরিবার। বাল্যবিযের প্রথম শিকার হয় শিশু, দ্বিতীয় শিকার নারী এবং তৃতীয় শিকার সমাজ। রাষ্ট্রীয়ভাবে যদিও বাল্যবিয়ে নিরোধ আইন আছে, বিয়ের কাবিন করার সময় জন্মনিবন্ধন সনদ দেখানো বাধ্যতামূলক, তারপরেও কিছু কাজী সাহেব অভিভাবক মিলে ভুয়া জন্মনিবন্ধন সংগ্রহ করে বিয়ের কাজ সম্পন্ন করেন। আমার জানা মতে, অনেক কাজী সাহেবের (নিকাহ্ রেজি.) সাময়িকভাবে চাকরি গেছে, ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ছেলে-মেয়ের বাবা-মার জেল-জরিমানা হয়েছে। কিন্তু বাল্যবিয়ের হার কমেনি। বাল্যবিয়ের কারণে শিশুর শারীরিক ও মানসিক সমস্যা সৃষ্টি হয়। পরে গর্ভবতী হলে মা ও গর্ভের সন্তান দুজনই পুষ্টিহীনতায় ভোগে। গর্ভপাত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। এ ধরনের অনেক সমস্যার সৃষ্টি হয়। বর্তমান সময়ে সরকার বাল্যবিয়ে নিরোধ আইন সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে। যে উদ্যোগের অংশ হিসেবে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় বিয়ের বয়স ছেলেদের ক্ষেত্রে ২১ বছর এবং মেয়েদের ক্ষেত্রে ১৮ বছর, মা-বাবা চাইলে ১৬, বাল্যবিয়ে নিরোধ আইন ২০১৪ নামে নতুন সংশোধন একটি আইনের খসড়া তৈরি করেছে। যদি এই সংশোধিত আইন মহান জাতীয় সংসদে পাস হয়, তাহলে কি বাল্যবিয়ে কমবে? সরকার মেয়েদের উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলার জন্য উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে ‘হায়ার সেকেন্ডারি ফিমেল স্টাইপেন্ড’ প্রকল্পের মাধ্যমে ৪০ শতাংশ ছাত্রী ও ১০ শতাংশ ছাত্রদের উপবৃত্তি প্রদান করছে। উক্ত প্রকল্পের উপবৃত্তি পাওয়ার ২টি শর্তের মধ্যে একটা হলো এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষা পর্যন্ত ওই ছাত্রীকে অবিবাহিত থাকতে হবে। অপরটি হলোÑ শতকরা ৭৫ দিন কলেজে উপস্থিত থাকতে হবে। এখন মেয়েদের বিয়ের বয়স যদি ১৬ বৎসর করা হয় তাহলে বাল্যবিয়ের হার বাড়বে। ঝরে পড়ার সংখ্যা বাড়বে, পাশাপাশি প্রকল্পের উদ্দেশ্য অর্জিত হবে না। এমনিতে সরকারী ও বেসরকারী উদ্যোগের ফলে বাল্যবিয়ে কিছুটা কমছে। উপজেলা প্রশাসন ও ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বাল্যবিয়ে বাধা দেয়া হলে অন্য এলাকায় ও আত্মীয় বাড়িতে নিয়ে বিবাহ কাজ সম্পন্ন করা হয়ে থাকে। যেসব জেলায় শিক্ষার হার অনেক কম, সেসব জেলায় বাল্যবিয়ের হারও বেশি। বিষয়টি সচেতন মহলের ভাবনার বিষয়। গালা টাঙ্গাইল থেকে
×