ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ফুঁসে উঠছে পদ্মা ॥ লণ্ড ভণ্ড হচ্ছে জনপদ

প্রকাশিত: ০৪:১১, ৩১ জুলাই ২০১৫

ফুঁসে উঠছে পদ্মা ॥ লণ্ড ভণ্ড হচ্ছে জনপদ

স্টাফ রিপোর্টার, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ॥ পদ্মা প্রচণ্ড শক্তি নিয়ে এবার আঘাত হেনেছে পদ্মার বাম তীরে বাঁধ সংলগ্ন পাড়ের বাঁধানো সিসি ব্লকের উপর। ধসে পড়েছে পাড় বাঁধানো ব্লকের বিশাল এলাকা। উল্লেখ্য, ভাঙ্গন এলাকাটি ফারাক্কা বাঁধের ১৭ কিলোমিটার ভাটিতে। কয়েক দিনের প্রবল ভারি বৃষ্টিপাতে চাপ সৃষ্টি করা পানি উজানে ছাড়ার কারণে পদ্মা রাক্ষসী রূপ নিয়ে জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার মনাকষা ইউনিয়নের ঠুটাপাড়া দিয়ে প্রবেশ করে সরাসরি আঘাত হেনেছে সদর উপজেলার সুন্দরপুর ইউনিয়নের পদ্মার বাম তীরের এই বাঁধানো পাড়ে। বর্ষা এলেই ঘূর্ণাবর্ত সৃষ্টি করা মহা প্রলঙ্কর পদ্মা যেখান সেখানে আঘাত হেনে লণ্ড ভণ্ড করে দিয়ে যাচ্ছে। এবারও লক্ষ্মীনারায়ণপুর থেকে বাখের আলী পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার বাঁধানো পাড়ের ২১টি স্থান দুর্বল হয়ে পড়েছে। যে কোন মুহূর্তে পদ্মা গ্রাস করতে পারে। যেমন করেছে বাখর আলীর নিচে। তার পরেও পানি উন্নয়ন বোর্ডের নেই কোন নজরদারি। সংশ্লিষ্ট এলাকার জনৈক জনপ্রতিনিধি অভিযোগ করে বলেন, তাদের আশঙ্কার স্থানটির উপর আঘাত হানলে মুহূর্তের মধ্যে পাড় বাঁধানো বোল্ডার নদীগর্ভে চলে যায়। এদিকে চরবাগডাঙ্গা ইউপির মালবাগডাঙ্গা, বাখের আলীসহ ১৪টি গ্রাম ও সুন্দরপুর ইউপির আরাজি কলিনগর, বিশ্বনাথপুর, এগারোরশিয়া, কালিনগর, পাঁচ রশিয়া, রামকৃষ্ণপুরসহ ২৪টি গ্রাম, সোনামসজিদ-চাঁপাইনবাবগঞ্জ সড়ক, জেলা শহর, প্রায় ২১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হুমকির মুখে পড়েছে। এ ছাড়াও ২১ কি. মিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ বিলিন হওয়াসহ পাগলা মহানন্দা নদী পদ্মার সঙ্গে মিলে যাবার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এর পরেও কোন উদ্বিগ্নতা নেই পানি উন্নয়ন বোর্ডের। ফরিদপুরে শহর রক্ষা বাঁধের ৫০ মিটার বিলীন নিজস্ব সংবাদদাতা, ফরিদপুর থেকে জানান, ১৯ দিনের ব্যবধানে ফরিদপুরে পদ্মা নদীর বাঁধানো তীরের (শহর রক্ষা বাধ) ৫০ মিটার ধসে গেছে। বুধবার ভোর ৬টার দিকে সদর উপজেলার শহরতলীর ডিক্রিরচর ইউনিয়নের মৃধাডাঙ্গি এলাকার শাহাবুদ্দীর ফাউন্ডেশনের সামনে এ ঘটনা ঘটে। প্রসঙ্গত গত ১০ জুলাই দিবাগত রাত তিনটার দিকে মুন্সীডাঙ্গি এলাকার মুদি ব্যবসায়ী সোহরাব হোসেনের বাড়ির সামনে নদীর বাঁধানো তীরের ৬০ মিটার ধসে যায়। নতুন এ ভাঙ্গনটি ওই এলাকা থেকে আনুমানিক ৫০মিটার দক্ষিণে অবস্থিত। বুধবার দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, নদীর তীর সংরক্ষণ কাজের জন্য নদীর ভিতর থেকে পাড় পর্যন্ত ২০টি সারি করে যে বোল্ডার বসানো হয়েছিল তার মধ্যে থেকে ১৮টি সারিই আনুমানিক ৫০মিটার প্রস্থ হয়ে বিলিন হয়ে গেছে। ওই এলাকার বাসিন্দা মিঠু ব্যাপারী জানান, আমি ঘরে শুয়ে ছিলাম। ভোর ৬টার দিকে হঠাৎ দ্রুম দ্রুম শব্দ শুনে আমি ঘর থেকে বের হই। নদীর তীরে এসে দেখি এক একটি বোল্ডার খসে খসে পানিতে গিয়ে পড়ছে। ‘ওই সময় নদীর ডাক শুইনা (স্রোতের শব্দ) আমরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ি।’
×