ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

বায়ান্ন বাজার তিপ্পান্ন গলি

প্রকাশিত: ০৬:০১, ৩১ জুলাই ২০১৫

বায়ান্ন বাজার তিপ্পান্ন গলি

মোরসালিন মিজান ॥ আবারও কর্মচঞ্চল হয়ে উঠেছে রাজধানী ঢাকা। সব ধরনের অফিস ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এখন খোলা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে পুরোদমে ক্লাস চলছে। গ্রামে ঈদ করতে যাওয়া মানুষের প্রায় সকলেই ফিরেছেন কর্মস্থলে। দীর্ঘ ছুটির পর যে ঢিলেঢালা ভাব, সেটিও নেই আর। খুব সকালে যে যার কাজে বেরিয়ে পড়ছেন। ঢাকার রাস্তাগুলোতে যানবাহনের চাপ দেখে সেটি বিশেষ বোঝা যায়। অফিসে যাওয়া ও অফিস থেকে ফেরার সময় মুখোমুখি হতে হয় পুরনো যানজটের। অন্য সময় যে রাস্তাঘাট খুব ফাঁকা থাকছে- তা নয়। বরং রাস্তা সচল রাখতে অনেক রাত পর্যন্ত গলদঘর্ম হতে হচ্ছে ট্রাফিক পুলিশদের। বৃহস্পতিবার বিকেলে শহরের অফিসপাড়া মতিঝিলে গিয়ে দেখা যায়, কোন কোন বাসের কাউন্টারের সামনে দীর্ঘ লাইন। একটি বাস এসে দাঁড়াতে না দাঁড়াতেই তাতে ওঠার জন্য দৌড়ঝাঁপ শুরু করে দিচ্ছেন অনেকক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রী। গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে ধুয়ে গিয়েছিল ঢাকা। ভারি বর্ষণে তলিয়ে গিয়েছিল নিচু এলাকাগুলো। বেশ ভুগতে হয়েছে রাজধানীবাসীকে। মঙ্গলবার আবহাওয়া অধিদফতর বলেছিল, অব্যাহত থাকবে বৃষ্টি। সে কারণে অনেকেই ছাতা হাতে নিয়ে ঘর থেকে বের হয়েছিলেন। তবে পূর্বাভাস তেমন কাজে আসেনি। এদিন সকাল থেকেই কড়া রোদ। সোনালী বিকেল। বৃহস্পতিবারও বৃষ্টিহীন গেছে। গত কিছুদিনের বর্ষণে যেসব জায়গা কাঁদা হয়ে গিয়েছিল এখন বেশ শুকনো। স্যাঁতস্যাঁতে অবস্থাটাও নেই আর। বরং দুদিনই মেঘমুক্ত নতুন এক আকাশ দেখেছেন রাজধানীবাসী। বুধ ও বৃহস্পতিবারের আকাশ দেখে মুগ্ধ না হয়ে পারা যায়নি। ভরা বর্ষায় যেন শরতের রং মেখেছিল আকাশ। নীল আকাশের দিকে অনেকেই মুগ্ধতা নিয়ে তাকিয়েছেন। বাসার ছাদ থেকে বেশ দেখা গেছে সে দৃশ্য। খোলা মাঠ বা বড় রাস্তা থেকে উপরের দিকে তাকালে মনে হয়েছে শরতের কাল বুঝি! এবার সাকা প্রসঙ্গ। শীর্ষ যুদ্ধাপরাধী ও ইতর শ্রেণীর লোক হিসেবে পরিচিত সাকা চৌধুরীর আপীলের নিষ্পত্তি হয়েছে বুধবার। চূড়ান্ত রায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেয়া ফাঁসির আদেশ বহাল রেখেছে সর্বোচ্চ আদালত। এর ফলে একাত্তরের ঘাতকের মৃত্যুদ- কার্যকর করা এখন সময়ের ব্যাপার। সারা দেশজুড়ে চলছে সে আলোচনা। বায়ান্ন বাজার তিপ্পান্ন গলির শহর ঢাকাও সাকা ইস্যুতে সরগরম। রাজাকারের ঘরে জন্ম নেয়া আত্মস্বীকৃত এই রাজাকার আর কোন ছাড় পাবেন না বলেই আশা করছেন রাজধানীবাসী। মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী মানুষ রায় দ্রুত কার্যকর করার দাবি জানিয়েছেন। একই দাবিতে আজ শুক্রবার শাহবাগে থাকবে সরব থাকবে গণজারণ মঞ্চ। যুদ্ধাপরাধের বিচারের দাবিতে দীর্ঘকাল ধরে রাজপথে থাকা প্রবীণরাও সাকা চৌধুরী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মোজাহিদের ফাঁসির রায় দ্রুত কার্যকর দেখতে চান। বাংলাদেশকে কলঙ্কমুক্ত করতে বাকি যুদ্ধাপরাধীদের মামলাগুলো যৌক্তিক সময়ের মধ্যে নিষ্পত্তিরও দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
×