ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বহুজাতিক বাহিনী প্রধানের নাম ঘোষণা নাইজিরিয়ার

বোকো হারামের কবল থেকে নারী ও শিশুসহ ৭১ জন উদ্ধার

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ১ আগস্ট ২০১৫

বোকো হারামের কবল থেকে নারী ও শিশুসহ ৭১ জন উদ্ধার

নাইজিরীয় সৈন্যরা উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় শহর মাইদুগুরির কাছে কয়েকটি গ্রাম থেকে বোকো হারাম জঙ্গীদের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধের পর ৭১ জিম্মিকে উদ্ধার করেছে। এদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। বন্দুকযুদ্ধে বোকো হারামের অনেক জঙ্গী নিহত হয়েছে। সামরিক বাহিনী বৃহস্পতিবার এ কথা বলেছে। খবর এএফপি ও ওয়েবসাইটের। বোকো হারামের হাতে আটকাবস্থা থেকে উদ্ধার পাওয়া কয়েকজন বলেছে, তারা প্রায় এক বছর ধরে ইসলামপন্থী জঙ্গীদের হাতে আটক ছিল। ইয়াগানা কাইয়ারি নামের এক নারী বলেছেন, আমি মৃত্যুর প্রহর গুনছিলাম। তারা আমাদের প্রায়ই হত্যার হুমকি দিয়েছে। তাকে তার কাউরি গ্রাম থেকে অপহরণ করা হয় এবং মাইদুগুরি থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে ওয়ালিমবেরিতে জঙ্গীদের এক শিবিরে বন্দী করে রাখা হয়। কাইয়ারি বলেন, চরমপন্থীরা তাদের পর্যাপ্ত খাবার দিত না। তাই অনাহারে থাকতে হতো তাদের প্রায়ই। সেনাবাহিনীর মুখপাত্র কর্নেল আইটি গুসাউ বলেছেন, আমাদের সাহসী সৈন্যরা সন্ত্রাসীদের ২টি শিবির থেকে ৫৯ বেসামরিক নাগরিককে উদ্ধার করেছে। এদের মধ্যে ৫ জন বয়স্ক পুরুষ ছাড়া সবাই নারী ও শিশু। তিনি বলেন, মাইদুগুরি থেকে ৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে কিলাকিসা থেকে বুধবার আরও ১২ নারী ও শিশুকে উদ্ধার করা হয়েছে। বোকো হারাম গত বছর উত্তর-পূর্বাঞ্চলে একটি খিলাফত রাষ্ট্র ঘোষণা করে। নাইজিরিয়া বোকো হারাম জিহাদীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য গঠিত নতুন বহুজাতিক বাহিনীর প্রধানের নাম ঘোষণা করেছে। অন্যদিকে, বিদায়ী সেনাপ্রধান সতর্কতা উচ্চারণ করে বলেছেন, দেশের সামরিক বাহিনীর পর্যাপ্ত আর্থিক সচ্ছলতা নেই এবং অস্ত্র ও সরঞ্জামাদির ঘাটতি রয়েছে। ইসলামপন্থী বোকো হারামের বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী আঞ্চলিক জোট গঠনের লক্ষ্যে নাইজিরীয় প্রেসিডেন্ট মোহাম্মাদু বুহারি যখন ক্যামেরুন সফরে রয়েছেন তখন বহুজাতিক বাহিনীর প্রধানের নাম ঘোষণা করা হলো। নাইজিরীয় সামরিক বাহিনী বলেছে তারা জঙ্গী গ্রুপের হাতে আটক কয়েক ডজন জিম্মিকে উদ্ধার করেছে। আবুজা বৃহস্পতিবার বলেছে, মেজর জেনারেল ইলিয়া আব্বা পাঁচ দেশীয় বহুজাতিক বাহিনী যৌথ টাস্কফোর্সের নেতৃত্ব দেবেন। এর আগে তেলসমৃদ্ধ নাইজার ব-দ্বীপে সামরিক অভিযানে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। নাইজিরিয়া, শাদ, ক্যামেরুন, নাইজার ও বেনিনের প্রায় ৮ হাজার ৭শ’ সৈন্য নিয়ে গঠিত এ যৌথ টাস্কফোর্স। এ বাহিনী বোকো হারামের ৬ মাসের বিদ্রোহ অবসানের লড়াইয়ে বর্তমান জোটের চেয়ে আরও ফলপ্রসূ হবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। ছয় মাসের এ বিদ্রোহে প্রায় ১৫ হাজার লোক নিহত হয়েছে। এ বাহিনী কয়েক দিনের মধ্যেই অভিযান শুরু করবে, এ প্রত্যাশা রয়েছে। বুহারি তার ক্যামেরুন সফরে বলেছেন, এ মাসের শেষ নাগাদ প্রস্তুতি শেষ হবে এ বাহিনীর। ইউনদেয়ে আলোচনা শেষে এক যৌথ বিবৃতিতে বুহারি ও ক্যামেরুনের প্রেসিডেন্ট পাউল বাইয়া বোকো হারামকে নির্মূল করার জন্য তাদের অভিন্ন দৃঢ়সঙ্কল্প প্রকাশ করেন এবং দুদেশের মধ্যে তথ্য বিনিময় জোরদারে সম্মতি প্রকাশ করেন। তারা তাদের অভিন্ন সীমান্তে নিরাপত্তা বৃদ্ধিতেও সম্মত হয়েছেন। আঞ্চলিক টাস্কফোর্সের প্রধান দফতর থাকবে শাদের রাজধানী এনজামেনাতে। এ বহু জাতিক বাহিনী গঠন সত্ত্বেও নাইজিরিয়ার বিদায়ী সেনাপ্রধান বৃহস্পতিবার সতর্কতা উচ্চারণ করে বলেছেন, দেশের সেনাবাহিনীর সংশ্লিষ্ট সরঞ্জামাদির অভাব রয়েছে। নাইজিরিয়ার সেনাবাহিনী ইতোমধ্যে বলেছে, তারা দেশের অস্থিতিশীল উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বোকো হারামের হাতে আটক ৫৯ জনকে উদ্ধার করেছে। এদের মধ্যে ২৯ নারী ও ২৫ শিশু রয়েছে। বোকো হারাম নাইজিরিয়ায় গ্রাম ও শহর থেকে শিশুসহ হাজার হাজার লোককে অপহরণ করেছে এবং অমুসলিমদের ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত করেছে। তারা কিশোরী ও নারীদের আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী হতেও বাধ্য করেছে।
×