ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করার নির্দেশ

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ ’১৭ সালের ১৬ ডিসেম্বর

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ২ আগস্ট ২০১৫

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ ’১৭ সালের ১৬ ডিসেম্বর

ফিরোজ মান্না ॥ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ২০১৭ সালের ১৬ ডিসেম্বর। এ জন্য ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম স্যাটেলাইট নির্মাণের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করার জন্য কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন। প্রকল্পের কাজ যথাসময়ে সততা ও দক্ষতার সঙ্গে শেষ করতেও বলেছেন। কাজে বিলম্ব হলে প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে যায়। তাই কাজ সময় মতোই শেষ করতে হবে। কোনপ্রকার অনিয়ম হলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রকল্পের অগ্রগতি ত্বরান্বিত ও জনবল নিয়োগসহ নানা বিষয়ে খোঁজখবর নেন তিনি। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের আওতাধীন বিভিন্ন সংস্থার মোট ১৩টি প্রকল্প রয়েছে। এই প্রকল্পের অনুকূলে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে মোট বরাদ্দের পরিমাণ ৯৮৪ দশমিক ৭৬ কোটি টাকা। এই প্রকল্পগুলোও যথা সময়ে শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন। সম্প্রতি ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের অধীনে সব বিভাগের কর্মকর্তাদের নিয়ে এক বৈঠকে কর্মকর্তাদের অনিয়ম দুর্নীতি থেকে মুক্ত থাকার আহ্বান জানান প্রতিমন্ত্রী। প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণের পর বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ থেকে শুরু করে নানা দিক থেকে এগিয়ে যাবে। স্যাটেলাইটের অর্থনৈতিক গুরুত্ব অপরিসীম। এই প্রকল্প গুরুত্বের সঙ্গেই দেখতে হবে। বিটিআরসি জানিয়েছে, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ নির্মাণের জন্য চারটি প্রতিষ্ঠান দরপত্র জমা দিয়েছে। এখন এই দরপত্রগুলোর মূল্যায়ন কাজ চলছে। চীনের গ্রেট ওয়াল ইন্ডাস্ট্রি কর্পোরেশন, ফ্রান্সের এমডিএ কর্পোরেশন, কানাডার অরবিট ও যুক্তরাষ্ট্রের ট্যালস নামে একটি কোম্পানি দরপত্রে অংশ নিয়েছে। এ চারটি প্রতিষ্ঠান থেকেই নিয়ম অনুযায়ী যোগ্য প্রতিষ্ঠান নির্বাচন করতে হবে। ভারতের এনট্রিক এবং যুক্তরাষ্ট্রের বোয়িং দরপত্রের সিডিউল কিনলেও তারা জমা দেয়নি। গত ১৪ জুন দরপত্র জমা দেয়ার শেষ দিন ছিল। ২ হাজার ৯৬৮ কোটি টাকা ব্যয়ের এই প্রকল্পের কাজ ২০১৭ সালের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। দরপত্রের আওতায় স্পেস সিগমেন্ট, লঞ্চ সার্ভিস, গ্রাউন্ড সিগমেন্ট ও উৎক্ষেপণের এক বছর পর্যন্ত বীমা সুবিধা রাখা হয়েছে। প্রকল্পের ৪০ শতাংশ টাকা বাংলাদেশ সরকার বহন করবে। বাকি ৬০ শতাংশ টাকা যে প্রতিষ্ঠান কাজ পাবে তাদের খরচ করতে হবে। তারা পরে স্যাটেলাইট থেকে আয় করা টাকা থেকে কিস্তি হিসাবে তাদের টাকা পাবে। ২০১৭ সালের ১৬ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ আনুষ্ঠানিকভাবে মহাকাশে উৎক্ষেপণ করার সম্ভাব্য দিন ধর্য্য করা হয়েছে। বিটিআরসি এ বছরের ১৫ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটের জন্য অরবিটাল সøট ইজারা নিতে চুক্তি করে। চুক্তির আওতায় বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট স্থাপনে ১১৯ দশমিক ১ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অরবিটাল সøটের জন্য আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারস্পটনিক ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অব স্পেস কমিউনিকেশন্সকে দুই কোটি ৮০ লাখ টাকা দেবে বিটিআরসি। গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) দুই হাজার ৯৬৮ কোটি টাকার এই প্রকল্পটি অনুমোদন করেছে। এর মধ্যে এক হাজার ৩১৫ কোটি ৫১ লাখ টাকা সরকারের তহবিল থেকে যোগান দেয়া হবে। দাতাসংস্থা দেবে এক হাজার ৬৫২ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। বিডার্স ফাইন্যান্সিংয়ের মাধ্যমে এই প্রকল্পের অর্থায়নের ব্যবস্থা করা হবে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের নিয়ন্ত্রণের জন্য গাজীপুরের জয়দেবপুর ও রাঙ্গামাটির বেতবুনিয়ায় বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল)-এর নিজস্ব জমিতে দু’টি গ্রাউন্ড স্টেশন নির্মাণ করা হবে।
×