ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ইমাদ-আনোয়ারে মুগ্ধ আফ্রিদি

প্রকাশিত: ০৬:১৫, ৩ আগস্ট ২০১৫

ইমাদ-আনোয়ারে মুগ্ধ আফ্রিদি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ মুগ্ধ তার হওয়ারই কথা। এমন ম্যাচে এমন জয় খোদ পাকিস্তানী ভক্তরাও কল্পনা করেননি। ১৭৩ রানের টার্গেটে নেমে ৪০ রানেই নেই ৫ উইকেট, এরপরও ৯ উইকেট হারানো পাকিস্তানের জয় ৪ বল হাতে রেখে! নয় নম্বরে নেমে ১৭ বলে ৪৬ রানের অবিশ্বাস্য ইনিংস খেলে ‘নায়ক’ আনোয়ার আলি, শেষ ওভারের চতুর্থ বলে ছক্কা মেরে ‘খেইল খতম’ করা ইমাদ ওয়াসিম ১৪ বলে অপরাজিত ২৪! এরপরও অধিনায়ক আফ্রিদি ইমাদ-আনোয়ারে মুগ্ধ না হলে বরং সেটাই হতো আশ্চর্যের! পরতে পরতে রোমাঞ্চ ছড়ানো শেষ টি২০তে ১ উইকেটের নাটকীয় জয়ে স্বাগতিক লঙ্কানদের ২-০তে হোয়াইটওয়াশ করে পাকিরা। ‘আনপ্রেডিক্টেবল’ পাকিস্তান বলেই সম্ভব! ‘১৭২ আধুনিক টি২০তে অতিক্রমযোগ্য স্কোর। কিন্তু শুরুতে টপ-অর্ডারের প্রায় সব ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে আমরা ব্যাকফুটে চলে যাই। এরপরও ম্যাচ বের করে নিতে ইমাদ আর আনোয়ার যেভাবে ব্যাটিং করেছে, তাকে এক কথায় অসাম-ই বলতে হবে, ওদের সুন্দর ভবিষ্যত দেখছি।’ রুদ্ধশ্বাস জয়ের পর প্রতিক্রিয়ায় বলেন পাকিস্তান টি২০ অধিনায়ক আফ্রিদি। এরপর স্বভাবসুলভ স্টাইলে কলার উঁচু করা বক্তব্যও রেখেছেন দলটির আধুনিক সময়ের অন্যতমসেরা এই অলরাউন্ডার। ‘এটা ঠিক বল হাতে প্রত্যাশা পূরণ করতে পারিনি। তবে দ্রুত পাঁচ উইকেট হারানোর পরও ব্যাটিংয়ে আমার ধারণাটি ছিল ইতিবাচক। অধিনায়ক হিসেবে আমি এমনভাবে ব্যাটিং করতে চেয়েছি, যাতে তরুণদের আত্মবিশ্বাস বাড়ে!’ যোগ করেন তিনি। ইমাদ-আনোয়ার তার দেখানে মন্ত্রেই এমন ব্যাটিং করেছেন, আফ্রিদি মূলত সেদিকে ইঙ্গিত করেন। মন্দ বলেননি। ৭.২ ওভারে ৪০ রানে শীর্ষ পাঁচ ব্যাটসম্যানকে হারায় অতিথিরা। অন্য কোন দল হলে হারের আগেই হেরে বসত। ঠিক তখনই ‘বুম বুম’ আফ্রিদির আবির্ভাব। ২২ বলে ১ চার ও ৪ ছক্কায় ৪৫ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে দলকে রেসে ফেরান অধিনায়ক। ষষ্ঠ উইকেটে আফ্রিদি-মোহাম্মদ রিজোয়ান ৬১ এবং অষ্টম উইকেট জুটিতে ৪.৩ ওভারে আনোয়ার-ইমাদ যোগ করেন সর্বোচ্চ ৫৮ রান! ১৭ বলে ৩ চার ও ৪ ছক্কায় ৪৬ রান করা আনোয়ার আলি ১৯তম ওভারের চতুর্থ বলে সাজঘরে ফিরলে খেলার মোড় ঘুরে যায়। একই ওভারের শেষ বলে নবম ব্যাটসম্যান সোহেল তানভির রানআউট হলে ‘বাষ্পরুদ্ধ’ অবস্থার তৈরি হয়! বিনুরা ফার্নান্ডোর করা শেষ ওভারের প্রথম বল কভারে ঠেলে ইমাদকে স্ট্রাইক দেন ইরফান। ড্রেসিং রুমে দুই হাতের তালু কচলানো কোচ ওয়াকার ইউনুস ও অধিনায়ক আফ্রিদির তখন ‘হাসফাস’ অবস্থা। সেøায়ার ডেলিভারি ডাউন দ্য ট্র্যাকে গিয়ে লংঅন দিয়ে হওয়ায় ভাসিয়ে মাঠের বাইরে আছড়ে ফেলেন ইমাদ! হোয়াট এ শট, হোয়াট এ উইন!! টি২০ ইতিহাসে মাত্র তৃতীয়বারের মতো ১ উইকেটের ফয়সালা দেখে ক্রিকেট বিশ্ব। পাকিস্তানের প্রথম। ইমাদের ৪৬Ñ টি২০তে নয় নম্বরে নেমে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের নতুন রেকর্ড। ১৭৪/৯Ñ পাকিস্তানের তৃতীয় সর্বোচ্চ দলীয় রান অতিক্রম করে জয়ের নজির। সর্বোচ্চ ১৭৮/২Ñ বাংলাদেশের বিপক্ষে পাল্লেকেলেতে ২০১২ সালে। একই ভেন্যু কলম্বোয় প্রথম ম্যাচে ২৯ রানের বড় জয়ের পর আফ্রিদি বলেছিলেন, সিরিজ নিশ্চিতের পাশাপাশি জয় দিয়ে শ্রীলঙ্কা সফর শেষ করতে চান তিনি। কথা রাখলেন টি২০ অধিনায়ক। প্রথমে মিসবাহ-উল হকের নেতৃত্বে ২-১এ টেস্ট, এরপর আজহার আলি বাহিনীর ৩-২এ ওয়ানডে জয়ে ২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির টিকেট অর্জন। এক সফরে এত প্রাপ্তি পাকিদের কপালে কমই জুটেছে!
×