ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

অভিজিত হত্যাকাণ্ড

ব্যবহার হয়েছিল ৭ মোবাইল, সাত জন চিহ্নিত

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ৪ আগস্ট ২০১৫

ব্যবহার হয়েছিল ৭ মোবাইল, সাত জন চিহ্নিত

শংকর কুমার দে ॥ ব্লগার অভিজিত রায় হত্যাকা-ের তদন্তে সাতজনকে চিহ্নিত করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এই হত্যাকা-ে ব্যবহার হয়েছিল সাত মোবাইল ফোন। এরমধ্যে একটি জব্দ করেছে তদন্তকারী কর্তৃপক্ষ। হত্যাকা-ের সময় মোবাইল ফোনে কথোপকথন করেনি খুনীরা। মোবাইল ফোনে এসএমএস (ক্ষুদে বার্তা) পাঠিয়ে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করে তারা। খুনীদের চিহ্নিত করার পর এখন শনাক্ত করার পর্ব। শনাক্ত করার পর্বটি সমাপ্ত হলেই খুনীচক্রকে করায়ত্ত করার মধ্য দিয়ে অভিজিত হত্যাকা-ের রহস্য উদ্ঘাটন হতে যাচ্ছে। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) সূত্রে এ খবর জানা গেছে। ডিবি সূত্র জানায়, অভিজিত হত্যা নিশ্চিত হওয়ার পর হিযবুততাহরীরের সদস্যদের নির্দেশে বিদেশ থেকে দায় স্বীকার করে টুইটারে টুইট করা হয় ‘আনসার বাংলা-৭’ জঙ্গী সংগঠনের নামে। এফবিআই সদস্যদের এই তথ্য জানিয়েছেন ডিবির তদন্তকারী কর্মকর্তারা। অভিজিত খুন হওয়ার পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র শাফিউর রহমান ফারাবীর ফেসবুক এ্যাকাউন্ট থেকে আসা একটি কমেন্ট শেয়ারে অভিযুক্ত হন। ওই কমেন্টে বলা হয়, ‘অভিজিত রায় আমেরিকা থাকে। তাই তাকে এখন হত্যা করা সম্ভব না। তবে সে যখন দেশে আসবে তখন তাকে হত্যা করা হবে।’ এর আগে ফারাবী বাংলা বই বিক্রির ওয়েবসাইট ‘রকমারি ডটকম’ থেকে অভিজিত রায়ের বই সরাতেও হুমকি দিয়েছিলেন। ফেসবুকের এসব কমেন্ট, টুইটারের টুইট, ব্লগারদের নাম ও সংগঠন ইত্যাদির বিষয়ে অবহিত করেন এফবিআই সদস্যদের। এছাড়াও হিযবুত তাহরীর নেতা শাফিউর রহমান ফারাবীসহ অন্তত ১০ জন বিভিন্ন সময়ে হত্যার হুমকি দিয়েছিলেন বিজ্ঞানমনস্ক লেখক ও ব্লগার অভিজিত রায়কে। এই হত্যা মামলায় গ্রেফতার হওয়া প্রধান আসামি শফিউর রহমান ফারাবীকে জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকা-ের ১০ জনের নাম পায় গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি বইমেলা ঘুরে লেখক ও ব্লগার অভিজিত রায় ও তার স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মোড়ে এলে দুর্বৃত্তরা তাদের ওপর হামলা চালায়। তাদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে নিহত হন অভিজিত রায়। আর গুরুতর আহত হন রাফিদা আহমেদ বন্যা। উন্নত চিকিৎসার জন্য তিনি যুক্তরাষ্ট্রে চলে গেছেন। তারা দু’জনই বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। তদন্তের দৃশ্যমান অগ্রগতি না হওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করে আসছেন নিহত অভিজিতের বাবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক একুশে পদকজয়ী ড. অজয় রায় ও ঘটনার সময় গুরুতর আহত অভিজিতের স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যা। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের মুখপাত্র যুগ্মকমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেছেন, অভিজিত রায় হত্যাকা-ের তদন্তে সাতজনকে চিহ্নিত করা গেছে। এরমধ্যে হত্যাকা-ে যে সাত মোবাইল ফোন ব্যবহৃত হয়েছিল, তার মধ্যে একটি জব্দ করা গেছে, অপর ছয়টি ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। খুনীচক্রের সাত সদস্যকে চিহ্নিত করার পর এখন তাদের শনাক্ত করার প্রক্রিয়ার কাজ চলছে, যা এই হত্যাকা-ের রহস্য উদ্ঘাটনে সহায়ক হচ্ছে।
×