ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

মানবিক কল্যাণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

প্রকাশিত: ০৬:০০, ৪ আগস্ট ২০১৫

মানবিক কল্যাণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক হিসেবে এবং সরকারী-বেসরকারী বাণিজ্যিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অভিভাবকের ভূমিকায় সাফল্য দেখিয়েছে। পাশাপাশি দেশের বাইরেও অনুকরণীয় হওয়ার যে দৃষ্টান্ত দেখিয়েছে তাতে এ প্রতিষ্ঠানটিকে নিয়ে গর্ব করা যায়। দেশের প্রান্তিক মানুষকে অর্থনীতির মূল স্রোতে প্রবাহিত করার যে কল্যাণকর উদ্যোগ ব্যাংকটি নিয়েছে তাতে এসব অনগ্রসর ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের ভাগ্যেরই শুধু পরিবর্তন ঘটবে না, সে সঙ্গে দেশের অর্থনীতিও হবে সমৃদ্ধ। এই সুদূরপ্রসারী ও মানবিক কর্মসূচীর প্রণেতা ব্যাংকটির গবর্নর ড. আতিউর রহমান। বাংলাদেশ ব্যাংকের রয়েছে কিছু বিধিবদ্ধ কর্মপন্থা। যা দেশের আর্থিক খাতের সিদ্ধান্তসমূহের সর্বোচ্চ পর্যায়ের। আর্থিক খাতসমূহের মধ্যে সমন্বয় সাধনসহ শৃঙ্খলা, নিয়ন্ত্রণ, প্রবৃদ্ধি, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানমূলক, মুদ্রানীতি প্রণয়নসহ মূল্যস্ফীতি রোধও এর প্রাথমিক কর্মকা-ের অধীন। এর পাশাপাশি মানবিক ও সামাজিক উন্নয়নমূলক কর্মকা-ের যে উদাহরণ সৃষ্টি করেছে তা প্রশংসিত এবং দেশের বাইরে মডেল হিসেবেও হচ্ছে গণ্য। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের জন্য পেয়েছে বিদেশী পদক। দেশ-বিদেশে কর্মজীবী মানুষ খুব সহজে, দ্রুত ও কম সময়ের মধ্যে তাদের উপার্জিত অর্থ স্বজনদের কাছে পাঠানোয় আর্থিক সাশ্রয় যেমন হয়েছে, তেমনি সরকারের আয়ও বেড়েছে। অবৈধভাবে অর্থ প্রেরণের যে প্রবণতা দেখা দিয়েছিল তা রোধ করা গেছে। হুন্ডি ব্যবসার মতো কালো বাণিজ্যেও দেখা দিয়েছে অশনি সঙ্কেত, যা অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক। জঙ্গীদের অর্থ পাচার রোধের ক্ষেত্রেও ব্যাংকটি সক্রিয়। বাণিজ্যিক ব্যাংকের মতো বাংলাদেশ ব্যাংকও সিএসআর চালু করে সামাজিক দায়বদ্ধতা পালন করছে। এটা স্বপ্রণোদিত কল্যাণকর ও সৃষ্টিশীল উদ্যোগ। কম সুদে ফসলী ঋণ, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের জন্য ঋণ সহজীকরণ, সীমিত ও কম আয়ের প্রান্তিক মানুষ, ঢাকা দুই সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মী, কৃষক ও শিক্ষার্থীদের ১০ টাকা দিয়ে সঞ্চয়ী হিসাব খোলার নিয়ম শুধু মানবিক উন্নয়নই নয়, এটা ভবিষ্যতে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধ জাতি গঠনেও হবে সহায়ক। সমাজের সুবিধাবঞ্চিত ও আর্থিক সেবার বাইরে থাকা মানুষকে সরাসরি ব্যাংকিং খাতের সঙ্গে সম্পৃক্ত করার অর্থই অর্থনীতির মূল স্রোতের মধ্যে তাদের নিয়ে আসা। এটা যে সময়োপযোগী ও শুভ উদ্যোগ তা নিঃসন্দেহে বলা যায়। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাফল্য আর এর গবর্নরের নাম এখন সমার্থক হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নানা খাতে সাফল্য, ইতিবাচক অর্জন একদিনে সম্ভব হয়নি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মানবিক কল্যাণকামী হয়ে ওঠার দৃষ্টান্ত বহির্বিশ্বে অনুসৃত হওয়ার খবরটি নিশ্চয়ই আনন্দের। এতে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গৃহীত সামাজিক, অর্থনৈতিক উন্নয়নমূলক এ মানবিক কল্যাণ কার্যক্রম এখানেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, এর দিগন্ত আরও প্রসারিত হবে বলে আমাদের কাম্য। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোও নিজেদের মতো করে নতুন নতুন মানবিক-সামাজিক উন্নয়নমূলক উদ্যোগ উদ্ভাবনের মাধ্যমে দেশ ও অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করবে এটা সবার প্রত্যাশা।
×