ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

পুঁজিবাজার বিষয়ক বিশেষ ট্রাইব্যুনালের প্রথম রায়

প্রকাশিত: ০৬:০২, ৪ আগস্ট ২০১৫

পুঁজিবাজার বিষয়ক বিশেষ  ট্রাইব্যুনালের প্রথম রায়

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ফেসবুকের ছয়টি ওয়েব পোর্টালে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার কেনা-বেচার আগাম মিথ্যা তথ্য প্রচারকারী মাহাবুব সারোয়ারকে দুই বছরের কারাদ দিয়েছেন পুঁজিবাজার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল। পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের বিভ্রান্ত করার জন্য আসামি এ কাজ করেছেন বলে যে অভিযোগ ছিল, তা প্রমাণিত হয়েছে বলে ট্রাইব্যুনাল জানিয়েছেন। বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক (বিশেষ জেলা জজ) হুমায়ুন কবীর বাদী পক্ষ (বিএসইসি) ও বিবাদী পক্ষের (মাহাবুব সারোয়ার) সাক্ষ্যগ্রহণ, জেরা এবং যুক্তিতর্ক শুনে সার্বিক দিক বিবেচনা করে এ রায় দেন। এটাই পুঁজিবাজার বিশেষ ট্রাইব্যুনালের প্রথম রায়। সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিচারক হুমায়ুন কবির আসামি ও বাদী পক্ষের উপস্থিতিতে রায় পড়ে শোনান। মাত্র ১৫ মিনিটের মধ্যে রায় পড়ে শুনিয়ে এজলাস কক্ষ ত্যাগ করেন বিচারক হুমায়ুন কবীর। রায়ে বলা হয়েছে, আসামি মাহাবুব সারোয়ার পুঁজিবাজারের বিভিন্ন কোম্পোনির আগাম বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ফেসবুকসহ অন্যান্য ওয়েব পোর্টালে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার কেনা-বেচার আগাম মিথ্যা তথ্য প্রচার করে বিনিয়োগকারী ও পুঁজিবাজারকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছেন, যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ ছাড়া রাষ্ট্রপক্ষ যে সাক্ষ্য দিয়েছেন তা বিশ্বাসযোগ্য। এখানে অবিশ্বাসের কিছুই নেই। আর বিভ্রান্তিমূলক তথ্য প্রচারের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আসামি মাহাবুব সারোয়ারের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্দেশে যে তদন্ত প্রতিবেদন করা হয়েছিল তা যথোপযুক্ত। পাশাপাশি পুলিশের তদন্তে আসামি দোষী হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) রেজিস্ট্রেশন নিয়ে বিনিয়োগকারীদের শেয়ার কেনা-বেচার আগাম তথ্য দিয়ে সহায়তা করার কাজ বিভিন্ন মার্চেন্ট ব্যাংক বা পোর্টফোলিও ম্যানেজার করে থাকে। কিন্তু আসামি মাহাবুব সারোয়ার রেজিস্ট্রেশন ছাড়াই বিনিয়োগকারীদের শেয়ার কেনা-বেচার আগাম তথ্য ফেসবুকসহ বিভিন্ন ওয়েব পোর্টালে প্রকাশ করেছেন। যা সিকিউরিটিজ আইন পরিপন্থী। রায় শেষে আসামি পক্ষের আইনজীবী নজরুল ইসলাম বলেন, পুঁজিবাজার বিশেষ ট্রাইব্যুনালের এটাই প্রথম রায়। আমরা মনে করি, রাষ্ট্রপক্ষ মাহাবুব সারোয়ারের অপরাধ যথাযথভাবে প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। ট্রাইব্যুনাল যে রায় দিয়েছেন তা মাথায় রেখে উচ্চ আদালতে আপিল করব। আমরা আশা করি, উচ্চ আদালত মাহাবুব সারোয়ারকে বেকসুর খালাস দেবেন। আপিলের জন্য কিছু প্রস্তুতি রয়েছে। তাই দেড় থেকে দুই সপ্তাহের মধ্যে উচ্চ আদালতে এ রায়ের বিপরীতে আপিল করব। এ বিষয়ে বিএসইসির আইনজীবী হাসিবুর রহমান দিদার বলেন, আসামি মাহাবুব সারোয়ার বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইন ১৯৯৩-এর ১৮ ধারা লঙ্ঘন করেছেন। তাই বিজ্ঞ ট্রাইব্যুনাল সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ ১৯৬৯-এর ২৪ ধারা অনুযায়ী দুই বছরের কারাদ দিয়েছেন। এ বিষয়ে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও দায়িত্বপ্রাপ্ত মুখপাত্র সাইফুর রহমান বলেন, এটা ট্রাইব্যুনালের প্রথম রায়। আমার মতে এটা একটা যুগান্তকারী রায়। আর বাজারে মেনুপুলেটরদের (কারসাজিকারী) জন্য এ রায় একটি সতর্কবার্তা। এ ধরনের ইতিবাচক রায়ে বাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
×