ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

অবশেষে ঢাকা টেস্টও ড্র

প্রকাশিত: ০৬:১৮, ৪ আগস্ট ২০১৫

অবশেষে ঢাকা টেস্টও ড্র

মিথুন আশরাফ ॥ চট্টগ্রাম টেস্টের পর ঢাকা টেস্টও ড্র হয়ে গেল। প্রথম টেস্টটি যেমন বৃষ্টির জন্য ড্র হয়েছে, দ্বিতীয় টেস্টেও তাই ঘটল। টানা তিনদিনের বৃষ্টিতে মাঠ খেলার অনুপযোগী থাকায় চতুর্থদিনের মতো পঞ্চমদিনেও খেলা হলো না। তাতে করে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ ড্র হয়ে গেল। এই সিরিজ ড্র হওয়াতে অবশ্য বাংলাদেশেরই লাভ হয়েছে। টেস্টে রেটিং পয়েন্ট বাড়িয়ে নিয়েছে বাংলাদেশ। চট্টগ্রাম ও ঢাকায়- দুই টেস্ট মিলে খেলা হয়েছে মোট চারদিন। ছয়দিন ভেসেছে বৃষ্টিতে। চারদিনের মধ্যে তিনদিনই খেলেছে বাংলাদেশ। দক্ষিণ আফ্রিকা খেলার সুযোগ পেয়েছে মাত্র একদিন। ফল অবধারিতই। দুই টেস্টই ড্র। সিরিজও ড্র হলো ০-০ ব্যবধানে। বৃষ্টির কল্যাণে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে এই প্রথমবারের মতো টেস্ট সিরিজ ড্র করার গৌরব অর্জন করেছে বাংলাদেশ। একই সঙ্গে টেস্টে রেটিং পয়েন্টও বেড়ে গেছে বাংলাদেশের। খেলা বলতে দুই টেস্টে কিছুই হয়নি। কেউ কারও বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতাই গড়ার সুযোগ পায়নি। কিন্তু সিরিজ শেষে প্রকাশিত আইসিসি র‌্যাঙ্কিংয়ে অবস্থানের কোন হেরফের না হলেও রেটিং পয়েন্টে নড়চড় হয়েছে বেশ। বাংলাদেশ এই মুহূর্তে ওয়ানডের মতো টেস্ট ক্রিকেটে নিজেদের সর্বোচ্চ বিন্দুতে অবস্থান করছে। টেস্টে ৬ রেটিং পয়েন্ট বেড়ে এখন বাংলাদেশের পয়েন্ট ৪৭। আইসিসি টেস্ট র‌্যাঙ্কিং কিংবা রেটিং পয়েন্টিংয়ের নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম আছে। ওয়ানডেতে প্রতি ম্যাচ পরই রেটিং পয়েন্ট নড়চড় হয়। র‌্যাঙ্কিংয়ে অবস্থানও পরিবর্তন হতে পারে তাতে। তবে টেস্টে কোন ম্যাচ নয়। সিরিজ শেষ হলেই কেবল র‌্যাঙ্কিংয়ে পরিবর্তন আসে। সে হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ঢাকা টেস্টের পঞ্চমদিনও খেলা শেষে দেখা গেল বাংলাদেশের রেটিং পয়েন্ট ৬ বেড়ে গেছে। ৬ রেটিং বাড়লেও, অবস্থানে কোন নড়চড় হচ্ছে না। আগের নবম স্থানেই রয়েছে বাংলাদেশ। পেছনে শুধু জিম্বাবুইয়ে। ওয়ানডেতে বাংলাদেশের অবস্থান ৭ নম্বরে। রেটিং পয়েন্ট ৯৬। পেছনে রয়েছে পাকিস্তান, ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং জিম্বাবুইয়ে। ওয়ানডের মতো খুব বেশি সাফল্য না পেলেও টেস্ট ক্রিকেটে গত কয়েক সিরিজে মোটামুটি ধারাবাহিকই বাংলাদেশ। জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে সিরিজ জয়। এরপর পাকিস্তান, ভারত এবং দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে চার টেস্ট ড্র করার কারণেই রেটিং পয়েন্টে অভাবনীয় উন্নতি করেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের রেটিং বাড়লেও, কমেছে দক্ষিণ আফ্রিকার। ১৩০ রেটিং পয়েন্ট নিয়ে বাংলাদেশে এসেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। এমনিতেই তারা রয়েছে শীর্ষে। বাংলাদেশে লক্ষ্য ছিল সেই রেটিং পয়েন্টকে বাড়িয়ে তোলা। কিন্তু পয়েন্ট না বেড়ে উল্টো কমে গেছে ৫টি। প্রোটিয়াদের অবস্থান এক নম্বরে হলেও তাদের রেটিং এখন ১২৫। দ্বিতীয় স্থানে থাকা অস্ট্রেলিয়ার রেটিং ১১১। টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের ওপরে থাকা (অষ্টম স্থানে) ওয়েস্ট ইন্ডিজের রেটিং ৮১। বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবধান ৩৪। ক্যারিবীয়দের ধরতে হলে টানা কিছু টেস্ট ম্যাচ জয় ছাড়া বিকল্প নেই। তবে এসব রেটিং পয়েন্ট নিয়ে নয় ক্রিকেটারদের কাছে খেলাটাই ছিল মুখ্য। না খেলতে পেরে ভীষণ হতাশ ক্রিকেটাররা। বাংলাদেশ অধিনায়ক মুশফিকুর রহীম যেমন হতাশাই প্রকাশ করেছেন। বলেছেন, ‘আমরা ওয়ার্মআপের আগেই শুনতেই পাই খেলা হবে না। পঞ্চমদিন হয় তো আম্পায়ার, ম্যাচ রেফারি বা ম্যাচ অফিসিয়াল যারা থাকেন তাদের সিদ্ধান্ত থাকে। সেদিক থেকে এটা আমাদের জন্য নতুন অভিজ্ঞতা, এর আগে কখনও এমন পরিস্থিতিতে পড়িনি। যেটা জানতে পারলাম, আউটফিল্ড কিছু জায়গায় ভেজা রয়েছে। যা কিনা শুকাতে তিন-চার ঘণ্টা সময় লাগবে, যদি সূর্যের দেখা মেলে। তারপরও যতক্ষণ খেলা হবে ততক্ষণে ফল হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই তা ভেবেই হয় তো তারা মনে করেছে খেলা বাতিল করার এটাই সবচেয়ে ভাল সময়। এটা আমাদের নেই। আমার মনে হয়, দুই দলের কাউকে জিজ্ঞেসও করা হয়নি। আমি যতদূর জানি, ম্যাচ অফিসিয়ালরাই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। হয় তো এই সময় ম্যাচ খেলার উপযোগী নয়। কেউ তো আসলে হারার জন্য খেলে না! কিন্তু খেলে আমরা অনেক কিছু শিখতে পারতাম। উইকেটটি কঠিন ছিল। এখানে অনেকক্ষণ টিকে থেকে রান করা। বিশ্বের সেরা দলের ফিল্ডিং সেটআপ ও তাদের বোলিং আক্রমণ- এমন অনেক কিছু ছিল। যা আমরা মিস করলাম। বিষয়টা এ রকম নয় যে, বৃষ্টিতে ড্র হয়েছে; আমরা বেঁচে গেলাম। আমার মনে হয়ে ২৪৬ রান এ উইকেটে অন্য উইকেটের ৩৫০ রানের সমান। সুতরাং আমরা ম্যাচে ভালভাবেই টিকে ছিলাম। অনেকে আমাকে বলেছে বৃষ্টির কারণে ভাল হয়েছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে তা মনে করি না। এর আগের টেস্টেও আমরা ভাল খেলেছিলাম। দল হিসেবে আমি বলব এই সিরিজ থেকে আমাদের অনেক কিছু অর্জন হয়েছে। তবে এখনও আরও উন্নতি করতে হবে। অনেক সুযোগ আছে। উন্নতির শেষ নাই। আশা করব অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে যাতে তা অর্জন করতে পারি।’ এভাবে দুটি টেস্ট বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ায় হতাশ দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক হাশিম আমলাও। বলেছেন, ‘সত্যিই এই বাস্তবতা বোঝা কঠিন। যদি এটা ১-১ ড্র হতো, খেলার যথেষ্ট সুযোগ পেতাম, যেটার সত্যিকার প্রতিফলন মাঠে পড়ত, তাহলে হয়ত বোঝা যেত। আইসিসিও তখন হয় তো এই দিকটা দেখতে পারত। কিন্তু খারাপ আবহাওয়ার বিষয়টিও আইসিসির দেখা উচিত। এমন কিছু থাকা উচিত যা ন্যায্য এবং সব দলকে সমান পাল্লায় মাপে। এ ক্ষেত্রে (এই সিরিজে) আমাদের পয়েন্ট হারানো খুব অদ্ভুত মনে হচ্ছে, খেলার সুযোগই
×