ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ভয়াবহ ভাঙ্গনে ইলিশা ঘাট বিলীন

১১ দিনেও চালু হয়নি ভোলা-লক্ষ্মীপুর ফেরি

প্রকাশিত: ০৭:১৭, ৫ আগস্ট ২০১৫

১১ দিনেও চালু হয়নি ভোলা-লক্ষ্মীপুর ফেরি

হাসিব রহমান, ভোলা ॥ ভোলা-ইলিশা ফেরিঘাট সড়ক মেঘনার ভয়াবহ ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে যাওয়ায় ১১ দিন ধরে ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটের ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে কয়েক কোটি টাকা লোকসানের মুখে পড়েছে ভোলার ব্যবসায়ীরা। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১৬ জেলার সঙ্গে বন্দর নগরী চট্টগ্রামের সহজ যোগাযোগের মাধ্যম ইলিশা ফেরিঘাটের রাস্তা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে প্রতিদিন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আনানেয়া করতে না পারায় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন দেশের সর্ব বৃহৎ দ্বীপের ব্যবসায়াীরা। এছাড়াও ভোলা থেকে চট্টগ্রাম নোয়াখালীগামী সাধারণ যাত্রীরাও পড়েছেন চরম ভোগান্তির মধ্যে। এরফলে চট্টগ্রামের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় সূত্রগুলো জানিয়েছে, গ্যাসসমৃদ্ধ দ্বীপজেলা ভোলায় গত ঈদ-উল-ফিতরের দিন থেকেই নেমে আসে দুর্যোগ। শুরু হয় ভোলা-লক্ষ্মীপুর মহাসড়কের ইলিশা ফেরিঘাট এলাকায় ভয়াবহ ভাঙ্গন। গত ২৫ জুলাই ওই রাস্তা বিচ্ছিন্ন হওয়ায় যাত্রীদের যাতায়াত, পণ্য পরিবহনসহ সব যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। দক্ষিণ অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ ভোলা-লক্ষ্মীপুর ফেরি সার্ভিস বন্ধ হয়ে যায়। এ রুট দিয়েই দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে ভোলা হয়ে চট্টগ্রামের ১৬ জেলার সহজ যোগাযোগ মাধ্যম। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন যাত্রীরা আর ব্যবসায়ীকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ব্যবসায়ী ও পরিবহন মালিকরা। যাত্রীরা জানান, তারা এখন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রলার কিংবা সি-ট্রাকে করে মেঘনা পাড়ি দিয়ে লক্ষ্মীপুর হয়ে চট্টগ্রাম যেতে হচ্ছে। একে করে তাদের খরচ বেড়ে গেছে। এদিকে ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় বিকল্প ব্যবস্থায় ভোলা-বরিশাল রুট দিয়ে বরিশাল হয়ে তিন শ’ কিলোমিটারের বেশি পথ ঘুরে অন্য জেলায় পরিবহন করা হচ্ছে কাঁচামালসহ বিভিন্ন মালামাল। এতে একদিকে যেমন কাঁচামাল নষ্ট হচ্ছে তেমনি অতিরিক্ত সময় লাগার পাশাপাশি দ্বিগুণ ভাড়া গুনতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। এর ফলে রড-টিনের দাম বেড়ে গেছে। যে কারণে কিছুতেই ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারছে না ব্যবসায়ীরা। ভোলা মহাজন পট্টি এলাকার রড-টিন ব্যবসায়ী নিজাম উদ্দিন জানান, ফেরি বন্ধ থাকায় তাদের এখন চট্টগ্রাম থেকে এক ট্রাক মাল আনতে ৪৫ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে এবং সময় লাগছে অন্তত সাত দিন। আগে লাগত ২৫ মাত্র হাজার টাকা এবং সময়ও লাগত ২/৩ দিন। পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়ায় এখন রডে টনপ্রতি দুই হাজার টাকা বেশি লাগছে। ভোলা ফেরি বাস্তবায়ন ও স্বার্থ রক্ষা কমিটির সদস্য সচিব অমিতাভ অপু জানান, ফেরি বন্ধ থাকায় প্রতিদিন ভোলার ব্যবসায়ীদের অনেক ক্ষতি হচ্ছে, যা ভোলার অর্থনীতিতে বিশেষ প্রভাব পড়ছে। এদিকে ভোলা-লক্ষ্মীপুর ফেরি চলাচল বন্ধ হওয়ার দুই দিন পরে বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক পরিদর্শনে এসে দ্রুত ফেরীঘাট স্থানান্তর করে সাত দিনের মধ্যে ফেরি চালুর আশ্বাস দেন। কিন্তু ১১ দিন পেরিয়ে গেলেও চালু হয়নি ফেরি। তবে বিআইডব্লিউটিএ ঠিকাদার ইয়ানুর রহমান বিপ্লব মোল্লা জানান, কোমেনের কারণে তাদের কাজ দুই দিন বন্ধ ছিল। এখন তারা রাতদিন কাজ করছে। এ ব্যাপারে বরিশাল বিআইডব্লিটিএ’র নির্বাহী প্রকৌশলী শাহ নেওয়াজ কবির বলেন, খুব দ্রুত ফেরি চালুর আশ্বাস দেন।
×