ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সমীকরণের ট্রেন্ট ব্রিজ টেস্ট শুরু আজ

উজ্জীবিত ইংল্যান্ড ॥ কোণঠাসা অস্ট্রেলিয়া

প্রকাশিত: ০৪:৩১, ৬ আগস্ট ২০১৫

উজ্জীবিত ইংল্যান্ড ॥ কোণঠাসা অস্ট্রেলিয়া

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ কে ভেবেছিল তিন ম্যাচে এভাবে পাল্টে যাবে এ্যাশেজের দৃশ্যপট? ঐতিহ্যের লড়াইয়ে সারাজীবন অস্ট্রেলিয়ানরা মাঠের বাইরে প্রতিপক্ষের মন নিয়েও কম খেলা করেনি, সেই তারাই এবার মানসিক অত্যাচারের শিকার! খেলোয়াড়, অধিনায়ক, কোচ, ড্রেসিং রুম, হোটেল কক্ষের কর্মকর্তাÑ আজ থেকে শুরু চতুর্থ টেস্টে অসি শিবির ভুগছে চাপা আতঙ্কে। এক ম্যাচ আগেই ২-১এ পিছিয়ে থাকা সিরিজ খোয়াতে না চাইলে জিততেই হবে ওয়ানডের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের। ইংলিশরা যেখানে ফুরফুরে মেজাজে, সেখানে অতিথি অসিদের মাথার ওপর রাজ্যের কালো মেঘ। স্বাগতিক ইংল্যান্ডের উৎসব, না চিরায়ত দৃঢ় মনোবলের অধিকারী অস্ট্রেলিয়ার ঘুরে দাঁড়ানো? এই প্রশ্ন সামনে রেখে শুরু উত্তেজনার ট্রেন্ট ব্রিজ টেস্ট। ভিন্ন প্রেক্ষাপটে শুরু হয়েছিল এবারের এ্যাশেজ। এক দিকে গতবার এ্যাশেজে প্রতিপক্ষকে হোয়াইটয়াশ করার পর ওয়ানডের বিশ্বকাপ পুনরুদ্ধার করে আকাশে উড়তে থাকা অস্ট্রেলিয়া, অন্যদিকে মাঠ ও মাঠের বাইরে নিজেদের হারিয়ে খোঁজা ইংল্যান্ড। যেখানে নিশ্চিত ফেবারিট ছিল অসিরাই। কিন্তু ঐতিহ্যের সিরিজ প্রথম থেকেই উপহার দেয় নাটকীয়তা। অপ্রত্যাশিতভাবে কার্ডিফের প্রথম টেস্ট জিতে (১৬৯ রানে) এগিয়ে যায় এ্যালিস্টার কুকের ইংল্যান্ড। লর্ডসের দ্বিতীয় ম্যাচেই আবার রেকর্ড ৪০৫ রানের জয়ে প্রবল বিক্রমে সমতা ফেরায় অসিরা! স্টিভ ওয়াহ, শেন ওয়ার্ন থেকে শুরু করে অনেকেই বলেছিলেন, ঘুরে দাঁড়ানো খুনে অসিদের হাত থেকে আর রক্ষা পাবে না কুকরা। অস্ট্রেলীয় মানসিকতার ইঙ্গিত দিয়েই এমনটা অনুমান করেছিলেন তারা। কিন্তু এজবাস্টনে সফরকারীদের হারিয়ে কেবল সিরিজে ২-১এ এগিয়েই যায়নি ইংলিশরা, ক্লার্কদের স্রেফ উড়িয়ে দেয় কুক বাহিনী। তুলে নেয় ৮ উইকেটের বিশাল জয়। মূলত ব্যাটিং ব্যর্থতাই ডোবায় ওয়ানডের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের। নেতৃত্বের পাশাপাশি ব্যাট হাতে কঠিন প্রশ্নের সম্মুখীন ক্লার্ক। তিন টেস্টের ছয় ও একটি প্রস্তুতি ম্যাচ মিলিয়ে আট ইনিংসে এক হাফসেঞ্চুরির ইনিংসও নেই তার! ব্যাটিং ব্যর্থতায় ক্লার্ককে তুলোধোনা করে ছাড়ছে অস্ট্রেলিয়ান মিডিয়া। চাঙ্গা হতে তাকে কিছুদিনের জন্য বিশ্রামে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন অনেকে। অনেকে আবার ক্লার্ক-যুগের শেষ দেখছেন। ট্রেন্ট ব্রিজে হেরে সিরিজ খোয়ালে হয়ত নেতৃত্বটাই হারাতে হবে। কিন্তু বিশ্রাম বা অবসর দুটিকেই নাকচ করে দিয়ে মাঠেই জবাব দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ক্লার্ক। আগের ম্যাচে অপ্রত্যাশিতভাবে অভিজ্ঞ ব্র্যাড হ্যাডিনের বাদ পড়া নিয়েও রয়েছে বিতর্ক। সময় খারাপ গেলে যা হয়, ফর্মহীনতায় ভোগা অলরাউন্ডার শেন ওয়াটসনের বাইরে রেখেও লাভ হয়নি, তাই এই ম্যাচে আবার ফেরানো হতে পারে তাকে। এই অবস্থায় কঠিন এই ম্যাচে কৌতূহল থাকছে সফরকারীদের একাদশ নিয়ে। তবে স্বস্তি বোলিংয়ে ভাল অবস্থায় অতিথিরা। শীর্ষ ছয় উইকেট শিকারির চারজনই অস্ট্রেলিয়ার। ১৪ উইকেট নিয়ে সবার ওপরে হ্যাজলউড, ১২টি করে শিকার নাথান লেয়ন আর মিচেল স্টার্কের। অন্যদিকে স্বাগতিকরা যে ফুরফুরে মেজাজে তার বড় প্রমাণ তাদের চিন্তাতেই। ফর্মে না থাকার পরও উইনিং কম্বিনেশন ধরে রাখতে ওপেনার এ্যাডাম লিথকে আরও একবার সুযোগ দিতে চান ইংলিশ কর্তারা। কুকের বড় চিন্তা জেমস এ্যান্ডারসনের অনুপস্থিতি। স্ট্রেইন ইনজুরির জন্য সিরিজ শেষ হয়ে গেছে স্বাগতিকদের পেস আক্রমণের দায়িত্বে থাকা দ্রুতগতির এই বোলারের। পরিবর্তে আজ দেখা যেতে পারে মার্ক উড অথবা লাইম প্লাঙ্কেটকে। তবে এ্যান্ডারসনের না থাকাটা বড় সমস্যা হবে বলে মনে করেন না বল হাতে তারই সঙ্গী স্টুয়ার্ড ব্রড। ‘ইনজুরির ওপর কারও হাত নেই। স্টিভেন ফিন ও মঈন চমৎকার বোলিং করছে। গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচে আমি নিজে আরও ভাল করতে চাই। চতুর্থ পেসার বেন স্টোকসও কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে। সুতরাং আমি বোলিং নিয়ে খুব বেশি আতঙ্কিত নই।’ বলেন ব্রড। তবে অসিদের চিরায়ত লড়াকু মানসিকতাকেই ভয় তার। ‘মাঠে আমরা একেবারের ঠিকঠাক আছি, ওদের লড়াকু মানসিকতা নিয়েই যা ভয়!’
×