ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

রাজধানীতে বিদ্যুতস্পৃষ্ট হয়ে ৩ জনের মৃত্যু, কিশোরীর আত্মহত্যা

প্রকাশিত: ০৬:১৩, ৮ আগস্ট ২০১৫

রাজধানীতে বিদ্যুতস্পৃষ্ট হয়ে ৩ জনের মৃত্যু, কিশোরীর আত্মহত্যা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীতে পৃথকস্থানে বিদ্যুতস্পৃষ্ট হয়ে এক গৃহবধূসহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। পল্লবীতে এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ নিহতের স্বামী সাব্বিরকে আটক করা হয়েছে। এদিকে মায়ের সঙ্গে অভিমান করে দারুস সালামে এক কিশোরী আত্মহত্যা করেছে। স্থানীয় সূত্র জানায়, শুক্রবার সকালে খিলগাঁও থানাধীন পশ্চিম নন্দীপাড়ার পানির পাম্পের কাছে একটি বাড়ির সামনে বিদ্যুতের ছেঁড়া তার হাত দিয়ে সরাতে গিয়ে বিদ্যুতস্পৃষ্ট হয়ে রোকসানা আক্তার নিশি (২৮) নামে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। নিহতের স্বামীর নাম জিল্লুর রহমান। নিহতের স্বামী জিল্লুর রহমান জানান, সকাল ১০টার দিকে তাদের বাড়ির সামনে বিদ্যুতের তার পড়েছিল। এ সময় তার স্ত্রী নিশি ওই তার হাত দিয়ে সরাতে গিয়ে বিদ্যুতস্পৃষ্ট হন। পরে তিনি তাকে দ্রুত উদ্ধার করে সকাল পৌনে ১১টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে জরুরী বিভাগে আনেন। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এদিকে একই সময়ে কামরাঙ্গীরচর মাতব্বর বাজার এলাকায় একটি নির্মাণাধীন পাঁচতলা ভবনের টাইলসের কাজ করার সময় মেশিনের ছেঁড়া বিদ্যুতের তারে বিদ্যুতস্পৃষ্ট হয়ে শওকত আলী (২৩) নামে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। নিহতের গ্রামের বাড়ি বরিশাল জেলার চাঁদপুরে। নিহতের সহকর্মী আক্কাস আলী জানান, সকাল ১০টায় কামরাঙ্গীরচর থানার মাতব্বর বাজার এলাকায় আনোয়ার হাজীর নির্মাণাধীন বাড়ির পঞ্চম তলায় টাইলসের কাজ করছিলেন শওকত। এক পর্যায়ে টাইলস কাটা মেশিনের প্লাগ থেকে বিদ্যুতস্পৃষ্ট হন শওকত। পরে শওকতকে উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালে জরুরী বিভাগে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। অন্যদিকে, এদিন সকাল ১১টার দিকে পুরানা পল্টন কালভার্ট রোডের ফাহিম এন্টারপ্রাইজ নামের একটি দোকানে মিটারের বিদ্যুতস্পৃষ্ট হয়ে উজ্জ্বল হোসেন (৪০) নামে এক দোকান কর্মচারীর মৃত্যু হয়েছে। নিহতের গ্রামের বাড়ি নোয়াখালী জেলায়। তিনি মতিঝিল আরামবাগ এলাকায় ভাড়া থাকত। দোকানের মালিক ফজলুল হক জানান, ফাহিম এন্টারপ্রাইজটি জীবন পানির ডিস্ট্রিবিউটর অফিস। সকাল ১১টায় কর্মচারী উজ্জ্বল দোকান পরিষ্কার করতে গেলে মূল মিটারের সঙ্গে বিদ্যুতস্পৃষ্ট হয়। পরে উজ্জ্বলকে উদ্ধার করে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঢামেক হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই সেন্টু চন্দ্র দাস জানান, খবর পেয়ে পুলিশ এই তিনটি লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক মর্গে পাঠায়। পল্লবীতে গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু ॥ শুক্রবার ভোরেরদিকে পল্লবীতে এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ওই থানাধীন ডুয়েট প্লট এলাকার ১২/ডি ব্লকের ২০/১ নম্বর রোডের ২৪ নম্বর ভবনের একটি ফ্ল্যাটের শয়নকক্ষের বিছানা থেকে নূরজাহান (২০) নামের গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় নিহতের স্বামী সাব্বিরকে (২৭) আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায়। পরে পুলিশ গৃহবধূ নূর জাহানের লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক মর্গে পাঠায়। নিহতের স্বামী সাব্বির পুলিশকে জানায়, পারিবারিক কলহের জের ধরে স্ত্রী নূরজাহান ঘরের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। পরে সেখানে থেকে নামিয়ে তাকে বিছানায় রাখা হয়। তবে পুলিশ বলেছেন, নূরজাহানের মৃত্যুর ঘটনা যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। তিনি সিলিং ফ্যান থেকে নামিয়ে বিছানায় রাখেন। পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দাদন ফকির জানান, গৃহবধূর নূরজাহানের মৃত্যু ঘটনা রহস্যজনক। বিষয়টি সন্দেহজনক হওয়ায় তার স্বামী সাব্বিরকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়। তিনি জানান, তদন্ত চলছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে আসল ঘটনা জানা যাবে। কিশোরীর আত্মহত্যা ॥ বৃহস্পতিবিার গভীররাতে মায়ের সঙ্গে অভিমান করে দারুস সালাম থানাধীন সেকেন্ড কলোনি বাবুল হাওলাদারের বাড়ির একটি কক্ষে সুরভী (১৩) নামে এক কিশোরী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। খবর পেয়ে পুলিশ ওই বাড়ি থেকে তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক মর্গে পাঠায়। নিহত সুরভীর বাবার নাম নজরুল ইসলাম মাসুদ। মায়ের নাম মনোয়ারা বেগম। চার বোনের মধ্যে সুরভী ছিল সেজো। নিহতের মা মনোয়ারা বেগম জানান, সেকেন্ড কলোনির ৫৬/এ/এ নম্বর বাড়িতে একটা রুম ভাড়া নিয়া সুরভী আর ছোট মেয়ে লিজাকে নিয়ে তারা থাকতেন। বড় দুই মেয়ের বিয়ে হওয়ায় তারা আলাদা থাকতেন। সুরভীর বাবা মাঝে মধ্যে ভাড়ায় প্রাইভেট গাড়ি চালান। আমি এক সময় কাপড়ের ব্যবসা করতাম। বয়সের কারণে এখন কাজ করতে পারি না। তিনি জানান, সংসারের খরচ চালাতে গত সপ্তাহে সুরভীকে স্থানীয় একটি গার্মেন্টসে কাজ করতে বলেছিলাম। ভাই আমার কোন উপায় ছিল না। তাই মাইয়ারে কাজে দিতে চাইসিলাম। এতে মেয়ে সুরভী আমার ওপর অভিমান কইরা মাইয়াটা গলায় ফাঁস নিসে। তিনি জানান, আমাগো বাসা থেইকা বাবুল হাওলাদার সাহেবের বাসায় যাইতে পাঁচ মিনিট লাগে।
×