ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ট্রেন্ট ব্রিজ টেস্টের প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়া ৬ রানে অলআউট হওয়ায় বিস্মিত-ক্ষুব্ধ রিকি পন্টিং, গ্লেন ম্যাকগ্রা ও শেন ওয়ার্নের মতো সাবেক তারকা

এরপরও ঘুরে দাঁড়াতে চান ক্লার্ক!

প্রকাশিত: ০৬:২৭, ৮ আগস্ট ২০১৫

এরপরও ঘুরে দাঁড়াতে চান ক্লার্ক!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ট্রেন্ট ব্রিজ টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৬০ রানে অলআউট অস্ট্রেলিয়া। ক্রিকেটে ‘টক অব দ্য ওয়ার্ল্ড’- এখন এটিই। ১৮.৩ ওভারে কি করে গুটিয়ে গেল ওয়ানডের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা? ইনিংসে দুই অঙ্কের রান করতে পেরেছেন কেবল দুই ব্যাটসম্যান। সর্বোচ্চ ১৩ আট নম্বরে নামা মিচেল জনসনের। জবাবে ৪ উইকেটে ২৭৪ রান করে প্রথম দিনেই ২১৪ রানে এগিয়ে স্বাগতিক ইংল্যান্ড। তবু আশায় ক্লার্ক, অস্ট্রেলিয়ার ম্যাচে ফেরার সুযোগ রয়েছে বলেও বিশ্বাস সফরকারী অধিনায়কের। পাশাপাশি নটিংহামের ট্রেন্ট ব্রিজে শুরুতে ব্যাটিং করাটা তার ক্যারিয়ারের অন্যতম কঠিন কাজ ছিল বলেও মন্তব্য করেছেন ক্লার্ক। দলের এই নাজুক অবস্থায় উষ্মা প্রকাশ করেছেন রিকিং পন্টি-গ্লেন ম্যাকগ্রার মতো সাবেক গ্রেটরা। ‘এটা স্বীকার করতেই হবে, এটি আমার দেখা অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম বাজে ইনিংস। তবে হাল ছাড়ছি না, কারণ জীবন ও মৃত্যুর মাঝে একমাত্র সত্য হচ্ছে সংগ্রাম, আমি সেটাই করতে চাই।’ লজ্জার প্রথম দিন শেষে সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, নেতৃত্বে-ব্যাটিংয়ে চোখে দুঃস্বপ্ন দেখা ক্লার্ক। এরপর অধিনায়ক আরও যোগ করেন, ‘এমন পারফর্মেন্স খুবই হতাশাজনক। তবে মাত্র তো একটা দিন গেল, আমরা লড়াইয়ের মানসিকতা হারিয়ে ফেলিনি। এখনও এ্যাশেজ বাঁচাতে পরি!’ যতই ফিরে আসার স্বপ্ন দেখুন, প্রশ্ন বিশ্বের অন্যতমসেরা ব্যাটিংলাইনে এমন ধস নামল কিভাবে? উত্তরে ফুটে ওঠে ক্লার্কের অসহায়ত্ব ‘উইকেটে থিতু হওয়ার জন্য ব্যাটসম্যানরা সর্বাত্মক চেষ্টাই করেছে। কেবল প্রতিপক্ষের আক্রমণাত্মক বোলিংয়ের জন্যই যে আমরা এভাবে অলআউট হয়েছি, এমনটি মনে করি না। আমাদের শট সিলেকশন ভুল ছিল। ৬০ রানে গুটিয়ে যাওয়া কোনভাবেই কাক্সিক্ষত নয়। আমরা এখন কেবল বাঁচার পথ খুঁজতে পারি!’ বাঁচার পথ- বাক্যটা একেবারে মানানসই। কারণ ২-১এ পিছিয়ে থাকার পর সিরিজ বাঁচিয়ে রাখতে চতুর্থ টেস্টে জিততেই হবে- কঠিন সমীকরণের সেই ম্যাচের প্রথম ইনিংসে এই অবস্থা। এজবাস্টনে বড় হারের পরই হৈচৈ পড়ে যায়। ব্যাট হাতে রানে নেই ক্লার্ক। শেষ ছয় ইনিংসে ক্লার্কের ব্যাট থেকে এসেছে মোটে ৯৪ রান, গড় ১৯! অনেকেই তার ক্রিকেট ছেড়ে দিয়ে অবসরে সোচ্চার হয়েছিলেন। তবে সেটি উড়িয়ে দিয়ে, অনেকটা ক্ষুব্ধ কণ্ঠে ক্লার্ক বলেছিলেন, ‘লিখে নিন, আমি এ্যাশেজের পরও অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলব!’ সময়টা তার জন্য কতটা কঠিন, বক্তব্যে ফুটে উঠেছিল সেটিও। তারপরই এই ভরাডুবি। জনসনের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১০ রান করে ‘রেকর্ড ম্যান’ স্টুয়ার্ড ব্রডের (৮/১৫) শিকারে পরিণত হন ক্লার্ক। মাত্রই চার মাস আগে যে ক্লার্ক অস্ট্রেলিয়াকে বিশ্বকাপ উপহার দিয়ে জাতীয় বীরে পরিণত হন, লজ্জার ব্যাটিং ব্যর্থতার পর সেই তারই মু-ুপাত চলছে। ক্ষুব্ধ শেন ওয়ার্ন স্কাই স্পোর্টসের দেয়া কমেন্ট্রিতে বলেন, ‘টেস্ট ক্রিকেট টেকনিকের খেলা। অথচ ব্রড দেখিয়ে দিল, অস্ট্রেলীয় ব্যাটসম্যানদের টেকনিক বলে কিছু নেই! এত গাদা গাদা ওয়ানডে ও টি২০ ম্যাচ খেললে এমনটা তো হবেই!!’ আরেক সাবেক তারকা গ্লেন ম্যাকগ্রাও বিষয়টা মেনে নিতে পারছেন না। তারকা বলার ম্যাকগ্রা তার টুইটারে লেখেন, ‘আমার দেখা অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেটে সবচেয়ে খারাপ দিন এটাই। কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না।’ আর ক্লার্ক যার কাছ থেকে নেতৃত্ব বুঝে নিয়েছেন সেই সাবেক অধিনায়ক রিকি পন্টিং মনে করছেন, ট্রেন্ট ব্রিজ টেস্ট নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার কোন গেম প্ল্যানই ছিল না। উত্তরসূরিদের জঘন্য ব্যাটিং দেখে মেজাজ বিগড়ে যাওয়া গ্রেট বলেন, ‘কতটা পজেটিভ থাকতে হবে, তা নিয়ে অতটা নেশনের কী ছিল? বাস্তবে তো দেখা গেল ওদের কোন গেম প্ল্যানই নেই। এজবাস্টনে ব্যর্থতার পর কিছু শিখেছে বলে মনে হয় না।’ ২-১এ পিছিয়ে পড়ার পরই অস্টেলীয় মিডিয়া ক্লার্ককে তেড়ে ফুড়ে খাচ্ছিল। নিন্দুকেরা এবার আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবেন নিশ্চই। পরিস্থিতি যা, তাতে এক ম্যাচ বাকি থাকতে সিরিজ খোয়ানোর পর কী যে হবে, সেটিই দেখার !
×