ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

জেলে পাঠানো হয়েছে

মুফতি ইজহারের কাছ থেকে তথ্য বের করতে পারেনি পুলিশ

প্রকাশিত: ০৬:১১, ৯ আগস্ট ২০১৫

মুফতি ইজহারের কাছ থেকে তথ্য বের করতে পারেনি পুলিশ

মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রামের লালখান বাজারে জামেয়াতুল উলুম আল ইসলামিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও জঙ্গী প্রশিক্ষক মুফতি ইজহারুল ইসলামকে শনিবার বিকেলে চট্টগ্রাম আদালতে হাজির করা হয়। আদালত বিস্ফোরক আইনের মামলায় ওয়ারেন্টভুক্ত এ আসামিকে জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছে। আদালতে হাজির করার পূর্বে ইজহারকে সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনারের (অপরাধ ও প্রশাসন) দফতরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। দেড় ঘণ্টাব্যাপী জিজ্ঞাসাবাদে মুফতি ইজহারের কাছ থেকে নতুন কোন তথ্য আদায় করতে পারেনি বলে পুলিশের এক উর্ধতন কর্মকর্তার পক্ষ থেকে জানা গেছে। প্রশ্ন উঠেছে, জঙ্গী প্রশিক্ষক ও দেশব্যাপী বোমা হামলার অন্যতম নীলনক্সাকারী এ আসামিকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কোন রিমান্ড আবেদন করা হয়নি। ডিবির দফতর থেকে আদালতে হাজির করার সময় মুফতি ইজহারকে বুলেট প্রুফ জ্যাকেট ও মাথায় হেলমেট পরানো হলেও গাড়ি থেকে নামানোর সময় হেলমেট খুলে ফেলা হয়। অনেকটা দায়সারা জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মুফতি ইজহারকে আদালতে হাজির করা হয়েছে বলে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের একটি সূত্রে জানা গেছে, মুফতি ইজহারকে গ্রেফতারের পর তার পক্ষ থেকে কেউ তার সঙ্গে দেখা করতে আসেনি। শুক্রবার রাতে তাকে কোতোয়ালি থানা হেফাজতে রাখা হয়েছিল। সকালে তাকে ডিবি অফিসে নিয়ে আসা হয়। বেলা এগারোটায় সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) দেবদাস ভট্টাচার্যের কক্ষে প্রায় দেড় ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এ সময় মহানগর গোযেন্দা বিভাগের ডিসি কুসুম দেওয়ান, সিটি এসবির ডিসি ও নগর বিশেষ শাখার ডিসি এডিসি এসএম তানভীর আরাফাত ওই কক্ষে ছিলেন। এরপর ইজহারকে আদালতে নেয়ার জন্য তৈরি করা হলেও পরবর্তীতে তা আবার পিছিয়ে দেয়া হয়। অবশেষে বিকেল ৩টার পর তাকে একটি মাইক্রোযোগে চট্টগ্রাম আদালতে নেয়া হয়। এ সময়ও মুফতি ইজহারের সঙ্গে দেখা করতে পরিবারের কেউ আসেননি। মাইক্রোবাসে তোলার প্রাক্কালে মুফতি ইজহারকে বুলেট প্রুফ জ্যাকেট ও মাথায় হেলমেট পরানো হয়। নিরাপত্তার খাতিরে এ হেলমেট ও জ্যাকেট পরানো হলেও আদালতে গিয়ে হেলমেট খুলে ফেলা হয়। মুফতি ইজহারকে আদালতে নেয়ার সময় ওই গাড়িতে খুলশী থানার এসআই আলমগীর হোসেনও ছিলেন। বিস্ফোরক আইনের মামলায় ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি হিসেবে মুফতি ইজহারকে গ্রেফতার করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। গত শুক্রবার দুপুরে তাকে গ্রেফতারের পর ডিবি অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। রাতে তাকে কোতোয়ালি থানা হেফাজতে রাখা হয়েছিল। সকালে সেখান থেকে ডিবি কার্যালয়ে আনার সময় এসআই আলমগীর সঙ্গে ছিলেন। এ বিষয়ে এসআই আলমগীর জনকণ্ঠকে জানিয়েছেন, মুফতি ইজহারকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে কোন ধরনের রিমান্ড আবেদন করা হয়নি। বিস্ফোরক আইনের মামলায় তাকে ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি হিসেবে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়। মুফতি ইজহারুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদ প্রসঙ্গে মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের এডিসি তানভীর আরাফাত জনকণ্ঠকে জানিয়েছেন, ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি হিসেবে তাকে গ্রেফতারের পর আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। জঙ্গী হামলা ও বোমা তৈরি প্রসঙ্গে ইজহারের কাছ থেকে কোন ধরনের তথ্য আদায় হয়েছে কিনাÑ এমন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তেমন কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। ব্যাপক তথ্য আদায়ের উদ্দেশ্যে ইজহারকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করা হয়েছে কিনা এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তাকে জিজ্ঞাসাবাদে কোন রিমান্ড আবেদন করা হয়নি। ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি হিসেবে আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ৭ অক্টোবর লালখান বাজার মাদ্রাসায় বোমা বিস্ফোরণের পর পুলিশ মাদ্রাসায় তল্লাশি চালিয়ে চারটি তাজা গ্রেনেড, ও বিপুল পরিমাণ গ্রেনেড তৈরির সরঞ্জাম, ১৮ বোতল পিকরিক এ্যাসিড উদ্ধার করে। এ ঘটনায় মুফতি ইজহার, তার ছেলে হারুন ইজহারসহ কয়েকজনকে আসামি করে ৩টি পৃথক মামলা দায়ের হয় খুলশী থানায়। এ ঘটনায় তিনজন বোমার কারিগর ও বেশ কয়েকজন ছাত্র আহত হয়েছিল।
×