ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নজরদারিতে ৬ কোম্পানি

প্রকাশিত: ০৬:৪৪, ৯ আগস্ট ২০১৫

নজরদারিতে ৬ কোম্পানি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ছয় কোম্পানির শেয়ারকে ঘিরে সক্রিয় রয়েছে কারসাজিকারীরা। এর জের ধরে এ কোম্পানিগুলোর শেয়ারদর কোন কারণ ছাড়াই অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে। আর মূল্য সংবেদনশীল তথ্য নিয়ে গুজব ছড়ানোর মাধ্যমে এ কোম্পানিগুলোর শেয়ারদর বাড়ানো হচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এইদিকে অস্বাভাবিকহারে শেয়ার দর বাড়ার কারণে এই ছয় কোম্পানি পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নজরে রয়েছে বলে কমিশনের একটি সূত্র জানিয়েছে। এই ৬ কোম্পানির মধ্যে আলহাজ টেক্সটাইলের শেয়ারদর ৩৬ দশমিক ১৭ শতাংশ, জেমিনি সি ফুডের শেয়ারদর ৪৮ দশমিক ৪ শতাংশ, ন্যাশনাল পলিমারের শেয়ারদর ৩৯ দশমিক ২৫ শতাংশ, বিচ হ্যাচারির শেয়ারদর ২৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ, আনোয়ার গ্যালভানাইজিং এর শেয়ার দর ২৫ শতাংশ এবং রেনউইক যজ্ঞেশ্বরের শেয়ারদর ১৪ দশমিক ২৮ শতাংশ বেড়েছে। আলহাজ টেক্সটাইল ॥ বস্ত্র খাতের জুন ক্লোজিং ১৫ কোটি ২৩ লাখ টাকা মূলধনী এ কোম্পানিটির শেয়ারদর জুলাই মাসের ১২ তারিখে ছিল ৮৯ দশমিক ০৫ টাকা। ৫ আগস্ট লেনদেন শেষে এ কোম্পানিটির শেয়ারদর হয়েছে ১২১ দশমিক ২ টাকা। অর্থাৎ মাত্র ১৪ কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ৩৬ দশমিক ১৭ শতাংশ। বর্তমানে কোম্পানিটির পিই রেশিও ১১৩ দশমিক ৬৩। ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরের ৯ মাসে কোম্পানিটির কর পরিশোধের পর নিট মুনাফা হয়েছে এক কোটি ২২ লাখ টাকা এবং শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে দশমিক ৮০ টাকা। বর্তমানে কোম্পানিটি ‘এ’ ক্যাটাগরিতে রয়েছে। এর আগে চলতি বছরে ডিএসই থেকে দুইবার অস্বাভাবিক দর বাড়ার কারণ জানতে চাওয়া হয়েছে। কিন্তু এ বিষয়ে কোম্পানির কাছে কোন মূল্য সংবেদনশীল তথ্য নেই বলে জানানো হয়। জেমিনি সি ফুড ॥ খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের সেপ্টেম্বর ক্লোজিং এক কোটি ১০ লাখ টাকা মূলধনী এ কোম্পানিটির শেয়ারদর জুলাই মাসের ২৩ তারিখে ছিল ২৫০ টাকা। লেনদেন শেষে এ কোম্পানিটির শেয়ারদর হয়েছে ৩৭১ টাকা। অর্থাৎ মাত্র ৯ কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ৪৮ দশমিক ৪০ শতাংশ। ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরের ৯ মাসে কোম্পানিটির কর পরিশোধের পর নিট মুনাফা হয়েছে ৯৭ লাখ টাকা এবং শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ৮ দশমিক ৮৩ টাকা। ৩০ জুন ২০১৫ পর্যন্ত কোম্পানিটি ৬৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা সমন্বিত লোকসানে রয়েছে। এছাড়া এখন পর্যন্ত কোম্পানিটির পুঞ্জীভূত লোকসান এক কোটি ৫৭ লাখ টাকা। কোম্পানিটি বর্তমানে ‘বি’ ক্যাটাগরিতে রয়েছে। এর আগে চলতি বছরে ডিএসই থেকে দুইবার অস্বাভাবিক দর বাড়ার কারণ জানতে চাওয়া হয়েছে। কিন্তু এ বিষয়ে কোম্পানির কাছে কোন মূল্য সংবেদনশীল তথ্য নেই বলে জানানো হয়। ন্যাশনাল পলিমার ॥ প্রকৌশল খাতের জুন ক্লোজিং ১৪ কোটি ৪৩ লাখ টাকা মূলধনী এ কোম্পানিটির শেয়ারদর জুলাই মাসের ৯ তারিখে ছিল ৮১ টাকা। ৫ আগস্ট লেনদেন শেষে এ কোম্পানিটির শেয়ারদর হয়েছে ১১২ দশমিক ৮০ টাকা। অর্থাৎ মাত্র ১৫ কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ৩৯ দশমিক ২৫ শতাংশ। ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরের ৯ মাসে কোম্পানিটির কর পরিশোধের পর নিট মুনাফা হয়েছে ৩ কোটি ৬৩ লাখ টাকা এবং শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ২ দশমিক ৫২ টাকা। কোম্পানিটি বর্তমানে ‘এ’ ক্যাটাগরিতে রয়েছে। এর আগে চলতি বছরে ডিএসই থেকে অস্বাভাবিক দর বাড়ার কারণ জানতে চাওয়া হয়েছে। কিন্তু এ বিষয়ে কোম্পানির কাছে কোন মূল্য সংবেদনশীল তথ্য নেই বলে জানানো হয়। বিচ হ্যাচারি ॥ খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের ডিসেম্বর ক্লোজিং ৩৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা মূলধনী এ কোম্পানিটির শেয়ারদর আগস্ট মাসের ২ তারিখে ছিল ১৮ টাকা। ৫ আগস্ট লেনদেন শেষে এ কোম্পানিটির শেয়ারদর হয়েছে ২৩ দশমিক ১০ টাকা। অর্থাৎ মাত্র ৩ কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ২৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ। অথচ ডিসেম্বর ক্লোজিং এ কোম্পানিটি এখনও ডিভিডেন্ড নির্ধারণী বোর্ড মিটিং করতে পারেনি। ২০১৪ অর্থবছরের ৯ মাসে কোম্পানিটির কর পরিশোধের পর নিট মুনাফা হয়েছে ৩ কোটি ৮২ লাখ টাকা এবং শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে দশমিক ৯৭ টাকা। কোম্পানিটি বর্তমানে ‘এ’ ক্যাটাগরিতে রয়েছে। এর আগে চলতি বছরে ডিএসই থেকে অস্বাভাবিক দর বাড়ার কারণ জানতে চাওয়া হয়েছে। কিন্তু এ বিষয়ে কোম্পানির কাছে কোন মূল্য সংবেদনশীল তথ্য নেই বলে জানানো হয়। রেনউইক যজ্ঞেশ্বর ॥ প্রকৌশল খাতের জুন ক্লোজিং দুই কোটি টাকা মূলধনী রাষ্ট্রায়ত্ত এ কোম্পানিটির শেয়ারদর জুলাই মাসের ২৯ তারিখে ছিল ২৪২ টাকা। ৫ আগস্ট লেনদেন শেষে এ কোম্পানিটির শেয়ারদর হয়েছে ২৭৬ দশমিক ৮০ টাকা। অর্থাৎ মাত্র ৫ কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ১৪ দশমিক ৩৮ শতাংশ। ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরের ৯ মাসে কোম্পানিটির কর পরিশোধের পর নিট মুনাফা হয়েছে ৫৮ লাখ টাকা এবং শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ২ দশমিক ৯৩ টাকা। ৩১ মার্চ ২০১৫ পর্যন্ত কোম্পানিটি ৭ কোটি ৭৪ লাখ টাকা সমন্বিত লোকসানে রয়েছে এবং শেয়ারহোল্ডার ইক্যুইটি (৫৭ দশমিক ৪২) অর্থাৎ নেগেটিভ পর্যায়ে রয়েছে। এছাড়া এখন পর্যন্ত কোম্পানিটির পুঞ্জীভূত লোকসান ৮ কোটি ৩০ লাখ টাকা। এবং কোম্পানিটির বর্তমান পিই রেশিও ৭০ দশমিক ৮৫। কোম্পানিটি বর্তমানে ‘এ’ ক্যাটাগরিতে রয়েছে। আনোয়ার গ্যালভানাইজিং ॥ প্রকৌশল খাতের জুন ক্লোজিং ১৩ কোটি ২০ লাখ টাকা মূলধনী এ কোম্পানিটির শেয়ারদর জুলাই মাসের ১৩ তারিখে ছিল ৩৮ টাকা। ৫ আগস্ট লেনদেন শেষে এ কোম্পানিটির শেয়ারদর হয়েছে ৪৭ দশমিক ৫০ টাকা। অর্থাৎ মাত্র ১৩ কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ২৫ শতাংশ। আর গত ৫২ সপ্তাহে কোম্পানিটির শেয়ার এখন সর্বোচ্চ দরে রয়েছে। বর্তমানে কোম্পানিটির পিই রেশিও ৬৯ দশমিক ৮৫। ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরের ৯ মাসে কোম্পানিটির কর পরিশোধের পর নিট মুনাফা হয়েছে ৬৭ লাখ টাকা এবং শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে দশমিক ৫১ টাকা। ৩১ মার্চ ২০১৫ পর্যন্ত কোম্পানিটি ৫ কোটি ২৩ লাখ টাকা সমন্বিত লোকসানে রয়েছে। এছাড়া এখন পর্যন্ত কোম্পানিটির পুঞ্জীভূত লোকসান ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা। কোম্পানিটি বর্তমানে ‘বি’ ক্যাটাগরিতে রয়েছে।
×