ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

রাষ্ট্রপতিকে হ্যানয়ে লালগালিচা সংবর্ধনা

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ১০ আগস্ট ২০১৫

রাষ্ট্রপতিকে হ্যানয়ে লালগালিচা সংবর্ধনা

বিডিনিউজ ॥ রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ রবিবার ভিয়েতনামে পৌঁছলে বিমানবন্দরে তাঁকে লাল গালিচা সংবর্ধনা দেয়া হয়। ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট ত্রুং তান সাংয়ের আমন্ত্রণে চার দিনের সফরে দেশটির রাজধানী হ্যানয়ে পৌঁছেছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ। রবিবার স্থানীয় সময় দুপুর পৌনে একটায় আবদুল হামিদ হ্যানয়ের নোই বাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছলে ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের চেয়ারম্যান দাও ভিয়েত ট্রুং, ভিয়েতনাম উইমেন এ্যাসোসিয়েশনের ভাইস চেয়ারম্যান বুই থি হোয়া তাকে অভ্যর্থনা জানান। ভিয়েতনামে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোঃ সাহাব উল্লাহ এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত নগুয়েন কুয়াং থুক এ সময় উপস্থিত ছিলেন। বিমানবন্দরে আবদুল হামিদকে লাল গালিচা সংবর্ধনা দেয়া হয়। এ সময় ভিয়েতনামের সশস্ত্র বাহিনীর একটি দল রাষ্ট্রপতিকে ‘স্ট্যাটিক গার্ড’ দেয়। নোই বাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জ ভিয়েতনাম ও বাংলাদেশের পতাকা দিয়ে সাজানো হয়। বিমানবন্দরে রাষ্ট্রপতি ও তার স্ত্রী রাশিদা খানমকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান দুই কিশোরী। বিমানবন্দর থেকে রাষ্ট্রপতিকে মোটর শোভাযাত্রা সহকারে হ্যানয়ের হোটেল শেরাটনে আনা হয়। দুই দেশের পতাকা তুলে হোটেলের কর্মীরা রাষ্ট্রপতিকে অভ্যর্থনা জানান। সফরকালে আবদুল হামিদ এ হোটেলে থাকবেন। হ্যানয়ের নোই বাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদকে স্বাগত জানান ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের চেয়ারম্যান দাও ভিয়েত ট্রুং। এর আগে থাইলান্ডের স্থানীয় সময় বেলা পৌনে ১১টায় আবদুল হামিদ ব্যাংককের সুবর্ণভূমি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ভিয়েতনাম এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে হ্যানয়ের উদ্দেশে যাত্রা করেন। ভিয়েতনাম সফরের জন্য শুক্রবার সকালে ঢাকা ছাড়েন রাষ্ট্রপতি। পথে ব্যাংককে যাত্রাবিরতি করেন তিনি। সোমবার ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট ত্রুং তান সাংয়ের সঙ্গে আবদুল হামিদের বৈঠকের কর্মসূচী রয়েছে। একই দিন আবদুল হামিদ ত্রুং তান সাংয়ের দেয়া নৈশভোজেও অংশ নেবেন। ওই দিন ভিয়েতনামের প্রধানমন্ত্রী নগুয়েন তান দুংয়ের সঙ্গেও বৈঠক করবেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি। ভিয়েতনামের পার্লামেন্টও পরিদর্শন করবেন বাংলাদেশের সাবেক স্পিকার আবদুল হামিদ। ভিয়েতনামের ন্যাশনাল এ্যাসেম্বলি হাউসের চেয়ারম্যান নগুয়েন সিন হাংয়ের সঙ্গে আবদুল হামিদের সাক্ষাতের কর্মসূচী রয়েছে। ভিয়েতনামের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক, হো-চি-মিন সিটি কমিউনিস্ট পার্টির চেয়ারম্যানের সঙ্গে আবদুল হামিদের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। হো-চি-মিন সিটিতে বসবাসরত বাংলাদেশীদের সঙ্গেও শুভেচ্ছা বিনিময়ের কথা রয়েছে রাষ্ট্রপতির। আগামী ১৩ অগাস্ট আবদুল হামিদের দেশে ফেরার কথা রয়েছে। হো চি মিনের সমাধিতে রাষ্ট্রপতির শ্রদ্ধা ॥ হ্যানয়ে ভিয়েতনামের স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতা হো চি মিনের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। ভিয়েতনামের স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতা হো চি মিনের সমাধিসৌধ এবং ভিয়েতনামের জাতীয় বীর ও শহীদদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে নির্মিত ‘ওয়ার মেমোরিয়ালে’ শ্রদ্ধা জানিয়েছেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ। ভিয়েতনামের স্থানীয় সময় রবিবার বিকেলে রাষ্ট্রপতি ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয়ে দুই স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানান। পরে রাষ্ট্রপতি হো চি মিন স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করেন। ১৯৫৫ সাল থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত চলা ভিয়েতনাম যুদ্ধের শহীদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে হ্যানয়ের ‘বা দিন স্কয়ারে’ ১৯৯৩ সালে ‘ওয়ার মেমোরিয়াল’ প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রথাগত ভিয়েতনামী স্থাপত্যকলায় তৈরি করা হয়েছে এই স্মৃতিসৌধ। স্মৃতিসৌধ দুটিতে আবদুল হামিদ পৌঁছালে সশস্ত্রবাহিনীর বাদক দল যন্ত্রসংগীতের তালে তাঁকে স্বাগত জানান। ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পর সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন রাষ্ট্রপতি। ভিয়েতনামের ‘বাক হো’ (জাতির জনক) হো চি মিনের জন্ম ১৮৯০ সালের ১৯ মে । ১৯৬৯ সালের ২ সেপ্টেম্বর ৭৯ বছর বয়সে মারা যান ‘আংকেল হো’ বলে পরিচিত এই নেতা। হো চি মিন স্মৃতি জাদুঘরে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ভিয়েতনামের স্বাধীনতা সংগ্রাম, হো চি মিনের জীবন ও দর্শন, ভিয়েতনামের ঐতিহ্যের বিভিন্ন প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন। জাদুঘরের পরিদর্শন বইতে স্বাক্ষর করেন আবদুল হামিদ। তিনি লেখেন, ‘কিংবদন্তি বিপ্লবী নেতা হো চি মিনের সমাধি পরিদর্শন আমার জন্য বিশাল সম্মানের। ভিয়েতনামের গৌরবান্বিত স্বাধীনতা সংগ্রাম মহান এই নেতার নেতৃত্বে পরিচালিত হয়েছিল। আমি ভিয়েতনামের উন্নত ভবিষ্যত ও সমৃদ্ধি কামনা করছি, যা তাঁর (হো চি মিন) ভাবনার মূলে ছিল।’
×