ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

অটো চালক ও মালিকদের ১১ দাবি

মহাসড়কে লেন হলে দুর্ঘটনা কমবে শৃঙ্খলাও ফিরবে

প্রকাশিত: ০৬:০০, ১০ আগস্ট ২০১৫

মহাসড়কে লেন হলে দুর্ঘটনা কমবে শৃঙ্খলাও ফিরবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মহাসড়কে তিন চাকার যান চলাচলে সময়সীমা বেঁধে দেয়ার সিদ্ধান্ত একতরফা, অমানবিক ও অগণতান্ত্রিক বলে আখ্যায়িত করেছে অটোরিক্সা ও অটোটেম্পো চালক ও মালিকরা। পাশপাশি মালিক ও যাত্রীদের স্বার্থে ১১ দফা দাবি জানিয়েছে এবং তা দ্রুত বাস্তবায়নে সরকারের কাছে অনুরোধ করা হয়েছে। রবিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ অটোরিক্সা-অটোটেম্পো সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক মোঃ গোলাম ফারুক এ সব দাবি জানান। এ ছাড়া তিনি সিএনজি ফিলিং স্টেশনে সময় নির্ধারিত করে দেয়ারও সমালোচনা করেন। গোলাম ফারুখ বলেন, মহাসড়ক সংলগ্ন সিএনজি ফিলিং স্টেশনগুলো থেকে ভোর ৬টা থেকে সকাল ৮টার মধ্যে চালকরা খালি অটোরিক্সা নিয়ে মহাসড়ক সংলগ্ন সিএনজি ফিলিং স্টেশনগুলো থেকে গ্যাস নিতে পারবেন মন্ত্রীর এমন সিদ্ধান্ত কেবল অমানবিকই নয়, অগণতান্ত্রিক বটে। সময়সীমা তুলে দিয়ে মহাসড়কে ‘লেন সিস্টেম’ চালু করার প্রতি গুরুত্ব দেন এই শ্রমিক নেতা। তার মতে, এ রকম একতরফা সিদ্ধান্ত নিলে সমস্যার সমাধান তো হবেই না, বরং সমস্যা বাড়বে। জ্বালানি তেল ও সিএনজি গ্যাস সংগ্রহ করতে হলে মহাসড়কে গাড়ি নিয়ে আসতেই হবে। তাছাড়া এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় যেতে মহাসড়কের বিকল্প নাই। আমরা মনে করি, লেন সিস্টেম চালু করলে দুর্ঘটনা অনেক কমবে এবং গাড়ি চলাচলেও শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। মহাসড়কে অটোরিক্সা-অটোটেম্পো চালক মালিক ও যাত্রীদের স্বার্থে ১১ দফা দাবি তুলে ধরেন গোলাম ফারুক। দাবিগুলো হচ্ছেÑ আলাদা লেন তৈরিসহ মহাসড়কে অটোরিক্সা-অটোটেম্পো চলাচলে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, পুলিশ ও রাজনৈতিক পরিচয়ে চাঁদাবাজি বন্ধ করা, চালকদের নিয়োগপত্র প্রদান, গাড়ি ছিনতাই ও শ্রমিক হত্যা রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ, চেকপোস্টে গাড়ির কাগজপত্র পরীক্ষার নামে পুলিশী নির্যাতন বন্ধ করা। এছাড়া অটোরিক্সা রাখার জন্য স্ট্যান্ডের ব্যবস্থা করা, লাইসেন্স ও গাড়ির কাগজপত্র নিয়ে বিআরটিএ-এর দুর্নীতি হয়রানি বন্ধ করা, অটোরিক্সা-অটোটেম্পো রিকুইজিশনকালে গাড়িচালকদের বেতন দিতে হবে, আঞ্চলিক পরিবহন কমিটিতে অটোরিক্সা-অটোটেম্পো প্রতিনিধি রাখারও দাবি জানান তারা। এর বাইরে মহানগরকোন্দ্রক পরিষদের বাকি দাবি দুটি হলোÑ মহানগরের চালকদের নামে বরাদ্দকৃত পাঁচ হাজার অটোরিক্সা অনিতিবিলম্বে রেজিস্ট্রেশন দিতে হবে, মহানগরের অটোরিক্সা চলাচলে বিশৃঙ্খলা দূর করার জন্য সরকার নির্ধারিত জমা গ্রহণে মালিকদের বাধ্য করার পদেক্ষপ নিতে হবে। সম্মেলনে উপস্থিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া আন্তঃজেলা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মোঃ ফুল মিয়া বলেন, সরকারের অটোরিক্সা-অটোটেম্পোর জন্য আলাদা লেন না করে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া কোনভাবেই ঠিক হয়নি। সরকারের এমন সিদ্ধান্ত তুলে না নিলে শ্রমিক নেতারা কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেনÑ শ্রমিক নেতা মোঃ আবুল হোসেন, মৌলভীবাজার শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি পাভেল মিয়া, গাজীপুর জেলা অটোরিক্সা-অটোটেম্পো চালক মালিক ঐক্য পরিষদের সভাপতি আকরাম হোসেন মন্টুসহ অনেকে। উল্লেখ্য, অটোরিক্সা, টেম্পোসহ কম গতির তিন চাকার যানবাহনকে মহাসড়কে দুর্ঘটনার জন্য দায়ী করে গত ১ অগাস্ট থেকে সারাদেশের এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করে সরকার। এরপর থেকেই চালক-মালিকরা বিভিন্ন জেলায় সড়ক আটকে বিক্ষোভের ঘটনা ঘটছে। অনেক মহাসড়কে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই চলছে তিন চাকার বাহন।
×