ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

শুল্ক ও অশুল্ক বাধা দূর করতে একমত দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধান

বাংলাদেশ-ভিয়েতনাম বাণিজ্য বাড়ানোর প্রত্যয়

প্রকাশিত: ০৬:১১, ১১ আগস্ট ২০১৫

বাংলাদেশ-ভিয়েতনাম বাণিজ্য বাড়ানোর প্রত্যয়

বিডিনিউজ ॥ বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ২০১৬ সালের মধ্যে এক হাজার মিলিয়ন ডলারে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় জানিয়েছেন দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধান। সোমবার ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয়ে এক দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট ত্রুয়ং তান সাং এ বিষয়ে একমত হন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ৭০০ মিলিয়ন ডলারের কম। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ ৫৫ দশমিক ৯৬ মিলিয়ন ডলারের পণ্য ভিয়েতনামে রফতানি করেছে। এর বিপরীতে আমদানি করেছে ৫৮২ দশমিক ২৪ মিলিয়ন ডলারের পণ্য। এই ঘাটতি প্রতিবছরই বাড়ছে। বাণিজ্য বাড়াতে সব ধরনের শুল্ক ও অশুল্ক বাধা দূর করার বিষয়েও একমত পোষণ করেন দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধান। বৈঠকে মাদক ও মানবপাচার রোধ, রাজনৈতিক ও কূটনীতিক পর্যায়ে নীতিনির্ধারণী মতবিনিময় ও উচ্চপর্যায়ের সফর এবং যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের (জেইসি) বৈঠক, বাজার সম্পর্কিত তথ্য ও কৌশল বিনিময় নিয়েও আলোচনা হয় বলে রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মোঃ জয়নাল আবেদীন জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশ বিনিয়োগকারীদের জন্য অত্যন্ত উদারভাবে বিভিন্ন প্রণোদনা দিয়ে থাকে বলে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বৈঠকে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ভিয়েতনামের যে কোন বিনিয়োগকে আমরা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেব এবং এ সংক্রান্ত যে কোন প্রয়োজনকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হবে। দুই দেশের পর্যটন খাতে সহযোগিতা বিনিময়ের সম্ভাবনার কথাও বৈঠকে তুলে ধরেন রাষ্ট্রপতি। বাংলাদেশ যাতে আসিয়ানের সদস্য পদ পায়, সেজন্য ভিয়েতনামের সমর্থন চান তিনি। প্রেস সচিব জানান, ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট ত্রুয়ং তান সাং বাংলাদেশের সঙ্গে তার দেশের সম্পর্কের গুরুত্ব তুলে ধরেন। ২০১২ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিয়েতনাম সফরের কথা স্মরণ করে ত্রুয়ং তান সাং বলেন, ওই সফরের মধ্য দিয়ে দুই দেশের সম্পর্ক আরও এগিয়েছে। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের সফরের মধ্য দিয়ে দুই দেশের সম্পর্ক ‘নতুন উচ্চতায়’ পৌঁছাবে এবং এই সফর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি ‘মাইল ফলক’ হয়ে থাকবে বলেও আশা প্রকাশ করেন ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট। ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নেরও প্রশংসা করেন বলে প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন জানান। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট বলেন, ৩০ বছর আগে তারা যে ‘দই-মাই’ নীতি (সংস্কার কার্যক্রম) নিয়েছিলেন, তা ফলপ্রসূ হয়েছে। তার দেশ ইতোমধ্যে ৬ শতাংশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করছে এবং মাথাপিছু আয় দুই হাজার ২০০ ডলারে উন্নীত হয়েছে। আসিয়ানের সদস্য পদ পেতে বাংলাদশ ভিয়েতনামের সমর্থন পাবে বলেও আশ্বাস দেন দেশটির প্রেসিডেন্ট। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্টকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। অন্যদের মধ্যে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, ভিয়েতনামে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোঃ সাহাব উল্লাহ, বাংলাদেশে ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত নগুয়েন কুয়াং থুকসহ দুই দেশের কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
×