ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বিদায়ের অপেক্ষায় থাকা মাইকেল ক্লার্কও চাইছেন তরুণ ব্যাটসম্যানই হোক অস্ট্রেলিয়ার নতুন অধিনায়ক

সিংহাসনের পথে স্টিভেন স্মিথ

প্রকাশিত: ০৬:৪৭, ১১ আগস্ট ২০১৫

সিংহাসনের পথে স্টিভেন স্মিথ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ কে হচ্ছেন মাইকেল ক্লার্কের উত্তরসূরি? প্রশ্নটা বড় হয়ে সামনে উঠে আসে বছরের শুরুর দিকে, যখন ঘরের মাটিতে ভারতের বিপক্ষে সিরিজে ইনজুরিতে পড়েন অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক। অনেকে ভেবেছিলেন অভিজ্ঞ ব্র্যাড হ্যাডিনকে বেছে নেবে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ)। কিন্তু ভবিষ্যতের কথা ভেবে টগবগে তরুণ স্টিভেন স্মিথকে অন্তর্বর্তী নেতৃত্বে দায়িত্ব দেয় সিএ। সেই ভবিষ্যতটা যে এত দ্রুত সামনে চলে আসবে স্মিথ নিজেও হয়ত ভাবেননি। এক ম্যাচ বাকি থাকতে এ্যাশেজ খোয়ানোর পর ট্রেন্ট ব্রিজে আচমকা অবসরের সিদ্ধান্ত নেন ক্লার্ক। কিংস্টন ওভালের শেষ টেস্টই হবে তার ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ। এরপরই স্থায়ীভাবে দায়িত্ব উঠবে স্মিথের হাতে। অক্টোবরে বাংলাদেশ সফর দিয়ে নতুন অধিনায়ক পাবে অস্ট্রেলিয়া। প্রশংসার মধ্য দিয়ে বিষয়টাকে পরিষ্কার করে দিয়েছেন কোচ ড্যারেন লেহম্যান এবং সিএ-র নির্বাহী প্রধান জেমস সাদারল্যান্ড। ‘এ্যাশেজে আমাদের সময়টা একদমই ভাল যাচ্ছে না। এক ম্যাচ বাকি থাকতে সিরিজ খোয়াতে হয়েছে। ক্রিকেট থেকে নিজেকে সরিয়ে নিচ্ছে ক্লার্ক। এই অবস্থায় নেতৃত্ব নিয়ে নতুন ঝামেলা তৈরির মানে নেই। স্মিথকে আমরা আগে থেকেই তৈরি করছিলাম। বছরের শুরুতে ভারত সিরিজে অধিনায়ক হিসেবে দারুণ করেছে ও। বয়স ২৬। ভবিষ্যতের জন্য স্মিথকে বেছে নিতে সমস্যা হবে না। এই মুহূর্তে আমরা কেবল ওভালের শেষ টেস্ট নিয়ে ভাবছি। কিভাবে সিরিজের ব্যবধান কমিয়ে আনা যায়। এ্যাশেজ শেষে পুরো বিষয়ে আলোচনা হবে। তবে স্মিথকে দায়িত্ব দিলে নিশ্চই কেউ বিরোধিতা করবে না।’ সিএ বস। ২-১এ পিছিয়ে পড়ার পর সিরিজ বাঁচিয়ে রাখতে চতুর্থ টেস্টে জিততেই হতো অস্ট্রেলিয়াকে। কিন্তু ট্রেন্ট ব্রিজে ইনিংস ও ৭৮ রানের বিশাল ব্যবধানে হারে ওয়ানডের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। লজ্জাজনক পরাজয়ে এক ম্যাচ আগেই ঐতিহ্যের এ্যাশেজ হাতছাড়া করে অসিরা। ব্যর্থতার দায় মাথায় নিয়ে হুট করে অবসরের ঘোষণা দেন অধিনায়ক ক্লার্ক। সেই তিনিও বলেছেন, চাইলে ভবিষ্যতে স্মিথের ওপর ভরসা করতে পারে অস্ট্রেলিয়। ‘আমার তো মনে হয় স্মিথ (স্টিভেন স্মিথ) তৈরি। কিন্তু আমি এ নিয়ে বলার কেউ নই। শুধু বলব, এই গ্রীষ্মে ও যে সুযোগ পেয়েছিল, সেখানে নিজেকে ভালমতোই প্রমাণ করেছে। স্মিথের প্রতি আমার বিশ্বাস আছে।’ বছরের শুরুতে ঘরের মাটিতে ভারতের বিপক্ষে নেতৃত্বের অভিষেকে দারুণ করেন স্মিথ। এ্যাডিলেডের প্রথম টেস্টে ফের ইনজুরিতে পড়েন ক্লার্ক। ব্রিসবেনের দ্বিতীয় ম্যাচে দায়িত্ব পান স্মিথ। ৪ উইকেটের দারুণ জয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন তরুণ স্মিথ। ১৩৩ ও ২৮ রানের ইনিংস উপহার দিয়ে হন ম্যাচসেরা। বিদেশের মাটিতে দল মিশ্র পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গেলেও ব্যাট হাতে নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার খেলায় মাতেন স্মিথ। এখন তিনে থাকা স্মিথ কিছুদিন আগে প্রথমবারের মতো উঠেছিলেন আইসিসি র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে। এ্যাশেজে এ পর্যন্ত লর্ডসের একমাত্র যে টেস্টটি জিতেছে অস্ট্রেলিয়া সেখানে ২১৫ ও ৫৮ রানের দুরন্ত দুই ইনিংস খেলে ‘নায়ক’ স্মিথই। ২০১০ থেকে ৩২ টেস্টে ছোট্ট ক্যারিয়ারে ৫৫ গড়ে করেছেন ২৯৫২ রান। সেঞ্চুরি ১০। এমন একজনকে অধিনায়ক হিসেবে বেছে নিতে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার মোটেই কষ্ট হওয়ার কথা নয়।
×