ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আউশে পোকা ॥ কৃষক দিশেহারা

প্রকাশিত: ০৪:০০, ১২ আগস্ট ২০১৫

আউশে পোকা ॥ কৃষক দিশেহারা

নিজস্ব সংবাদদাতা, বরগুনা, ১১ আগস্ট ॥ বরগুনার বেতাগীতে আউশ ক্ষেতে পামরি পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। এতে অধিকাংশ ক্ষেতের ধানের চারা নষ্ট হয়ে গেছে। পোকার আক্রমণে কৃষকেরা লোকসানের মুখে পড়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে উপজেলায় স্থানীয় ও উচ্চ ফলনশীল (উফশী) নয় হাজার হেক্টর জমিতে আউশ আবাদ হয়। বেতাগীর গাবুয়া, ফুলতলাসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশ এলাকার আউশ ক্ষেত পামরি ও মাজরা পোকার আক্রমণে পুড়ে গেছে। এতে ধানগাছের পাতাগুলো বিবর্ণ হয়ে গেছে। ক্ষেতের পর ক্ষেত ধূসর হয়ে গেছে। ধারদেনা করে অনেক কৃষক আউশ আবাদ করেছেন। উৎপাদনে ধস নামার আশঙ্কায় কৃষকেরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। উপজেলার কাজিরাবাদ ইউনিয়নের গাবুয়া গ্রামের কৃষক হাসান শরিফ জানান, তিনি ধারদেনা করে দুই একর জমিতে এবার আউশের আবাদ করেছিলেন। কিন্তু ধানের থোড় বের হওয়ার সময় পামরি ও মাজরা পোকা সব শেষ করে দিয়েছে। এখন যে অবস্থা তাতে ধান পাওয়ার কোন আশা নেই। গাবুয়া গ্রামের পার্শ্ববর্তী ফুলতলা গ্রামের কৃষক কামাল সিকদার, ফারুক খান ও হারুন খান একই কথা বলেন। ফারুক খান বলেন, আড়াই একরে তিনি আউশ ধান রোপণ করেছিলেন। সার, ওষুধ, সেচ, বীজ বাবদ প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু মাজরা ও পামরি পোকার আক্রমণে ক্ষেত বিবর্ণ হয়ে গেছে। হারুন খান বলেন, কৃষি কার্যালয়ের কোন পরামর্শ আমরা পাই না। পাইলে হয়তো আমাগো এত দুর্দশা অইতো না। কাউনিয়া এলাকার কৃষক সেলিম দফাদার বলেন, গত বছর হেক্টরপ্রতি আড়াই থেকে তিন টন পর্যন্ত আউশ উৎপাদন হয়েছিল। কিন্তু এবার বেশির ভাগ এলাকায় উৎপাদন কমে যাবে। কুমড়াখালী, কাউনিয়া, মোকামিয়া, ঝোপখালী, দক্ষিণ বেতাগী, বিবিচিনি, কাজীরহাট, মায়ারহাট, সরিষামুড়ি, কালিকাবাড়ি, চান্দখালীর এসব এলাকা ঘুরে আউশ ক্ষেতের এমন দুরবস্থা দেখা যায়। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাকির হোসেন তালুকদার বলেন, বেশ কিছু এলাকায় আউশ ক্ষেতের এমন অবস্থার খবর পেয়েছি। আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি কৃষকদের বালাইনাশক ও অন্যান্য প্রক্রিয়ায় এই পোকা দমনের পরামর্শ দিতে। অনেক কৃষক আমাদের পরামর্শ নেয়নি। এ জন্য সেসব এলাকায় ক্ষতির পরিমাণ বেশি। মাঠপর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তারা যায় না, কৃষকদের এমন অভিযোগের বিষয়ে জাকির হোসেন তালুকদার বলেন, উপজেলায় ২২টি ব্লক আছে। ২২ উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার মধ্যে আছে মাত্র সাতজন। জনবলসংকটের কারণে অনেক সমস্যা হচ্ছে।
×