স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা ॥ শিল্পীর নিপুণ হাতে তৈরি ভাস্কর্যগুলো, একেকটি যেন জীবন্ত প্রতিকৃতি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, শেখ রাসেল, শেখ জামালসহ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শহীদ ১৭ জনের প্রতিকৃতি জানান দিচ্ছে, তারা অমর হয়ে আছেন লক্ষ কোটি মানুষের হৃদয়ে। অপূর্ব এই ভাস্কর্যগুলো তৈরি করেছেন সাতক্ষীরার কৃতিশিল্পী সুরেশ পা-ে। আবক্ষ এই ভাস্কর্যগুলো বঙ্গবন্ধু জাদুঘরের জন্য প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দিতে চান তিনি। মঙ্গলবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
সুরেশ পা-ে ১৯৯০ সাল থেকে এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত। তাঁর বাড়ি সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার পিরোজপুর গ্রামে। সাতক্ষীরার বিসিক শিল্পনগরীতে তার একটি ফাইবার ইন্ডাস্ট্রি রয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান হিসেবে তাঁর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল জাতির পিতার পরিবারের সদস্যদের ভাস্কর্য তৈরি করা। গত দু’বছরেরও বেশি সময় ধরে তিনি তৈরি করেছেন ’৭৫-এর ১৫ আগস্ট সপরিবারে শহীদ বঙ্গবন্ধুসহ ১৭ শহীদের আবক্ষ ভাস্কর্য। সম্পূর্ণ ফাইবার গ্লাসে তৈরি হয়েছে এসব ভাস্কর্য। ফাইবার গ্লাসে তৈরি হওয়ায় এর স্থায়িত্ব হবে দীর্ঘদিন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, এগুলো তৈরির জন্য ব্যয় হয়েছে প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা। বঙ্গবন্ধু জাদুঘরের জন্য এই আবক্ষ ভাস্কর্যগুলো তিনি বিনামূল্যে দিতে চান। তবে পরবর্তীতে সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা ও সহায়তা পেলে তিনি আট বিভাগীয় শহরের জাদুঘরের জন্য ১৫ আগস্ট শহীদদের এক সেট করে ভাস্কর্য তৈরি করে দেয়ার ইচ্ছা রাখেন। এর আগে ’৯৬ সালে তিনি তৈরি করেছিলেন কাঠের তৈরি বঙ্গবন্ধুর একটি আবক্ষ প্রতিকৃতি। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সেই আবক্ষ প্রতিকৃতিটি হস্তান্তর করেছিলেন।
ভাস্কর্যগুলোর মধ্যে রয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, শেখ রাসেল, শেখ জামাল, শেখ আবু নাসের, শেখ ফজলুল হক মনি, আরিফ সেরনিয়াবাত, শেখ কামাল, সুলতানা কামাল খুকু, বেগম আরজু মনি, সুকান্ত আব্দুল্লাহ বাবু, পারভীন জামাল রোজী, কর্নেল জামিল উদ্দিন আহমেদ, শহীদ সেরনিয়াবাত, আব্দুর রব সেরনিয়াবাত, বেবি সেরনিযাবাত ও আব্দুল নঈম খান রিন্টু।
সংবাদ সম্মেলনে সুরেশ পা-ে জানান, প্রতিটি প্রতিকৃতির জন্য পৃথক পৃথক ছাঁচ তৈরি করতে হয়েছে। ছবির সঙ্গে মিলিয়ে আবক্ষ ভাস্কর্য সাজাতে হয়েছে। কষ্ট, সময় আর অর্থ ব্যয় হলেও বঙ্গবন্ধুসহ ১৭ শহীদের ভাস্কর্য তৈরি করতে পেরে তিনি আনন্দিত। তিনি এসব ভাস্কর্য নিজ হাতে প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেয়ার জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন।