ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

গলে শ্রীলঙ্কা-ভারত প্রথম টেস্ট শুরু আজ

কোহলিদের সামনে ইতিহাস বদলানোর সুযোগ

প্রকাশিত: ০৪:২৭, ১২ আগস্ট ২০১৫

কোহলিদের সামনে ইতিহাস বদলানোর সুযোগ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ১৯৮২ থেকে এ পর্যন্ত শ্রীলঙ্কা-ভারত মোট ১৩ টেস্ট সিরিজে অংশ নেয়। ১৯৮৫ থেকে সফর শুরুর পর শ্রীলঙ্কার মাটিতে একবারই সিরিজ জিতেছিল বিশ্ব ক্রিকেটের বর্তমান মোড়ল ভারত। সেটি ১৯৯৩ সালে। মোহাম্মদ আজহার উদ্দীনের নেতৃত্বে ৩ টেস্টের সিরিজ ১-০তে জিতেছিল তারা। মাঝে পেরিয়ে গেছে ২২ বছর, আরও চার সফরে সাফল্যের সিকে ছেড়েনি ভারতীয়দের। বিরাট কোহলিদের সামনে এবার দুই দশকের দীর্ঘ সেই ব্যর্থতা ঘোচানোর হাতছানি। তিন ভার্সনেই পাকিস্তানের কাছে নাস্তানাবুদ হওয়া লঙ্কানদের টুটি চেপে ধরার সুযোগ অতিথিদের সামনে। গলে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্ট শুরু হচ্ছে আজ। গল, এরপর কলম্বোর দ্বিতীয় টেস্ট খেলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানাবেন কুমার সাঙ্গাকারা। সাফল্যের মধ্য দিয়ে লিজেন্ড ব্যাটসম্যানকে বিদায় জানাতে চাইছেন স্বাগতিক অধিনায়ক এ্যাঞ্জেলো ম্যথুস। একই সঙ্গে পাকিস্তান সিরিজের ব্যর্থতা পেছনে ফেলে ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া লঙ্কানরা। মরিয়া বিরাট কোহলির নেতৃত্বাধীন নতুন ভারতও। নতুন ভারত, কারণ অস্ট্রেলিয়া সফরে হুট করে অধিনায়কের দায়িত্ব ছাড়ার পাশাপাশি টেস্ট থেকে অবসর নেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। বাংলাদেশ সফর ছিল অধিনায়ক কোহলির প্রথম মিশন। কিন্তু বৃষ্টিতে ভেস্তে যায় ফতুল্লার একমাত্র টেস্ট। পূর্ণাঙ্গ এই সিরিজ দিয়ে তাই শুরু হচ্ছে নেতা কোহলির নতুন মিশন। সাতে থাকা লঙ্কানদের বিপক্ষে সিরিজটা জিতলে আইসিসি র‌্যাঙ্কিংয়ে পাঁচ থেকে তিনে উঠে আসবে তার দল। হরভজন সিংয়ের মতো দু-তিনজন বাদ দিলে দলের বেশিরভাগই নবীন। ভিভিএস লক্ষণ, রাহুল দ্রাবিড় ও শচীন টেন্ডুলকরের মতো গ্রেট অবসরে যাওয়ার পর ভারত সেই অর্থে ওই মানের ব্যাটসম্যান পায়নি। ব্যাটিংয়ে কোহলি নিজেই বড় ভরসা। যদিও ব্যাট হাতে ঠিক চেনা ছন্দে নেই তিনি। তবে এ নিয়ে চিন্তিত নন ভারত অধিনায়ক। স্বভাবসুলভ আক্রমণাত্মক ক্রিকেটের হুঙ্কার ছুড়েছেন ক্রেজি কোহলি। ‘টেস্ট ম্যাচ জেতার জন্য আমরা শক্তিশালী বোলিং আক্রমণ নিয়ে মাঠে নামব। প্রয়োজন মনে করলে তিন স্পিনারকেও খেলানো হতে পারে। আইডিয়াটা হলো টেস্ট জেতার জন্য প্রতিপক্ষের ২০ উইকেট তুলে নেয়া।’ রানে ফেরার জন্য নিজের ব্যাটিংয়ের ধরনে পরিবর্তন আনবেন না বলেও জানিয়ে দিয়েছেন কোহলি। ‘ব্যাটসম্যান হিসেবে আমি সব সময় দায়িত্ব নিয়েই খেলি। তাই আমার খেলার ধরন পরিবর্তনের কোন কারণ দেখছি না।’ শ্রীলঙ্কর মাটিতে দীর্ঘ ২২ বছর সাফল্য নেই, সংবাদ মাধ্যমের এমন প্রশ্নে ভারত অধিনায়কের জবাব, ‘অতীত পরিসংখ্যান দিয়ে ক্রিকেট হয় না। আমরা এখানে এসেছে ভাল ক্রিকেট খেলতে মাঠে সেটিই দেখাতে চাই। দলে অনেক তরুণ খেলোয়াড়, যারা নিজেদের স্টাইলটা দেখাতে মুখিয়ে আছে। ব্যাটিংয়ে আমি নিজে, চেতেশ্বর পুজারা, শিখর ধাওয়ান, রোহিত শর্মা, ঋদ্ধিমান সাহা আছে। বোলিংয়ের পর হরভজন আর রবিচন্দ্রন অশ্বিনও ব্যাট হাতে বড় স্কোর গড়ার সামর্থ্য রাখে।’ অবশ্য মুরলি বিজয়ের মতো ব্যাটসম্যানকে পাচ্ছে না সফরকারীরা। গত জিম্বাবুইয়ে সফরে ডান পায়ের হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পান, এখনও পুরোপুরি ফিট হয়ে উঠেননি তিনি। ২০১৪ সালে প্রত্যবর্তনের পর ১০ টেস্টে ৫৪ গড়ে ১০০০ রান করেন ৩১ বছর বয়সী বিজয়। অন্যদিকে সাঙ্গাকারার জন্যই জ্বলে উঠতে চায় স্বাগতিকরা। ‘সিরিজ জয়ই হতে পারে ওর মতো গ্রেটের বিদায়ের সেরা উপহার। পাকিস্তান সিরিজটা মোটেই ভাল যায়নি, কিন্তু আমরা ঘুরে দাঁড়াব। দেশের মাটিতে ভারতের সঙ্গে ইতিহাস আমাদের পক্ষে।’ বলেন শ্রীলঙ্কা অধিনায়ক ম্যাথুস। উল্লেখ্য, নিজ আঙ্গিনায় পাকিস্তানের কাছে ২-১এ টেস্ট, ৩-২এ ওয়ানডে এবং ২-০তে টি২০ সিরিজ হারে লঙ্কানরা। কোণঠাসা স্বাগতিকদের জন্য ঘুরে দাঁড়ানোটা এখন সময়ের দাবি। পরিসংখ্যানে অবশ্য ভারত এগিয়ে। এ পর্যন্ত ৩৫ টেস্টে মুখোমুখি হয়ে ভারতের জয় ১৪ ও শ্রীলঙ্কার ৬টিতে। ১৫ ম্যাচ অমীমাংসিতভাবে শেষ হয়। ভারত সর্বশেষ শ্রীলঙ্কা সফর করে ২০১০ সালে, তিন ম্যাচের ওই সিরিজ ১-১এ ড্র হয়। কলম্বোতে মুখোমুখি শেষ ম্যাচে সাঙ্গাকারার শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৫ উইকেটের জয় পেয়েছিল ধোনির ভারত।
×