ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সড়কের মাঝখানে বিশাল বিশাল গর্ত, সামান্য বৃষ্টিতে উঠে যাচ্ছে জোড়াতালির সংস্কার;###;নগরবাসীর দুর্ভোগের শেষ;###;নেই, গর্তে পড়ে অহরহ ঘটছে দুর্ঘটনা ;###;সেপ্টেম্বর কিংবা অক্টোবরের মধ্যে রাস্তার টেন্ডার আহ্বান

রাজধানীর অর্ধেক রাস্তাই ব্যবহারের অনুপযোগী ॥ শীঘ্রই মুক্তি নেই

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ১২ আগস্ট ২০১৫

রাজধানীর অর্ধেক রাস্তাই  ব্যবহারের অনুপযোগী ॥ শীঘ্রই মুক্তি নেই

রাজন ভট্টাচার্য ॥ রাজারবাগ পুলিশ লাইন-শান্তিনগর-মালিবাগ-মালিবাগ রেল গেট থেকে রামপুরা পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কের প্রায় পুরো অংশই ব্যবহারের অনুপযোগী। সড়কের মাঝখানে বিশাল বিশাল গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এই অংশে রাস্তার পাকা অংশ পাওয়াই কঠিন। সামান্য বৃষ্টিতে উঠে যাচ্ছে জোড়া তালির সংস্কার। গর্তে পড়ে ঘটছে অহরহ দুর্ঘটনা। এত গেল একটি রাস্তার বর্ণনা। রাজধানী শহরের বেশিরভাগ গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার চিত্র ঠিক এরকম, যা এই সময়ে কল্পনাও করা যায় না। তবুও বাস্তবতা হলো, বেহাল সড়কে নাকাল মানুষ। এ সবকিছু মানিয়ে নিয়ে নগরীতে চলতে হচ্ছে সবাইকে। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন মিলিয়ে মোট রাস্তার পরিমাণ দুই হাজার এক শ’ কিলোমিটারের বেশি। এর প্রায় অর্ধেক রাস্তাই এখন ব্যবহারের অনুপযোগী। বিশেষ করে নগরীর অলিগলির অবস্থা খুবই নাজুক। এই প্রেক্ষাপটে দুই সিটিতে রাস্তা রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়নের জন্য এবারের বাজেটে বরাদ্দ হয়েছে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা। এছাড়া দক্ষিণের রাস্তা রক্ষণাবেক্ষণে একনেক সভায় ৫২ কোটি টাকার একটি প্রকল্পের অনুমোদন হয়েছে। ২০১৬ সালের মধ্যে এ প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। শীঘ্রই রাস্তার দুর্ভোগ থেকে মুক্তি মিলছে না নগরবাসীর। এজন্য অপেক্ষা করতে হবে চলতি বছরের শেষ অবধি। এরপর কাজ শুরুর সম্ভাবনা রয়েছে। সিটি করপোরেশনের কর্তাব্যক্তিরা জানিয়েছেন, বাজেটে রাস্তা উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বরাদ্দ পর্যাপ্ত নয়। নগরীর সব রাস্তা সচল রাখতে বিপুল পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন। তাছাড়া বর্ষার কারণেই রাস্তা মেরামত করা সম্ভব হচ্ছে না। এদিকে দুই সিটিতে ১০টি অঞ্চল রয়েছে। কোন অঞ্চলে কতটুকু রাস্তা খারাপ এ তথ্য সংগ্রহে আঞ্চলিক কর্মকর্তাদের ইতোমধ্যে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। বর্ষা মৌসুম শেষ হওয়ার পর এ তালিকা চূড়ান্ত হবে। সেপ্টেম্বর অথবা অক্টোবর মাসের দিকে টে-ার আহ্বান করার কথা জানিয়েছেন তারা। রাজধানীর মোট সড়ক ॥ জানা গেছে, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে রাস্তা রয়েছে প্রায় ২ হাজার ১১৯ দশমিক ৭৪৯ কিলোমিটার। এর মধ্যে ঢাকা উত্তরে পড়েছে ১ হাজার ৩৩৭ দশমিক ৯১৩ কিলোমিটার। ঢাকা দক্ষিণে ৭৮১ দশমিক ৮৩৬ কিলোমিটার। ঢাকায় বড় বড় যানবাহন চলাচল করতে পারে এমন প্রধান সড়ক (প্রাইমারি, সেকেন্ডারি ও সংযোগ) রয়েছে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার। এর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণে বড় সড়ক ১৫৮ কিলোমিটার। বাকি প্রায় এক হাজার কিলোমিটার রাস্তা সরু-সঙ্কীর্ণ ও গলি। সিটি করপোরেশনের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানান, ঢাকার ২ হাজার ১১৯ কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে বর্তমানে হাজার কিলোমিটারের ওপর রাস্তা খারাপ। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন রাস্তা মেরামতে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় একটি প্রকল্পের অনুমোদন হয়েছে। অনুমোদিত এ প্রকল্পটির নাম ‘ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান সড়কসমূহের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কোল্ড রি-সাইক্লিং প্যান্ট ও ইকুইপমেন্ট সংগ্রহ।’ প্রায় ৫২ কোটি টাকা ব্যয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ২০১৬ সালের মধ্যে প্রকল্পটি সম্পন্ন করবে বলে একনেক সভায় জানানো হয়। বাংলাদেশে সড়ক মেরামতের ক্ষেত্রে একেবারে নতুন এ প্রযুক্তি নিয়ে একনেক-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানান, অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারণে ঢাকার রাস্তাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে প্রতিবছর রাস্তা মেরামত করতে হচ্ছে। এতে রাস্তার উচ্চতা বেড়ে যাচ্ছে এবং পানি নিষ্কাশন ঠিক মতো না হতে পেরে জলাবদ্ধতা বাড়িয়ে দিচ্ছে। এ জন্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ঢাকার দক্ষিণে রাস্তা মেরামতে পুরনো ব্যবহৃত উপাদানগুলোর ৪০ থেকে ৬০ শতাংশ পুনরায় ব্যবহার করার। ফলে রাস্তার উচ্চতা বৃদ্ধি পাবে না। এ কাজটি করতে যে প্রযুক্তি এখানে ব্যবহৃত হবে তার নাম ‘ কোল্ড রি-সাইক্লিং প্ল্যান্ট’। এতে রাস্তাগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ যেমন সহজ হবে, তেমনি অর্থেরও সাশ্রয় হবে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ কুদরত উল্লাহ বলেন, ডিএনসিসির ৫টি অঞ্চলের ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তার তালিকা তৈরি করা হয়েছে। আপাতত ভাঙ্গাচোরা রাস্তাগুলোকে ব্যবহার উপযোগী রাখার জন্য ইটের খোয়া দিয়ে ম্যাকাডাম করে দেয়া হচ্ছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আনছার আলী খান বলেন, প্রতিবছর বর্ষায় রাস্তা ভেঙ্গেচুরে যায়। এটি স্বাভাবিক ঘটনা। এ জন্য সিটি করপোরেশন বাজেট নির্ধারণ করে থাকে। বর্ষার পর ভাঙ্গাচোরা রাস্তা মেরামত করা হবে। উত্তরের রাস্তা উন্নয়নে বরাদ্দ সাড়ে ৩০০ কোটি টাকা ॥ ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে রাস্তা উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রায় সাড়ে ৩০০ কোটি টাকা এবারের বাজেটে বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এরমধ্যে ১৪০ কোটি টাকা লোকাল রিসোর্স থেকে যোগান দেয়া হবে। বাকি অর্থ জিওবি থেকে। জানা গেছে, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ভাঙ্গা রাস্তাঘাট মেরামতের জন্য গত অর্থবছরের (২০১৩-১৪) বাজেটে উত্তরের জন্য প্রায় ১৫০ কোটি আর দক্ষিণের জন্য প্রায় ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বি এম এনামুল হক এ প্রসঙ্গে বলেন, উত্তরার সকল সেক্টরের রাস্তা মেরামতে চলতি বছরের অক্টোবরে একনেকে ১২০ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘উত্তরা মডেল টাউনের ১, ৩-১৪ সেক্টরের সকল রাস্তা-ড্রেন নির্মাণ ও ফুটপাথ উন্নয়ন প্রকল্প’ অনুমোদিত হয়েছে। এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে সকল সমস্যার সমাধান হবে। জানা যায়, ঢাকা ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্ট (ডিআইটি) ১৯৬৫ সালে নিরিবিলি পরিবেশে নাগরিক সুন্দর ও সুস্থ জীবনযাপনের জন্য উত্তরা মডেল টাউন গড়ে তোলার পরিকল্পনা করে। প্রতিশ্রুতি ছিল ১ নম্বর থেকে ১৪ নম্বর সেক্টরে কমপক্ষে ১০ লাখ মানুষ সব রকম নাগরিক সুবিধা ভোগ করতে পারবে। তবে ৪৭ বছর পেরিয়ে গেলেও সেই পরিকল্পনার ২০ শতাংশও পূরণ হয়নি। এখানে নেই কোন সরকারী হাসপাতাল, বিদ্যাপীঠ, পাঠাগার, কাঁচাবাজার, বিপণিবিতান, কমিউনিটি সেন্টার এবং নারী-শিশু স্বাস্থ্যকেন্দ্র। উত্তরাতে রয়েছে মোট ১৪টি সেক্টর। এখন প্রায় সব রাস্তাই ভাঙ্গাচোরা। দক্ষিণে রাস্তা উন্নয়নে বরাদ্দ ১৮১ কোটি টাকা ॥ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে রাস্তা উন্নয়নে এবারের বাজেটে ১৮১ কোটি ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। যদিও দক্ষিণের বেশিরভাগ রাস্তার অবস্থা এখন বেহাল। বাজেট বক্তৃতা শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে ডিএসসিসি মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, পরিকল্পনামন্ত্রী ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে বলেছেন, তোমাদের যেসব রাস্তা-ঘাটসহ অন্যান্য যে সমস্যা রয়েছে সেগুলো প্রকল্প আকারে পাঠাও। আমরা তা যাচাই-বাছাই করে যৌক্তিকভাবে অনুমোদন করব। সেই কারণেই এ বাজেট প্রকল্প নির্ভর। রাজধানীর রাস্তার চিত্র ॥ রাজধানীর পোস্তগোলা থেকে ফরিদাবাদ পর্যন্ত সড়কটির এখন বেহাল দশা। ইট খোয়া বলতে কিছু নেই। উঠে গেছে কংক্রিট। অনেক স্থানে পাকা সড়কের কোন স্মৃতি চিহ্নও নেই। পুরো রাস্তায় সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। অতিবৃষ্টির পর দেখলে মনে হবে একটি ছোট খাল। আর একারণে প্রতিদিনই ঘটছে কমবেশি সড়ক দুর্ঘটনা। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, প্রায় ছয় মাস ধরে রাস্তাটির এ অবস্থা বিরাজ করছে। দক্ষিণগাঁও ইউনিয়নের মাত্র দুই কিলোমিটার সড়কের জন্য দিনের পর দিন লাখো মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। রাজারবাগ কালীবাড়ির পর থেকেই সিটি করপোরেশনের সীমানা শেষ। ঠিক সীমানার শেষ প্রান্ত থেকেই দুর্ভোগের যাত্রা শুরু। দুই কিলোমিটার জুড়ে পুরো রাস্তাটি ভেঙ্গেচুরে খালে পরিণত হয়েছে। ভারি যানবাহন চলায় সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্তের। ইট-সুরকি কিংবা কংক্রিটের স্মৃতি চিহ্নমুছে গেছে। দেখলে বোঝার উপায় নেই, এই সড়কটি এক সময়ে পাকা ছিল। সড়ক দিয়ে এখন আর রিক্সা চলে না। বাসাবো বৌদ্ধ মন্দির থেকে দক্ষিণগাঁও পর্যন্ত চলা অটোরিক্সা চালকরা জানিয়েছেন, অতিবৃষ্টির কারণে রাস্তাটির বেহাল দশা। যদিও অনেক আগে থেকেই সড়কটি নষ্ট ছিল। স্থানীয় মানুষ একাধিকবার সড়কটি সংস্কারের জন্য সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরীর কাছে গেলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। জানা গেছে, স্থানীয় সাংসদের পক্ষ থেকে রাস্তাটি সংস্কারের জন্য এলজিইডিকে লিখিত চিঠি পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও আইডিবি ভবন থেকে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল পর্যন্ত সড়কটি জলাবদ্ধতার কারণে ব্যবহার হচ্ছে না। সড়কের বুকজুড়ে এখন বিশাল জলাশয় আর ছোটখাটো গর্ত। খানাখন্দ এড়িয়ে স্বাভাবিকভাবে যান চলাচলের কোন উপায় নেই। সড়কটির কোন অংশই আর চলাচলের উপযোগী নয়। মৌচাক-মালিবাগ প্রকল্পের সোয়া আট কিলোমিটার সড়কসহ ফুটপাথ এখন ব্যবহারের অনুপযোগী। সায়েদাবাদে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারে ওঠার আগের প্রায় ৫০ মিটার সড়কটির অবস্থা এতই খারাপ যে, ওই পথ দিয়ে গাড়িগুলোর ফ্লাইওভারে ওঠাই কঠিন। কাজী নজরুল ইসলাম এ্যাভিনিউর বনানী চেয়ারম্যানবাড়ী এলাকার রাস্তার পুরো কার্পেটিং উঠে গেছে। বনানীর ১৩ নম্বর সড়কের সংযোগস্থলে ল-ভ- হয়ে গেছে রাস্তা। নৌবাহিনীর সদর দফতরের সামনে তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্ত। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত বাইপাস সড়কের কয়েক মিটার পরপর কেবলই ছোট-বড় গর্ত চোখে পড়ে। বনানীর কামাল আতাতুর্ক এ্যাভিনিউর সড়কটির চিত্র একই। বাংলামটর ও সোনারগাঁও হোটেলের মধ্যবর্তী সড়কেও ছয়-সাত ইঞ্চি গভীর গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিটি সড়কের ম্যানহোলের আশপাশের পলেস্তারা উঠে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। কয়েক মাস আগে পাইপ বসানোর জন্য যেসব রাস্তা কাটা হয়েছিল, মেরামত করা ওই লাইন ধরে রাস্তা ভেঙ্গেচুরে একাকার। গুলশান-তেজগাঁও সংযোগ সড়কটি গত বছর নতুন করে কার্পেটিং করা হলেও সে রাস্তাটির এখন অবস্থা খারাপ। মাত্র একমাস আগে মেরামত করা বাসাবো টেম্পোস্ট্যান্ড সড়টি কয়েকদিনের টানা বর্ষণে বেহাল দশা বিরাজ করছে। দেখলে মনে হবে না এই রাস্তাটি অল্প কদিন আগেই ভাল ছিল। কাঁঠালবাগান, হাতিরপুল, ভূতেরগলি থেকে শুরু করে আশপাশের সব গলিপথ এখন অনেকটাই চলাচলের অনুপযোগী। এছাড়া বিজয় সরণি-তেজগাঁও ফ্লাইওভারের তেজগাঁও পয়েন্টে ভেঙ্গে একাকার। নীলক্ষেত এলাকায় সড়কের ভাঙ্গাচোরা বালু-পাথর রাস্তার ওপর গড়াগড়ি খাচ্ছে। বসুন্ধরা গেট থেকে শাহজাদপুর পর্যন্ত সড়কে ভাঙ্গাচোরা ইট-পাথর টিলার মতো। আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার সিদ্ধান্ত অনুসারে, গত ১০ জুলাইয়ের মধ্যে রাজধানীর সব রাস্তাঘাট নির্বিঘœ রাখার কথা ছিল। এ জন্য গত ২৯ জুন স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোঃ সিরাজুল ইসলামকে আহ্বায়ক করে ১১ সদস্যের একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে কাজের তেমন কোন অগ্রগতি চোখে পড়েনি। বছর শেষে শুরু হবে রাস্তা উন্নয়ন ও মেরামতের কাজ ॥ শীঘ্রই ভাঙ্গাচোরা রাস্তা সংস্কার হবে এমন আশার আলো নেই। তবে বৃষ্টি না থাকলে একেবারেই অচল হয়ে গেছে এমন অবস্থা সৃষ্টি হলে সচলের উপযোগী করা হবে। সিটি করপোরেশনের কর্তাব্যক্তিরা বলছেন, বর্ষার কারণে দ্রুত সময়ের মধ্যে রাস্তা মেরামতের কাজে হাত দেয়া যাচ্ছে না। সর্বোপরি দুই সিটিতে কতটুকু রাস্তা খারাপ তা জরিপ করতে আঞ্চলিক কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এখনও সে রিপোর্ট হাতে আসেনি। জানতে চাইলে উত্তর সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ বি এম এনামুল হক জনকণ্ঠকে বলেন, বর্ষা মৌসুমের কারণে রাস্তা মেরামতের কাজে হাত দেয়া যাচ্ছে না। উত্তরের পাঁচটি অঞ্চলে কতটুকু রাস্তা খারাপ এর তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। বর্ষা মৌসুম না গেলে তালিকা তৈরির কাজ শেষ হবে না। কারণ বর্ষার সময় আরও আছে। এখন তালিকার কাজ শেষ হলে সামনের দিনে রাস্তা আরও ভাঙবে। তাই একসঙ্গে সব করা হবে। তিনি বলেন, কিছু কিছু রাস্তা সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে সংস্কার করে দেয়া হচ্ছে। যেন চলাচলে কোন সমস্যা না হয়। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর কিংবা অক্টোবরে মধ্যে রাস্তার টেন্ডার আহ্বান করা হবে। নবেম্বর কিংবা বছরের শেষ দিকে মাঠ পর্যায়ে রাস্তার কাজ শুরুর কথা জানান তিনি।
×