ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

আন্তঃব্যাংক লেনদেন পয়েন্ট অব সেল (পস)‘র উদ্বোধন

এমন কেন্দ্রীয় ব্যাংক পৃথিবীতে দ্বিতীয়টা নাই ॥ গবর্নর

প্রকাশিত: ০৬:১১, ১৩ আগস্ট ২০১৫

এমন কেন্দ্রীয় ব্যাংক পৃথিবীতে  দ্বিতীয়টা নাই ॥ গবর্নর

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ ব্যাংকের গবর্নর ড. আতিউর রহমান বলেছেন, মুদ্রানীতিকে দক্ষ করার জন্য পেমেন্ট সিস্টেমের উন্নতি ঘটানো হচ্ছে। তবে আমাদের সেন্ট্রাল ব্যাংক শুধু শাসন করে না, সাহায্যও করে। এমন কেন্দ্রীয় ব্যাংক পৃথিবীতে দ্বিতীয়টা নাই। ব্যাংকিং সেক্টরের সব কিছু ডিজিটাইজেশন করা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, উচ্চমূল্যের ব্যাংকিং লেনদেনকে নিরাপদ ও দ্রুত করার জন্য আগামী অক্টোবরে আমরা আরটিজিএস চালু করব। বর্তমানে আন্তঃব্যাংক পয়েন্ট অব সেল লেনদেন নিষ্পত্তিকরণের মাধ্যমে ব্যাংকিংখাত আরও একধাপ এগিয়ে গেল দেশ। ন্যাশনাল পেমেন্ট সুইচের অধীনে আন্তঃব্যাংক পয়েন্ট অব সেলের (পস) লেনদেন কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এ কার্যক্রমের ফলে এখন থেকে এক ব্যাংকের পয়েন্ট অব সেলের (পস) মাধ্যমে অন্য ব্যাংকের অনুমোদিত কার্ড ব্যবহার করে কেনাকাটা বা অন্যান্য বিল পরিশোধ করা যাবে। বুধবার রাজধানীর মতিঝিলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। এ সময় তিনি বলেন, ক্যাশবিহীন এ লেনদেনের ফলে স্বচ্ছতা, জবাবদিহীতা বাড়বে। অনুষ্ঠানে ডেপুটি গবর্নর নাজনীন সুলতানা, এস কে সুর চৌধুরী, আবু হেনা রাজী হাসান, নির্বাহী পরিচালক শুভঙ্কর সাহা, ম. মাহফুজুর রহমান, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক ও ট্রাস্ট ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এটিএম’র আন্তঃব্যাংক লেনদেনসমূহ একই প্ল্যাটফর্মে আনার মাধ্যমে ২০১৩ সালে যাত্রা শুরু করা হয় ন্যাশনাল পেমেন্ট সুইচ বাংলাদেশ। বর্তমানে এর মাধ্যমে ৪৬টি ব্যাংক প্রতিদিন প্রায় ১২ কোটি টাকা লেনদেন সম্পন্ন করছে। আর্থিক খাতে ক্যাশবিহীন কেনাকাটা করতে ন্যাশনাল পেমেন্ট সুইচ বাংলাদেশ’র (এনপিএসবি) মাধ্যমে আন্তঃব্যাংক পয়েন্ট অব সেল (পস’র) লেনদেন করা যাবে। এ কার্যক্রমে প্রাথমিক ব্যাংকের এটিএম কার্ড (ডেবিট-ক্রেডিট) দিয়ে ডাচ্-বাংলা, পুবালী, দি সিটি ও ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেডের পস মেশিন থেকে দেশের বিভিন্ন বিপণিবিতান ও শপিংমল থেকে কেনাকাটা করা যাবে। বর্তমানে দেশের মোট কার্ড ব্যবহারকারীর ৬০ শতাংশই এ চার ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার করেন। দেশে কার্যরত অন্য ব্যাংকগুলোও এতে যুক্ত হতে পারবে বলে জানানো হয়। গবর্নর বলেন, উচ্চমূল্যের ব্যাংকিং লেনদেনকে নিরাপদ ও দ্রুত করার জন্য আগামী অক্টোবরে আমরা আরটিজিএস চালু করব। এতে টাইম ফর ডুয়িং বিজনেস ও কস্ট অব ডুয়িং অব বিজনেস কমে আসবে। ব্যাংকিং সেক্টরের সব কিছু ডিজিটাইজেশন করা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অনেক অনেক কথা বলেন, না জেনে। এখন সুপারভিশনকে ডিজিটাইজেশন করা হয়েছে। গবর্নর বলেন, ক্যাশবিহীন লেনদেনের ফলে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা বাড়বে। এখন আর কেন্দ্রীয় ব্যাংককে ফাঁকি দিয়ে কোন অনিয়ম করতে পারবে না। গবর্নর বলেন, মুদ্রানীতিকে দক্ষ করার জন্য পেমেন্ট সিস্টেমের উন্নতি ঘটানো হচ্ছে। তবে আমাদের সেন্ট্রাল ব্যাংক শুধু শাসন করে না, সাহায্যও করে। এমন কেন্দ্রীয় ব্যাংক পৃথিবীতে দ্বিতীয়টা নাই। গবর্নর বলেন, আমি সেই দিনের স্বপ্ন দেখছি। যেদিন মোবাইলই হবে মানুষের ডেবিট কার্ড। টাকা না নিয়ে বাজারে গিয়ে লেনদেনের পেমেন্ট করতে পারবে মোবাইল থেকে। আন্তঃব্যাংক পয়েন্ট অব সেল লেনদেন নিষ্পত্তিকরণের মাধ্যমে ব্যাংকিংখাত আরও একধাপ এগিয়ে গেল দেশ। তিনি বলেন, এখন পসের মাধ্যমে বছরে ৫০০ কোটি টাকা লেনদেন হয়। আমরা এটাকে দৈনিক ৫০০ কোটিতে নিয়ে আসতে চাই। তিনি বলেন, দেশের প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে এখনও এটিএম কার্ডের মাধ্যমে লেনদেন কার্ডক্রম চালু হয়নি। অবিলম্বে কার্ড লেনদেন চালু করা গেলে নাগরিক সুবিধাও বৃদ্ধি পাবে। তিনি ব্যাংকারদের উদ্দেশ্যে বলেন আপনারা ১০ টাকার এ্যাকাউন্টধারীদের ক্রেডিট কার্ড দিতে পারেন কি না দেখেন। বর্তমানে শিশুদের সাড়ে আট লাখ ব্যাংক হিসাব রয়েছে। আমি বিশ্বাস করি একদিন এই শিশুদের ডেবিট কার্ড দেয়া হবে, যা দিয়ে শিশুরা আইসক্রিম কিনতে পারবে।
×